ডিজাইনারদের নকশায়

বিভিন্ন দেশের পোশাক

অস্ট্রেলিয়া

বিশ্বের বৃহত্তম ক্রীড়া আসর অলিম্পিকে ধুন্ধুমার প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরেও থাকে নজর কাড়ার অনেক উপলক্ষ। মূল আকর্ষণ অবশ্যই পোশাক আর অনুষঙ্গ। বিশ্বের তাবড় ডিজাইনাররা বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদদের জন্য পোশাক নকশা করে থাকেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি দেশই পদক জয়ের মতোই পোশাকের অভিনবত্বে টেক্কা দিতে চায় অন্যদের। রিও গেমসের সেরা কয়েকটি টিম ইউনিফর্ম নিয়ে লিখেছেন শেখ সাইফুর রহমান

বিশ্বের শীর্ষ ডিজাইনারদের একজন র‌্যালফ লরেন এবারো ডিজাইন করেছেন আমেরিকার অলিম্পিক দলের ইউনিফর্ম। বর্ষীয়ান এই ডিজাইনারের প্রেরণা : প্লেয়িং ইট সেফ। বাটন ডাউন শার্ট, সাদা শর্ট আর স্ট্রাইপড বেল্টে স্পষ্ট ডিজাইনারের ধ্রুপদী নান্দনিকতা। এই পোশাক তারা পরবে উদ্বোধনী আর সমাপনীতে। তবে প্রতিযোগিতার পোশাক আর অন্যান্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ তৈরি করেছে নাইকি। 

সুইডেন

অন্যদিকে সুইডেন জমিয়ে দিয়েছে রঙের কারসাজিতে। বিখ্যাত দেশি ফ্যাশন ব্র্যান্ড এইচ অ্যান্ড এম এবারো রয়েছে এই দায়িত্বে। তাদের জাতীয় পতাকার কালার প্যালেট অনুসরণেই পোশাক করেছে তারা। পুনর্ব্যবহার্য কাপড়েই তৈরি করা হয়েছে উৎসব আর প্রতিযোগিতার পোশাক।

কানাডা

কানাডার যমজ ভাই ড্যান আর ডিন ক্যাটেন। ওদের ব্র্যান্ড ডিস্কয়্যারড-টু। দুই ভাইয়ের ডিজাইনে পোশাক তৈরি করেছে আরেক বিখ্যাত ডিপার্টমেন্ট স্টোর হাডসন  বে। সেই পোশাকেই অলিম্পিক মাতাবেন কানাডার ক্রীড়াবিদরা। ঐতিহ্যবাহী লাল আর সাদার সঙ্গে যোগ হয়েছে কালো আর ধূসর। তাতে আভিজাত্যই কেবল ফুটে উঠছে না, অটুট থাকছে ম্যাপললিফের গরিমা।

আবার অ্যাডিডাসের সঙ্গে ব্রিটিশ ফ্যাশন ডিজাইনার স্টেলা ম্যাকর্টানির গাঁটছড়া পুরনো। এবার তা অটুট রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনিই স্বদেশি অলিম্পিক টিমের অফিসিয়াল ডিজাইনার। পোশাক নকশায় এবারো মূল প্রেরণা ইউনিয়ন জ্যাক। অনবদ্য ডিজাইনের মূল আকর্ষণ কিন্তু কাপড়। নতুন উদ্ভাবিত এই কাপড় লন্ডন গেমসের চেয়ে অন্তত ১০ ভাগ হালকা। ফলে অলিম্পিকের প্রতিযোগিতায় বিশেষ সুবিধা পাবেন ক্রীড়াবিদরা। স্টেলার ডিজাইনে পোশাক তৈরি করেছে অ্যাডিডাস।

ফরাসি টেনিস কিংবদন্তি রেনে লাকোস্তের স্বনামের ফ্যাশন ব্র্যান্ড লাকোস্তো। আর কে না চেনে এর ব্র্যান্ড আইকন কুমিরকে। এই প্রতিষ্ঠান এবারো ফরাসি দলের জন্য পোশাক ডিজাইন করেছে। বৃষ্টি প্রতিরোধী হুডি পঞ্চো, গাঢ় নীল ট্রেঞ্জ কোট, সাদা প্যান্ট রিওতে পরবেন ফরাসি ক্রীড়াবিদরা।

বরাবরের মতো এবারো ইতালি দলের পোশাক নকশার দায়িত্ব পালন করেছেন বর্ষীয়ান ডিজাইনার জর্জিও আরমানি। সাদাকালো নিখুঁত ডিটেইলিং রয়েছে তার এই স্পোর্টি আউটফিটে।

ইউরোপের আরেক জায়ান্ট জার্মানির পোশাক আলাদাভাবে নজর পড়েছে ধূসর রঙের নানা শেড ব্যবহার করার জন্য। এর সঙ্গে আরো ছিল মেরুনের উপস্থিতি।

কিউবা অলিম্পিকে কেমন পারফরম্যান্স করবে তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে বরং তাদের পোশাক নিয়ে আলোচনা করা যেতেই পারে। কারণ এবার তাদের পোশাক থেকে অনুষঙ্গ সবই ডিজাইন করে দিয়েছে বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি শু ডিজাইনার ক্রিস্তিয়ঁ লুবাতোঁ। মেরুন, সাদা আর বাদামি রঙে উজ্জ্বল এই পোশাক।

স্বাগতিক ব্রাজিল বিখ্যাত তাদের জীবনীশক্তি আর জীবন উপভোগের জন্য। তাদের সেই উদ্দীপনা পোশাকের নকশায় ধরা হয়েছে জাতীয় পতাকার রঙকে প্রেরণা করে। ব্রাজিলের গর্ব তাদের রেইনফরেস্টও এই পোশাক নকশাকে উদ্বুদ্ধ করেছে।

বড় দেশ চীনকেইবা বাদ দিই কী করে? সাদা শার্ট আর ট্রাউজারের সঙ্গে লাল ব্লেজারে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে মেয়েদের ব্লেজার করা হয়েছে গাঢ় হলুদে। ফলে পুরো দলের মধ্যে এই বৈচিত্র্য নজর কেড়েছে সবার। 

আফ্রিকার দেশগুলোর পোশাককেও হেলা করার কোনো উপায় নেই। বিশেষভাবে উল্লেখের দাবি রাখে জ্যামাইকা। 

রিও গেমসের প্রধান মাথাব্যথা জিকা ভাইরাস। অনেক দেশ খেলোয়াড়দের পোশাক বানাতে তাই বেছে নিয়েছে মশানিরোধী সিন্থেটিক কাপড়। দক্ষিণ কোরিয়াও রয়েছে সেই দলে। অলিম্পিক দলের ক্রীড়াবিদদের জন্য বানানো হয়েছে নেভি ব্লেজার, সাদা ট্রাউজারের সঙ্গে গাঢ় নীল বোট শু। ক্রীড়াবিদদের জন্য পোশাক নকশা ও তা তৈরি করেছে রিটেইলার বিন পোল। 

বলতেই হয়, এককাঠি সরেস অস্ট্রেলিয়া। উদ্ভাবন তারা কেবল পোশাকে সীমাবদ্ধ রাখেনি। খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাই দেয়া হয়েছে জিকা-প্রতিরোধী জন্মনিরোধক। তাই বলে হেলা করেনি পোশাক নকশা। বরং তাদের অলিম্পিক কালেকশন হয়েছে সমান আকর্ষক। আর বরাবরের মতোই অলিম্পিক কালেকশন তৈরি করেছে স্পোর্টসক্র্যাফট।

ছবি : সংগ্রহ

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

5h ago