‘শাপলার হাটে তরমুজ বেচি…’

পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের বিখ্যাত 'কবর' কবিতার কথক যে দাদা, তিনি তরমুজ বেচতেন শাপলার হাটে। তরমুজ বেচার টাকা দিয়ে স্ত্রীর জন্য কিনতেন পুঁতির মালা, তামাক আর মাজন।
এর চমৎকার যে চিত্রকল্প পাওয়া যায় কবিতাটিতে, তা এ রকম– 'শাপলার হাটে তরমুজ বেচি ছ পয়সা করি দেড়ী,/পুঁতির মালা এক ছড়া নিতে কখনও হতনা দেরি।/দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,/সন্ধ্যাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুর বাড়ির বাটে!'

সময় পরিক্রমায় বাংলাদেশে তরমুজ চাষের পরিসর বেড়েছে। গত কয়েক বছরে কেবল বরিশালের ৬ জেলায় তরমুজ আবাদকে ঘিরে কৃষিক্ষেত্রে এক বড় আর্থিক খাত দাঁড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে তরমুজ আবাদের মাধ্যমে এ অঞ্চলের এক ফসলি জমিকে নিজেদের বুদ্ধিমত্তা ও কৌশল দিয়ে বহু ফসলি জমিতে রূপান্তরের এই প্রয়াস কৃষিক্ষেত্রে আশা জাগাচ্ছে।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, এখানকার প্রতি হেক্টর জমিতে ৪০ থেকে ৫০ টন পর্যন্ত তরমুজের ফলন হয়। যার সামগ্রিক পাইকারি মূল্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. তৌফিকুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, চলতি মৌসুমে বরিশাল অঞ্চলের প্রায় ৩৪ হাজার ৬৮৮ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হচ্ছে। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার হেক্টর। এর খুচরা বিক্রয়মূল্য দাঁড়াতে পারে ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি।
সাধারণত বিভিন্ন জাতের তরমুজের চারা লাগানো হয় ডিসেম্বরের শীতে। ফসল ওঠানোর মৌসুম শুরু হয় মার্চ থেকে। চলে জুন পর্যন্ত।

সম্প্রতি বরিশাল নগরের পোর্ট রোড এলাকার তরমুজের আড়ৎগুলো ঘুরে এই ছবিগুলো তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী টিটু দাস।
Comments