২০ বছর পরেও বলিউডপ্রেমীদের ভালোবাসায় সিক্ত আমান-ন্যায়না-রোহিত

কাল হো না হো
‘কাল হো না হো’ সিনেমার পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

দুই দশক পার হলেও এতটুকু ফিকে হয়নি বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা 'কাল হো না হো'। মুক্তির ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সিনেমা ও সিনেমার দুর্দান্ত গানগুলো নতুন করে সামনে আনছেন দর্শকরা।

বলিউডের কালজয়ী ক্ল্যাসিক সিনেমার কথা বলতে গেলে করণ জোহরের 'কাল হো না হো' এর নাম আসবেই। এটি বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের ক্যারিয়ারেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা।

আমান, ন্যায়না ও রোহিতের ত্রিভুজ প্রেমের গল্প ২০ বছর আগে আজকের দিনে বড় পর্দায় প্রথমবার দেখেছিলেন দর্শকেরা। সেই থেকে শুরু, এখন পর্যন্ত বলিউডপ্রেমীদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছে সিনেমাটি।

কাল হো না হো
‘কাল হো না হো’ সিনেমার দৃশ্য

করণ জোহর ও যশ জোহরের প্রযোজনায় সিনেমাটি পরিচালনা করেন নিখিল আদভানি। আমান, ন্যায়না ও রোহিতের চরিত্রে প্রাণ দেন শাহরুখ খান, প্রীতি জিনতা ও সাইফ আলি খান। করণ জোহরের দুর্দান্ত চিত্রনাট্যের সাথে শাহরুখ, প্রীতি ও সাইফের অসাধারণ অভিনয়ে সিনেমায় ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও পরিবারিক টানাপোড়েনের নানা দিক উঠে আসে। আবেগপূর্ণ এই যাত্রায় সিনেমার চরিত্রদের সাথে দর্শকরা হেসেছেন যেমন, ঠিক তেমনি সিনেমার শেষ অংশে চোখ ভিজে ওঠেনি এমন কাউকে পাওয়া কঠিন।

মুক্তির পরই সাড়া ফেলেছিল 'কাল হো না হো'। ২০০৩ সালের ব্যবসাসফল সিনেমার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা এই সিনেমা মুক্তির প্রথম দিনেই ভারতে ২ কোটি ১৭ লাখ রুপি আয় করে। আন্তর্জাতিকভাবেও ব্যবসা সফল হয়েছিল সিনেমাটি। কুড়িয়ে নিয়েছিল সমালোচকদের প্রশংসা।

কাল হো না হো
‘কাল হো না হো’ সিনেমার দৃশ্য

শংকর, এহসান ও লয় এর সংগীত পরিচালনায় 'কাল হো না হো'র অ্যালবামটি ভক্তদের মনে পোক্ত আসন পেতে নিয়েছে। ভারতের ৫১ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে সেরা সংগীত পরিচালনার পুরস্কার পান ভারতের সংগীতাঙ্গনের জনপ্রিয় এই ত্রয়ী। একই আসরে সনু নিগাম জিতে নেন সেরা প্লেব্যাক গায়ক (পুরুষ) এর পুরস্কার।

এছাড়া ৪৯ তম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে মোট ১১টি বিভাগে মনোনয়ন পায় সিনেমাটি। এর মধ্যে সেরা অভিনেত্রী (প্রীতি জিনতা), সেরা পার্শ্ব অভিনেতা (সাইফ আলি খান) ও সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী (জয়া বচ্চন) সহ মোট ৮টি বিভাগে ফিল্মফেয়ার জিতে নেয়।

কাল হো না হো
‘কাল হো না হো’ সিনেমার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

'কাল হো না হো'র ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে করণ জোহর নিজের ইনস্টাগ্রামে আবেগঘন একটি পোস্ট শেয়ার করেন। এই সিনেমায় বাবা যশ জোহরের সঙ্গে শেষবার কাজ করার তিক্তমধুর সময়ের স্মৃতিচারণ করেন তিনি। এ সময় সিনেমা সংশ্লিষ্ট সবার কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করেন। পরিচালক নিখিলকে ধন্যবাদ জানান হৃদয়স্পর্শী একটি সিনেমা উপহার দেওয়ার জন্য।

কাল হো না হো
‘কাল হো না হো’ সিনেমার দৃশ্য

পরিচালক নিখিল আদভানি 'হিন্দুস্তান টাইমস' কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই সিনেমা নিয়ে কথা বলেন। 'কাল হো না হো'র মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে যাত্রা শুরু করেন আদভানি। প্রথম সিনেমাতেই শাহরুখ খান, প্রীতি জিনতা, সাইফ আলি খান, জয়া বচ্চনের মতো তারকাদের সাথে কাজ করা, শংকর, এহসান ও লয়কে সংগীত পরিচালক হিসেবে পাওয়া, জাভেদ আখতারকে গীতিকার হিসেবে পাওয়া, নিউ ইয়র্ক শহরকে ক্যানভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারা- এ সব কিছুই তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হয়েছে। 'কাল হো না হো' পরিচালনা করতে না পারলে আজকের অবস্থানে আসা অসম্ভব ছিল বলে জানান তিনি।

কাল হো না হো
‘কাল হো না হো’ সিনেমার দৃশ্য

নিজের ইনস্টাগ্রামে 'কাল হো না হো'র ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পোস্ট দেন নিখিল আদভানিও। ক্যাপশনে 'কাল হো না হো'র শুটিং এর একটি স্মরণীয় স্মৃতি হিসেবে লেখেন যশ জোহরের ক্যান্সার ধরা পড়ার কথা।

 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

A post shared by Karan Johar (@karanjohar)

ক্যাপশনে নিখিল লেখেন, 'প্রতিদিন প্রথম দৃশ্য ধারণের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আমি ঘাড় ঘুরিয়ে করণের দিকে তাকাতাম। একদিন সকালে, রোহিতের (সাইফ আলি খান) অফিসের দৃশ্যধারণের আগে আমি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম ও নেই। অদ্ভুত লেগেছিল। সেদিন সন্ধায় ও সেটে আসে ও আমাকে আলাদা করে ডেকে নেয়। ম্যানহ্যাটনের অফিসে বসে ও আমাকে বলে যশ আংকেলের (যশ জোহর) ক্যান্সার ধরা পড়েছে।'

তিনি আরও লেখেন, 'কাল হো না হো অনেককে অনেক আনন্দ দিয়েছে। কিন্তু আমরা যারা যশ আংকেলের সাথে সময় কাটিয়েছি, আমাদের জন্য এটা সবসময়ই তিক্তমধুর হয়ে থাকবে।'

তথ্যসূত্র: দ্য স্টেটসম্যান, দ্য হিন্দু ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

Comments