লকডাউনেও চাঁদপুরের ইলিশের বাজারে ভিড়

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান লকডাউনের মধ্যেও ভিড় দেখা গেছে চাঁদপুরের ইলিশের বাজারে। আজ শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর—এই তিন মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। আর এই মৌসুমকে ঘিরে সব সময় চাঁদপুর শহরের প্রধান মৎস্য কেন্দ্র তথা বড়স্টেশন ইলিশের আড়ত থাকে সরগরম। প্রতিদিন অন্তত ২০০ আড়তদার ও মাছ ব্যবসায়ীর ঘরে অন্যান্য মাছ ছাড়াও পাঁচ শ থেকে এক হাজার মণ ইলিশ কেনাবেচা হয়ে থাকে। কিন্তু, করোনাভাইরাসের প্রভাবে জুলাইতে অন্যান্য বছরের তুলনায় ইলিশের আমদানি একেবারেই কমে গেছে।
তবে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের শুরুতে ইলিশের কিছুটা আমদানি হলেও গত তিন দিন ধরে আবারও তা কমে এসেছে বলে দাবি স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীদের।

আজ সরেজমিনে দেখা গেছে, লকডাউনের মধ্যেই ইলিশের এই বাজারে লোকজনের ভিড়। তাদের মধ্যে অধিকাংশ মাস্ক পরলেও সেখানে ছিল না কোনো সামাজিক দূরত্ব। ট্রলার বা ট্রাক থেকে ইলিশ আনলোড করে মাছ ঘাটে ভাগ বসলেই ডাক ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতারা গাদাগাদি করে ভিড় জমান।
বড়স্টেশন মাছ ঘাটের ইলিশ ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা জানান, গত তিন দিন ধরে ইলিশ খুবই কম আসছে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহের শুরুতে কিছুটা ইলিশের আমদানি দেখা যায়। যার অধিকাংশ ইলিশ ছিল নোয়াখালী, হাতিয়া ও ভোলার সাগর মোহনা অঞ্চলের। বর্তমানে বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা নদী বা সাগরে যেতে না পারায় এখন ঘাটে তেমন ইলিশ আসছে না। তার ওপর করোনা মহামারির কারণে চলমান কঠোর লকডাউনে কমে গেছে ইলিশের আহরণ। এ কারণে ইলিশের দামও বর্তমানে বেশি।

মাছ ঘাটের আড়তদার ও চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী মানিক জমাদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সরকারি নির্দেশনা মেনে তাদের দেওয়া সময় অনুযায়ী এই ইলিশের হাটে ইলিশ বেচা-কেনার কাজ চালাচ্ছি। তবুও, দেশব্যাপী চাঁদপুরের ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে সকাল ৯টার পর থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত লোকজনের সমাগম থামানো যায় না। এজন্য ক্রেতা, বিক্রেতা ও শ্রমিকদের সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মানে, সেই লক্ষ্যে আমরা সার্বক্ষণিক মাইকিং করছি।'
'নানা কারণে চাঁদপুরের ইলিশ ব্যবসায়ীরা জুলাইতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামনের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে যদি আশানুরূপ ইলিশ না পাই, তাহলে আমরা চরমভাবে লোকসানে পড়ব', বলেন তিনি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা কয়েকদিন আগে বড়স্টেশনের ইলিশের বাজারটিতে গিয়ে নির্দেশনা দিয়ে এসেছিলাম। যাতে সেখানে সব ধরনের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মানা হয়। কিন্তু, যদি তারা সেটা না মানে, তাহলে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।'
Comments