নতুন মায়ের বিষণ্ণতা কমাতে যা করণীয়
সন্তান জন্মদানের পর মায়ের বিষণ্ণতা (পিপিডি) 'বেবি ব্লুজ' নামে পরিচিত। নতুন মায়েদের ক্ষেত্রে এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। 'বেবি ব্লুজ' একজন মাকে হতাশাগ্রস্ত করে তুলতে পারে, স্বাভাবিক কাজে তিনি আগ্রহ হারাতে পারেন এবং শিশুর সঙ্গে মায়ের সংযোগ তৈরি হতে সমস্যা হতে পারে।
কেন এমন হয়
অন্তঃসত্ত্বা নারীর শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন উৎপাদন বেড়ে যায়। সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে এই হরমোন দ্রুত হ্রাস পেয়ে পিপিডির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সেরোটোনিন ও ডোপামিনের মতো মেজাজ নিয়ন্ত্রণকারী নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রার পরিবর্তন হলে একজন নারীর আবেগ পরিবর্তন হতে পারে।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন নারীদের ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। মানসিক চাপ, সহযোগিতার অভাব, পূর্বের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসহ যেকোনো কারণেই এই বিষণ্ণতা তৈরি হতে পারে।
পিপিডি কমাতে ব্রেস্ট ফিডিং
সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো (ব্রেস্ট ফিডিং) পিপিডি কমাতে সাহায্য করে। বুকের দুধ খাওয়ানো মা ও শিশু উভয়ের জন্যই জরুরি। বুকের দুধ শিশুকে শৈশবকালীন বড় অসুখ থেকে বাঁচাতে সর্বোত্তম পুষ্টি ও অ্যান্টিবডি দেয়। সেইসঙ্গে মাকে শান্ত থাকতে সাহায্য করে।
বুকের দুধ খাওয়ালে প্রোল্যাক্টিন ও অক্সিটোসিন নির্গত হয়। গবেষকরা বিশ্বাস করেন, অক্সিটোসিন মাকে শান্ত রাখে এবং প্রোল্যাক্টিন তাদের উদ্বেগ কমায়।
গবেষকরা দেখেছেন, যে মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, তাদের পিপিডি সবচেয়ে কম থাকে।
শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য একটি পূর্বনির্ধারিত মনোভাব প্রয়োজন এবং কাউন্সেলিং এতে সাহায্য করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা জন্মের প্রথম ঘণ্টা থেকেই শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।
পিপিডি বা বেবি ব্লুজ রোগীদের উচিত তাদের এই সমস্যা বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা। ওষুধ, থেরাপি ও কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এর চিকিত্সা সম্ভব। নির্ভরযোগ্য একজন মানুষের সমর্থন এ ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ই-মেইল: [email protected]
Comments