রক্ষকই যখন ভক্ষক

বিনিয়োগকারীদের ১৫৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি

বিনিয়োগকারীদের ১৫৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশন (ইউএসএফ)।

অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গ্রাহকের বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনার কাজ করে। এ ধরনের কোম্পানি গবেষণা করে বিনিয়োগ করে এবং বিনিয়োগ থেকে আসা মুনাফা গ্রাহকের সঙ্গে ভাগ করে নেয়।

অর্থাৎ সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্তরাই এক্ষেত্রে আত্মসাৎকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্তে আত্মসাতের ঘটনাটি উঠে এসেছে।

কিন্তু বিএসইসি জানতে পেরেছে, ইউএফএস তাদের ৪টি ওপেন-এন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ড থেকে প্রায় ১৫৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

মিউচুয়াল ফান্ডগুলো বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তাদের স্টক ও বন্ডের মতো সিকিউরিটিজগুলোতে বিনিয়োগের জন্য। ওপেন-এন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ডগুলো পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত নয়। তবে যে কেউ তাদের ফান্ড ম্যানেজারের অফিসে গিয়ে কেনা-বেচা করতে পারে।

ইউএসএফের অনিয়ম তদন্তে গত জুনে একটি কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি।

ইউএসএফ যে ৪টি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছে, সেগুলো হলো— ইউএফএস-আইবিবিএল শরিয়াহ ইউনিট ফান্ড, ইউএফএস-পপুলার লাইফ ইউনিট ফান্ড, ইউএফএস-ব্যাংক এশিয়া ইউনিট ফান্ড ও ইউএফএস-পদ্মা লাইফ ইসলামিক ইউনিট ফান্ড।

বিএসইসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আত্মসাৎকৃত মোট অর্থের মধ্যে ১২৫ কোটি টাকা মিউচুয়াল ফান্ডের নগদ ও ফিক্সড ডিপোজিট থেকে এবং বাকিটা সুদ আয় থেকে ও ব্যবস্থাপনা ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায় থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

'ইউএফএস ম্যানেজমেন্ট ইচ্ছাকৃতভাবে মিউচুয়াল ফান্ডের আর্থিক বিবরণীতে কারচুপি করে তহবিল উত্তোলন করেছে। এতে নগদ ও নগদ সমতুল্য সম্পদ, এফডিআর ও মুদারাবা টার্ম ডিপোজিটে বিনিয়োগ এবং সুদের আয়ের মিথ্যা তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।'

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ভুল তথ্য জমা দিয়ে এবং ভুয়া এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট) ও মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট করে সিকিউরিটিজ নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে।

সংস্থাটি জাল সম্পদ দেখিয়ে, তাদের ওয়েবসাইটে আর্থিক বিবরণী আপলোড না করে এবং বিএসইসির কাছে আর্থিক বিবরণী জমা না দিয়ে মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটগুলোর বিক্রয় ও ক্রয়মূল্যের হিসাব-নিকাশ করছে বলেও জানা গেছে।

গত ২১ আগস্ট একটি অডিটের সময় ১০৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকার গরমিলের কথা স্বীকার করেছেন ফান্ড ম্যানেজার। এই অর্থের ৫০ শতাংশ ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এবং বাকি পরিমাণ ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।

বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'সেই অর্থ এখনো ফেরত দেওয়া হয়নি।'

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন When fences eat crops

Comments

The Daily Star  | English
India’s stance on Sheikh Hasina's extradition

NIDs of Hasina, 9 family members 'locked'

The NIDs of the 10 listed individuals were locked through an official letter on April 16

16m ago