বিষপানে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
নরসিংদীর শিবপুরে বিষপানে স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় স্কুলশিক্ষক নার্গিস সুলতানা কনিকাকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় শিবপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আফজাল মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, গতকাল বৃহস্পতিবার স্কুল ড্রেসকোড না মানায় শিক্ষক তিরস্কার ও বেত্রাঘাত করায় অপমানে আত্মহত্যা করেছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রভা।
বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের মতো স্কুলে আসে প্রভা। সাদা সালোয়ার কামিজ পরলেও সাদা পায়জামার বদলে ট্রাউজার পরে স্কুলে আসায় বিষয়টি স্কুলের শিক্ষক নার্গিস সুলতানা কনিকার চোখে পড়ে। ড্রেসকোড না মানায় তিনি ওই স্কুলছাত্রীকে তিরস্কার ও বেত্রাঘাত করেন। এরপর ক্ষোভে ও অভিমানে স্কুল থেকে বের হয়ে ইঁদুর মারার বিষ কিনে পান করে প্রভা।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সে শিবপুর থানায় যায়। সেখানে গিয়ে থানায় কর্মরত ডিউটি অফিসার এই আই জিয়ার কাছে স্কুলশিক্ষক নার্গিস সুলতানা কনিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।
পুলিশ কর্মকর্তাকে ওই শিক্ষার্থী জানায়, ওই শিক্ষক সবসময় কারণে-অকারণে তাকে তিরস্কার এবং শিক্ষার্থীদের সামনে অপমান করেন। তাই সে বিষপানে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তার মৃত্যুর জন্য ওই শিক্ষক দায়ী। এর পরপরই থানায় অসুস্থ হয়ে পড়ে প্রভা।
পরে থানা পুলিশ দ্রুত স্কুলের প্রধান শিক্ষককে খবর দেয় এবং তাকে শিবপুর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রভাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই পলাতক আছেন অভিযুক্ত শিক্ষক নার্গিস সুলতানা কনিকা।
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহাম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্কুল শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। যেহেতু সে মৃত্যুর আগেই থানায় এসে জিডি করেছিল, তাই তার জিডির সূত্র ধরে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো মামলা করা হয়নি।'
জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূর উদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, 'নার্গিস সুলতানা কণিকা নামের ওই শিক্ষককে আগেও সতর্ক করা হয়েছিল ছাত্রছাত্রীদের মারধর না করার বিষয়ে। কিন্তু তিনি এরপরও সচেতন হননি।'
'ক্লাসে কী এমন ঘটনা ঘটেছিল, যাতে শিক্ষার্থী ক্লাস থেকে বেরিয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করে ফেলতে পারে, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যু আমরা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মেনে নিতে পারছি না। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে স্কুল কমিটির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' বলেন তিনি।
Comments