জামালপুরে কমছে বন্যার পানি, বাড়ছে ভোগান্তি

জামালপুরে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কমতে শুরু করেছে। তবে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এ ছাড়াও, শুকনো খাবারের তীব্র সংকট চলছে।
জামালপুরে এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার পানি। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কমতে শুরু করেছে। তবে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এ ছাড়াও, শুকনো খাবারের তীব্র সংকট চলছে।

বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দারা বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ইসলামপুরে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। ফসলি জমিতে পলি জমে নষ্ট হয়ে গেছে ধানের চারা। প্রবল স্রোতে ভেঙে গেছে রাস্তা-ঘাট, পুল ও কালভার্ট।

নদীভাঙন কবলিত অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে। তবে পাচ্ছেন না ত্রাণ। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের তীব্র সংকট।
 
সরিষাবাড়ির শোয়াকোর গ্রামের মজনু মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যায় রাস্তা-ঘাট সব ভেঙে গেছে। আমার ৩ বিঘা ধানখেত ও আধা বিঘা সবজির বাগান নষ্ট হয়ে গেছে।' 

দেওয়ানগঞ্জের চুকাইবাড়ি এলাকার দুলু মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা নদীভাঙনের শিকার। ১০ বার বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়েছি। আর কত সরাব।'

'আমরা সাধারণ কৃষক। নদীর তীর ছেড়ে কোথাও যেতেও পারি না। সরকার নদী খনন করে তীর বেঁধে দিলে আমাদের এত ভোগান্তি হত না', বলেন তিনি। 

ইসলামপুরের গুটাইল গ্রামের মানিক মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিম্নাঞ্চল হওয়ায় প্রতিবারই বন্যায় এ এলাকার কৃষক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমার ৪ বিঘা ধানখেত নষ্ট হয়েছে। এখন ধানের চারা পাব কই, সারের টাকা পাব কই?' 

জামালপুর জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যমুনার পানি কমতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকায় ৩৯ মেট্রিক টন চাল ও ৫৪৯ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিশুখাদ্য ও গোখাদ্য কেনার জন্য আরও ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।' 

জামালপুরের জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদীভাঙন কবলিত মানুষদের জন্য আমরা কাজ করছি। তাদের ঘর তৈরির জন্যে আমরা টিন ও নগদ টাকা দিয়েছি। বন্যা চলে গেলে তাদের জন্য খাস জমিতে বাড়ি করে দেওয়া হবে।'

Comments