পরামর্শ

কোরবানিপরবর্তী ঘরে-বাইরে পরিষ্কার

অশোকা মাহবুবা ছবি : সংগ্রহ

সামনেই কোরবানি ঈদ। এই ঈদে কোরবানি দেয়া, মাংস কাটা, তুলে রাখা, রান্না করা ইত্যাদি তো আছেই। কিন্তু তারচেয়ে জরুরি বিষয় হলো কোরবানি শেষে মাংস কাটা ও গোছানোর পর ঘর ও এর আশপাশটা পরিষ্কার রাখা। সময়মতো সঠিকভাবে পরিষ্কার করা না হলে ঘরে ও বাইরে যেমন জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে, তেমনি অ্যানোফিলিস মশার উৎপাতও বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া রক্ত-মাংস পচে দুর্গন্ধ হলে উৎসবের আমেজটাই মাটি। তাই আজকের পরামর্শে থাকছে মাংস কাটাকুটির পর ঘরে-বাইরে সবকিছু কী করে পরিষ্কার রাখা যায়।

বাইরে

১. কোরবানির পর ওই জায়গা প্রচুর পানি দিয়ে ঝাড়–র সাহায্যে খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করা।

২. এরপর গরম পানিতে অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড (ডেটল, স্যাভলন, ব্লিচিং পাউডার ইত্যাদি) মিশিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।

৩. খোলা জায়গা হলে পানি ঢেলে ধুয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিতে হবে।

৪. পশুর মলমূত্র, রক্ত, আবর্জনা যেখানে-সেখানে না ফেলে গর্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। সিটি করপোরেশনের আওতায় হলে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলুন অথবা ময়লার ভ্যানে দিয়ে দিতে হবে।

৫. কোরবানি শেষে হোগলার পাটি পুড়িয়ে ফেলাই বাঞ্ছনীয়। কারণ এই হোগলা জমিয়ে রাখলে অ্যানোফিলিস মশার উপদ্রব বাড়ে।

ঘরে

১. মাংস ঘরে আনার পর সাধারণত রান্নাঘরেই কোটা-বাছার কাজ সারা হয়। যাদের রান্নাঘর ছোট তারা ডাইনিং রুমটাও এই কাজে ব্যবহার করতে পারেন। মাংস কাটার আগে জায়গাটা ভালোমতো ধুয়ে-মুছে প্লাস্টিকের শিট বা পাটি বিছিয়ে নিলে ভালো হয়। এতে মেঝে নোংরা হয় কম।

২. মাংস কাটা হয়ে গেলে প্লাস্টিকের শিট বা পাটি উঠিয়ে নিয়ে ওই জায়গা প্রথমে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ও মুছে নিতে হবে। আশপাশের তাক কিংবা ক্যাবিনেটেও রক্ত, মাংসের টুকরো লেগে থাকতে পারে। তাই সেগুলোকেও গরম পানিতে ন্যাকড়া ভিজিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

৩. এরপর গরম পানিতে ঘন করে লেবুর রস গুলে তা দিয়ে মেঝে মুছে নিতে হবে। ফলে স্থানটির তেলতেলে ভাব কমবে। টাইলসের মেঝেতে ফ্লোর ক্লিনার ব্যবহার করা যায়।

৪. স্থানটিকে জীবাণুমুক্ত করতে স্যাভলন, ডেটল অথবা ফিনাইল দিয়ে দুই-একবার মুছতে হবে। অনেকে এ ধরনের জীবাণুনাশকের গন্ধ সহ্য করতে পারেন না। তারা স্থানটি শুকানোর পর যে কোনো ধরনের এয়ার ফ্রেশনার বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন।

৫. মাংস কাটাকাটি শেষে দা, বঁটি, ছুরি এবং মাংস আনা-নেয়ার জন্য ব্যবহৃত পাত্র ইত্যাদি গরম পানি ও সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে-মুছে শুকিয়ে রাখতে হবে।

৬. বাসায় মাংস আনার সময় সিঁড়ি অথবা অন্য কোনো জায়গায় রক্তের ছোপ থেকে গেল কিনা খেয়াল করে ভালোভাবে সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে মুছে নিতে হবে।

৭. গরু ও খাসির চর্বি রান্নাঘরের সিঙ্কে পরিষ্কার করলে চর্বি জমে সিঙ্কের নল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া ভুঁড়ি অবশ্যই বাইরে থেকে ভালো করে পরিষ্কার করে তবেই ভেতরে আনা উচিত।

৮. মাংস ধোয়াধুয়ির পর মাংসের গায়ে লেগে থাকা চর্বি জমেও সিঙ্ক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা থেকে উদ্ধার পেতে মাংস কাটাকুটি ও ধোয়ার পর সিঙ্কে বেকিং পাউডার বা কাপড় কাচার সোডা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে ঢেলে দিলে চর্বি গলে যাবে এবং সিঙ্কের তেলতেলে ভাবও দূর হয়ে যাবে।

৯. সবশেষে আপনার পুরো ফ্ল্যাট গরম পানিতে ফ্লোর ক্লিনার মিশিয়ে অন্তত একবার ভালোমতো মুছে নিয়ে সারা বাড়িতে এয়ার ফ্রেশনার স্প্রে করে দিতে হবে। ব্যস, আপনার ঘর-বাড়ি তৈরি সন্ধ্যার ঈদ উৎসবের জন্য।



 

 

Comments

The Daily Star  | English

Students to resist AL event today

The student movement against discrimination will hold a mass gathering at Zero Point in the capital’s Gulistan today, demanding trial of the Awami League.

3h ago