বজ্রপাত থেকে কৃষকের জীবন রক্ষায় এসএসটিএএফের ৩ পরামর্শ

বজ্রপাত
ছবি: হুমায়েদ উল্লাহ

বজ্রপাত থেকে কৃষকের জীবন রক্ষায় তিনটি নির্দেশনা পালনের পরামর্শ দিয়েছে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএএফ)।

রোববার সংগঠনটির দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

নির্দেশনা তিনটি হলো—খোলা আকাশের নিচে থাকলে আকাশে কালো মেঘ দেখার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া, বৃষ্টি হলে গাছের নিচে অবস্থান না করা এবং খোলা আকাশের নিচে কাজ করার সময় পায়ে জুতা পরিধান করা ও মাঠে থাকা অবস্থায় হঠাৎ বজ্রপাত হলে নিচু হয়ে শুয়ে পড়া।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে বজ্রপাতে মারা যাওয়াদের মধ্যে বেশিরভাগই কৃষক। গত ৩ মে ১১ জন মারা গেছেন ও নয়জন আহত হয়েছেন। শনিবারও খাগড়াছড়িতে মা-ছেলেসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া বেশিরভাগই কৃষক। গত ২৭ এপ্রিল ও ৪ মে দুইদিনে দুই শতাধিক কৃষকের মাঝে সংগঠনের এই তিন দফা নির্দেশনাসহ বজ্রপাত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এসএসটিএএফ।

দুইদিনে এসএসটিএএফের একাধিক প্রতিনিধিদল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান ও ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকদের গ্রুপ করে বজ্রপাত থেকে নিজেদের জীবন রক্ষার কৌশল জানানো হয়। সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা, গবেষণা সেলের প্রধান আব্দুল আলিম, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ ও স্বেচ্ছাসেবী মো. শরিফুল ইসলাম। এ সময় কৃষকদের মাঝে কোমল পানি, শরবত ও স্যালাইন বিতরণ করা হয়।

এসএসটিএএফের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দ্রুত মাঠে মাঠে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানান। পাশাপাশি বছরের মার্চ থেকে জুন এই চার মাস কৃষকদের মাঝে বজ্রপাত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করারও পরামর্শ দেন।

ফোরামের সভাপতি ড. কবিরুল বাশার বলেন, বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ দুইটি। বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গাছ বিশেষ করে মাঠের উঁচু গাছ কেটে ফেলা। হাওর অঞ্চলের মাঠে আগেও তেমন গাছ ছিল না। এখন অন্যান্য এলাকার গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে মাঠে বা খোলা জায়গায় যেসব মানুষ থাকেন, বজ্রপাতের এক কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিবাহী উঁচু জিনিস হিসেবে সেই মানুষকেই পায়। মানুষ না থাকলে মাঠের গবাদি পশু। ফলে মানুষ মারা যায়, গবাদি পশুও মারা যায়।

তিনি আরও বলেন, অনেকে মনে করেন ওই সময় গাছের তলায় আশ্রয় নেওয়া নিরাপদ, আসলে এটা ঠিক নয়। আশ্রয় নিতে হবে বাড়িঘরে বা পাকা স্থাপনার নিচে।

তার মতে, সনাতন পদ্ধতিতে লাইটেনিং অ্যারেস্টার লাগালে বজ্রপাতে হতাহতের হাত থেকে বাঁচা যায়। এতে খরচ কম। একটি বাড়িতে ১০ হাজার টাকা খরচ করেই লাগানো যায়। আর সরকার হাওর ও খোলা জায়গায় এগুলো লাগানোর উদ্যোগ নিতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

13h ago