পাঁচ তারকার ছোটবেলার ঈদ

ছেলেবেলার ঈদ নিয়ে পাঁচ তারকা কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সাথে।

ঈদ মানে আনন্দ। খুশির দিন। সব মানুষের মতো তারকাদেরও রয়েছে শৈশবের অনেক আনন্দময় স্মৃতি। সেসব স্মৃতি রোমন্থন করে তারা স্বস্তি পান, সাময়িকভাবে হারিয়ে যান শৈশবের সেই সব ফেলে আসা দিনে। ছেলেবেলার ঈদ নিয়ে পাঁচ তারকা কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সাথে।

ফেরদৌস: সত্যি কথা বলতে ছোটবেলার ঈদ ছিল সবচেয়ে রঙিন। সবচেয়ে মধুর। সবচেয়ে আনন্দের। ছোটবেলার ঈদে কোনো দেওয়ার বিষয় ছিল না, শুধু পাবার বিষয়টি মাথায় থাকত। কখন কাকে সালাম করব, সেলামির টাকা দিয়ে কোথায় কোথায় যাব, কার বাসায় গিয়ে খাব-এইসব ভাবনা কাজ করত। তারপর সালামির টাকা দিয়ে ঈদের দিন সিনেমা দেখতে যাবার একটি বিষয় তো ছিলই। কিন্তু, অনেক সময় ঈদের দিন টিকিট পেতাম না। ঈদের পরের দিন সিনেমা দেখতে যেতাম। ছোটবেলার ঈদে নামাজ পড়ে  বাসায় এসে পায়েশ খেয়েই দৌঁড় দিতাম। বন্ধুদের নিয়ে নানা জায়গায় আড্ডা দিতাম। মনটা তখন ঘরে থাকত না। ঘুরে বেড়াব, হইচই করব। এখন সেইসব দিনের কথা ভাববেলই কেমন হয়ে যাই। আর ভাবি, সেইসব দিন আর ফিরে আসবে না। আমাদের সন্তানেরা কোনোদিনও সেই মধুর দিন ফিরে পাবে না।

মিশা সওদাগর: জীবনে যত ঈদই আসুক না কেন, ছোটবেলার ঈদের মতো আর আসবে না। ছোটবেলার ঈদের মতো মহাখুশির ঈদ আর পাব না। এখনো ঈদের সময় পেছন ফিরে তাকালেই চোখে ভাসে ফেলে আসা জীবনের সুন্দর সুন্দর স্মৃতিগুলো। কত সুন্দর করে ঈদের ছুটি কাটিয়েছি, ঈদের দিন পার করেছি। কী যে আগ্রহ ছিল ঈদের জন্য। ঈদের চাঁদ দেখাটা ছিল আরেকটি বিরাট বিষয়। আমি তো পুরোনো ঢাকায় বড় হয়েছি। আমার কাছে ছোটবেলার ঈদ সত্যি আলাদা। এর সাথে কোনোকিছুর তুলনা হবে না। মিস করি সেই সময়গুলো। এখন ঈদ হয়ে গেছে দায়িত্ব।

অপূর্ব: ঈদ মানেই আমার কাছে আনন্দ। ঈদ মানে আমার কাছে দারুণ কিছু। তবে, এখন ঈদের সময় বাবাকে খুব মিস করি। বাবার কথা ঈদের দিন বেশ মনে পড়ে। বাবার জন্য মন খারাপ করি। কষ্ট হয়। কিন্তু যখনই অতীতে ফিরে যাই, ছোটবেলার ঈদের সময়ে চোখ রাখি, তখন মধুর মধুর স্মৃতিগুলো খুঁজি। আপন মনে একা একা খুঁজি। খুঁজি আর ভাবি-আহারে আবার যদি ফিরে পেতাম সেই দিনগুলো! ছোটবেলার ঈদের প্রধান আকর্ষণ ছিল নতুন পোশাক, সালামি এবং মজার মজার খাবার। এখন আমার সন্তানের ঈদ দেখে ওই অনুভূতিগুলো জেগে উঠে।

সোহানা সাবা: ছোটবেলার ঈদে দাদাবাড়িতে যাবার স্মৃতিগুলো আমার জীবনে রঙিন চশমার মতো চোখে লেগে আছে। ওভাবেই লেগে থাকুক। ওটা জীবনের মূল্যবান স্মৃতি, সেটা মুছে ফেলতে চাই না। ঈদের ছুটিতে বাবা পরিবার নিয়ে দাদাবাড়িতে যেতেন। আমরা কয়েকটি দিন থাকতাম। গ্রামময় ঘুরে বেড়াতাম। পাখির ডাক শুনতাম, প্রকৃতি দেখতাম। যেন নতুন পৃথিবী পাবার মতো। খুব আনন্দ করতাম, হইচই করতাম, যা কখনোই ভোলা যাবে না। তাছাড়া ঈদের সময় ছুটি পেতাম। স্কুল বন্ধ থাকত। এটা খুব উপভোগ করতাম। আর ছিল নতুন পোশাকের বিষয়। সাতদিন সাতটি নতুন পোশাক পরতাম। এখন আমার সন্তানের ঈদের আনন্দ দেখে নিজের ছোটবেলার ঈদ খুঁজে বেড়াই।

সজল: আমি মূলত ঢাকার মানুষ। পুরোনো ঢাকায় আমার সবকিছু। দাদারবাড়ি সেখানে। কাজেই আমার চোখে ঈদের স্মৃতি মানেই আসল ঢাকার ঈদ। কী যে সুন্দর করে ঈদ করতাম ছোটবেলায়। প্রতিটি মহল্লা উৎসবমুখর থাকত। মহল্লার মোড়গুলো সাজ-সজ্জায় ভরে থাকত। এমন করে ঈদের পরিবেশ বুঝি পুরোনো ঢাকাতেই পেতাম। ঈদের দিন চারপাশে চোখ রাখলেই শান্তি লাগত। তারপর ঈদের নামাজ পড়ে কার বাসায় যাব, কাকে সালাম করব, সালামি কত পাব-এই বিষয়গুলি ছিল ছোটবেলার ঈদে। এখন বড় হয়েছি। দায়িত্ব বেড়েছে। কিন্তু আমার জীবনে জড়িয়ে আছে ছোটবেলার সুখের ও শান্তির সেই ঈদ।

Comments

The Daily Star  | English

Lightning strikes claim 7 lives in 4 districts

At least seven people died and nine others were injured in lightning strikes in Rangamati, Sylhet, Khagrachhari, and Cox’s Bazar districts today

37m ago