বৈশাখে ‘অধরা’ রুপালি ইলিশ

ইলিশ নিয়ে সারা বছর তেমন মাতামাতি না থাকলেও, বৈশাখ এলেই কদর বাড়ে রুপালি ইলিশের। পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদযাপনে খাবারের তালিকায় ইলিশকে প্রাধান্য দিতে বাঙালিরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। তাই বৈশাখ এলেই ইলিশের চাহিদা অন্যান্য মাসের তুলনায় বেড়ে যায়।
চট্টগ্রামে কাজীর দেউরি বাজারে ইলিশের আড়ৎ। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

ইলিশ নিয়ে সারা বছর তেমন মাতামাতি না থাকলেও, বৈশাখ এলেই কদর বাড়ে রুপালি ইলিশের। পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদযাপনে খাবারের তালিকায় ইলিশকে প্রাধান্য দিতে বাঙালিরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। তাই বৈশাখ এলেই ইলিশের চাহিদা অন্যান্য মাসের তুলনায় বেড়ে যায়।

কিন্তু এ বছর সাগরে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে কম। বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় দামও চড়া। সাধারণ ক্রেতারা ইলিশ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন।

তাই এবারের পহেলা বৈশাখে রুপালি ইলিশ অনেকটাই 'অধরা' বলে মনে করা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে চট্টগ্রামে আগ্রাবাদ সংযোগ সড়ক কাঁচা বাজারে গিয়ে ইলিশের দাম বাড়তি দেখা গেছে।

বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় এবার বৈশাখে দাম একটু বেশি। ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। ৭০০ থেকে ৮৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ১ হাজার টাকা।'

১ কেজি ওজনের ইলিশ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

চট্টগ্রাম ফিশারিঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক বাবুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন ইলিশের মৌসুম নয়। তাছাড়া আবহাওয়াও অনুকূলে নেই। বৃষ্টি শুরু হলে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়বে বেশি। এখন ইলিশ ধরা পড়ছে না।'

'সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া জেলেদের জালে ইলিশের চেয়ে অন্যান্য জাতের মাছ ধরা পড়ছে বেশি। তাই বাজারে ইলিশ সরবরাহ কম,' বলেন তিনি। 

প্রতি বছর বৈশাখে ইলিশের চাহিদা পূরণ করতে বেশ কয়েকজন আমদানিকারক মিয়ানমার থেকে ইলিশ আমদানি করে থাকেন। তবে এ বছর আমদানিকারকরা কেউই ইলিশ আমদানি করছেন না বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে আমদানিকারক ও বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের (নন প্যাকার) সভাপতি বাবুল আকতার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২-৩ বছর বৈশাখী উৎসব না হওয়ায় এবার ব্যবসায়ীরা ইলিশ মজুদ করেননি। আমদানিকারকরা গত বছরের লোকসানের কথা মাথায় রেখে এবার কেউ মিয়ানমার থেকে ইলিশ আমদানি করেননি।'

এ ছাড়া এ বছর রমজান মাসে পহেলা বৈশাখ হওয়ায় ইলিশের চাহিদা কম থাকার সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করছেন তিনি।

তিনি জানান, দেশের হোটেল-রেস্টুরেন্টে যে ইলিশ বিক্রি হয় তার বেশির ভাগের ওজন দেড় থেকে ২ কিলোগ্রামের বেশি। এসব হোটেল-রেস্টুরেন্টের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ব্যবসায়ীরা বিদেশ থেকে বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে ইলিশ আমদানি করতেন।

কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ববাণিজ্যে রেফার কন্টেইনার সংকট, ইউক্রেন ইস্যুতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় জাহাজ ভাড়া বেড়ে গেছে। এ কারণে আমদানি করা ইলিশ দিয়ে বৈশাখের চাহিদা পূরণ সম্ভব হচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ইলিশ আমদানি প্রসঙ্গে প্যাসিফিক ফুডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুদুল কুমার দত্ত ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতি বছর বৈশাখে ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এবার অবস্থাটি একটু ব্যতিক্রম। এখন বাজারে ইলিশের চাহিদা কম। আমাদের অনেক ইলিশ অবিক্রিত রয়ে গেছে। আমাদের হিমাগারে পর্যাপ্ত ইলিশ মজুদ আছে কিন্তু বাজারে চাহিদা নেই।'

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago