ভাসানচর পালানো আরও ৭ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ ১৬
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও সাত রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড ও সন্দীপ থানা পুলিশ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়ে চট্টগ্রামের সন্দীপ উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়ন এলাকার নদী থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করে।
যাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন, ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ওসমান গনির ছেলে রফিক (২৭), রফিকের মেয়ে রাজুমা (৫), রসিদ আহম্মদের ছেলে আবুল বশর, মেয়ে নুর কলিমা (২), তসলিমা (৬), আবদুর রহমানের মেয়ে নুর আয়েশা (৩ মাস) ও রহিম উল্যাহর মেয়ে নুর আয়েশা (২ মাস)।
এই নিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় ১১ জনের মরদেহ ও ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া সাত জনের মরদেহ আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্বজনদের মাধ্যমে দাফন করা হয়েছে।
ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান রনি বলেন, 'মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রামের সন্দীপ উপজেলার নদীতে কোষ্টগার্ড ও নৌ-বাহিনী উদ্ধার অভিযান চালিয়ে একে একে সাতটি মরদেহ উদ্ধার করেন। সোমবার সকালে একটি ও বিকেলে দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, রোববার বিকালে শিশু আবুল হাফেজের (১০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই নিয়ে মোট ১১ জনের মরদেহ এবং ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এখনো নিখোঁজ আছেন ১৬ জন।'
ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন ক্লাস্টার থেকে ৪২ জন রোহিঙ্গা নারী ও শিশু ইঞ্জিন চালিত একটি মাছ ধরার কাঠের তৈরি ট্রলারযোগে ভাসানচর থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রাত আনুমানিক দেড়টা থেকে ২টার দিকে ভাসানচর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম ও হাতিয়া উপজেলার মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগর এলাকায় পৌঁছার পর ঝড়ো বাতাসের কবলে পড়ে ট্রলারটি উল্টে যায়। এসময় নারী পুরুষ ও শিশুদের চিৎকার শুনে আশপাশের মাছ ধরারত জেলে নৌকা এগিয়ে এসে ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করেন। বাকিরা স্রোতের তোড়ে ভেসে যান। উদ্ধার হওয়া আহত রোহিঙ্গাদের নিয়ে জেলেরা শনিবার সকালে ভাসানচর ক্যাম্পে পৌঁছে দেন।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সাত জনের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো কোষ্টগার্ড ভাসানচর ক্যাম্পে হস্তান্তরের পর নিহতদের স্বজনরা এসে তাদের পরিচয় শনাক্ত করেন। নৌকাডুবির ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়া লোকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। নিখোঁজ থাকা বাকি রোহিঙ্গাদের উদ্ধারে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত আছে।'
Comments