জুলফিকার আলী ভুট্টো ন্যায়বিচার পাননি: পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট

জুলফিকার আলী ভুট্টো। ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিচার, সাজা ও মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে বলেছেন, তিনি 'ন্যায্য বিচারের' সুযোগ পাননি।

জিও নিউজ জানায়, আজ বুধবার পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) কাজী ফয়েজ ঈসার নেতৃত্বে শীর্ষ আদালতের নয় সদস্যের বেঞ্চ সাজা পুনর্বিবেচনা ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে এই মন্তব্য করেছে।

১৯৭৮ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে মৃত্যুদণ্ড দেন লাহোর হাইকোর্টের চার সদস্যের একটি বেঞ্চ। পরে ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতও রায় বহাল রাখলে ১৯৭৯ সালে ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

সে সময় পাকিস্তানে জেনারেল জিয়াউল হকের অধীনে সামরিক শাসন চলছিল। ১৯৭৭ সালে ভুট্টো সরকারকে হটিয়ে দেশটির ক্ষমতা দখল করেছিলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউল হক। অনেকেই মনে করেন, ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ডের সাজার পেছনে জিয়াউল হকের হাত ছিল। এই ঘটনাকে 'জুডিশিয়াল কিলিং'বা বিচার-বিভাগীয় হত্যাকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে ভূট্টোর দল পিপিপি।

মৃত্যুদণ্ডের ৪৫ বছর পর আজ বুধবার সংক্ষিপ্ত আদেশ ঘোষণায় প্রধান বিচারপতি ঈসা বলেন, 'জুলফিকার আলী ভুট্টো ন্যায্য বিচার পাননি। তার বিচার যথাযথ প্রক্রিয়ায় সাংবিধানিক নিয়মে হয়নি।'

প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসা রায়ের সরাসরি সম্প্রচারে বলেন, তার নেতৃত্বাধীন নয় সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এ দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'সুষ্ঠু বিচার এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে এর কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।'

পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এটি একটি ইতিবাচক অগ্রগতি যে, একটি আদালতের করা ভুল আদালতের মাধ্যমেই সংশোধন করা হলো।'

এর আগে, ২০১১ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের সংবিধানের ১৮৬ অনুচ্ছেদের অধীনে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পুনর্বিবেচনার বিষয়ে শীর্ষ আদালতের মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি।

জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা। তার মেয়ে পাকিস্তানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো এখন দলটির প্রধান। বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলী জারদারি। বেনজির নিজেও ২০০৭ সালে আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান। তার হত্যার জন্য কে দায়ী এ নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা।

Comments

The Daily Star  | English
future of bangladesh after banning awami league

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

14h ago