পাচারকালে লালমনিরহাটে ৫১৪ বস্তা সার জব্দ, বিএডিসি ডিলার পলাতক

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের পোড়া বটেরতল এলাকায় ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা মূল্যের ৫১৪ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে।
জব্দকৃত সার। ছবি: স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের পোড়া বটেরতল এলাকায় ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা মূল্যের ৫১৪ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে ওই এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ডিলার আতিকুর রহমান বাবুর গুদাম থেকে ট্রাকে করে সার পাচারের সংবাদ পেয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার পুলিশসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ট্রাকসহ ওইসব সার জব্দ করেন।

এ ঘটনার পর থেকে সার ডিলার আতিকুর রহমান বাবু পলাতক।

জব্দকৃত সারের মধ্যে রয়েছে ৩২০ বস্তা ডিএপি ও ১৯৪ বস্তা টিএসপি। প্রতি বস্তায় সারের পরিমাণ ৫০ কেজি। সরকার ডিলাদের কাছে প্রতি বস্তা ডিএপি সার ৭০০ টাকা ও টিএসপি সার ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে। প্রত্যেক ডিলার প্রতি বস্তা ডিএপি সার সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা ও টিএসপি সার ১ হাজার ১০০ টাকায় খুচরা বিক্রি করতে পারবেন বলে নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ডিলাররা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে প্রতি বস্তা ডিএপি ১ হাজার -১ হাজার ১০০ টাকা ও টিএসপি ১ হাজার ৪০০-১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করে থাকেন।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার আজ শনিবার দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুক্রবার রাতে এসব সার জব্দ করা হয়। কিন্তু বিএডিসি ডিলার এ সারের অনুকূলে কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেননি। পরে কৃষি বিভাগের কাছে জব্দকৃত সার বুঝিয়ে দিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'

স্থানীয় কৃষক ফজলে রহমানের অভিযোগ, সার ডিলার আতিকুর রহমান বাবু স্থানীয় কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করতেন না। তার কাছে সার কিনতে গেলে সার নেই বলে কৃষকদের বিদায় করে দিতেন। অধিক লাভের আশায় তিনি সেসব সার ট্রাকে করে অন্যত্র পাচারের চেষ্টা করছিলেন।

অভিযুক্ত সার ডিলার আতিকুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে অতীতেও অন্য এলাকায় সার পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে আজ তার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

মহেন্দ্রনগর সার গুদামের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) জুয়েল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন। অফিসের সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। শুক্রবার গুদাম থেকে কোনো ডিলার সার উত্তোলন করেননি। কৃষি বিভাগ থেকে লিখিতভাবে জানালে অভিযুক্ত সার ডিলারের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মারুফা ইফতেখার সিদ্দিকা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আটক ৫১৪ বস্তা সার থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত সার ডিলার শনিবার দুপুর পর্যন্ত জব্দকৃত সারের ব্যাপারে কোনো ধরনের ডকুমেন্ট দেখাতে পারেননি। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হবে।'

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ঘটনায় শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।'

Comments