চট্টগ্রাম-৪

নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকারি কর্মচারী, ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে সিভিল সার্জনের চিঠি

চট্টগ্রাম-৪ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী মো. সালাহউদ্দিন।
ctg_map_ds
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এক সরকারি কর্মচারী। জানা গেছে, পেশাগত পরিচয় গোপন করে চট্টগ্রাম-৪ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী মো. সালাহউদ্দিন।

সূত্র জানায়, এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে রিটার্নিং কর্মকর্তা (আরও) ও নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্র বাতিল করলেও আদালতে আপিল করে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান।

তবে মনোনয়নপত্রে তিনি তার সরকারি চাকরির কথা উল্লেখ না করে ব্যবসাকে পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন বলে রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মচারী দেশে বা বিদেশের কোনো আইনসভার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর 'রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশ নেওয়া' এর ধারা অনুসারে, 'কোনো সরকারী কর্মচারী বাংলাদেশে হোক বা অন্য কোথাও আইনসভার কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বা নির্বাচনে প্রচারণা বা এতে কোনোভাবে হস্তক্ষেপ বা তার প্রভাব ব্যবহার  করতে  পারবেন না।' 

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সালাহউদ্দিন অফিস থেকে ছুটি না নিয়ে ১৮ নভেম্বর থেকে অফিসে অনুপস্থিত রয়েছেন। অফিসে অননুমোদিত অনুপস্থিতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষ তাকে তিন বার কারণ দর্শানোর চিঠি দিলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।

যোগাযোগ করা হলে, সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাঃ নুর উদ্দিন জানান, সালাহউদ্দিন ২০১২ সাল থেকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত।

'তিনি বিনা অনুমতিতে অফিসে অনুপস্থিত থাকায়, আমি তাকে ২৩ নভেম্বর একটি কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছিলাম কিন্তু তিনি এর উত্তর দেননি। এর মধ্যে, আমি জানতে পারি যে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য  মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এটা জেনে আমি তাকে টেলিফোনে এ বিষয়ে সতর্ক করি কিন্তু তিনি এতে কোনো কর্ণপাত করেননি,' বলেন নূর উদ্দিন।

পরে ১৮ ডিসেম্বর তাকে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর চিঠি দিই কিন্তু তার কোনো উত্তর পাইনি।'

তিনি বলেন, 'ইসিতে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে শুনে আমি স্বস্তি পেয়েছিলাম।' 

'এরপর আমি জানতে পারি যে তিনি আদালতে আপিল করে তার প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন,' নূর উদ্দিন বলেন, 'তারপর, আমি গতকাল রোববার তাকে তৃতীয় কারণ দর্শানোর চিঠি দিই। চিঠিতে তার কাছে জানতে চাই  কেন তিনি অনুমতি ছাড়া অফিসে অনুপস্থিত আছেন  এবং কেন তিনি সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।'

নুর উদ্দিন বলেন, 'আমি বিষয়টি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন এবং চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকেও (যিনি চট্টগ্রাম-৪ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা)  জানিয়েছি।'

যোগাযোগ করা হলে, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, রোববার তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি ইসিকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, চিঠিতে আমরা ইসিকে জানিয়েছি, সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ না করেই সালাউদ্দিন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।

যোগাযোগ করা হলে, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও চট্টগ্রাম-৪ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা তোফায়েল ইসলাম জানান, রোববার তিনি সিভিল সার্জনের চিঠি পেয়েছেন।

'আমরা যাচাই-বাছাইয়ের সময় তার প্রার্থিতা বাতিল করেছি কিন্তু তিনি আদালতে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। আমরা জানতাম না যে তিনি একজন সরকারি কর্মচারী।'

তিনি বলেন, 'আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা তাকে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছি। তাকে রকেট প্রতীক  দেওয়া হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'এখন সিভিল সার্জনের চিঠি পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ইসিকে জানিয়েছি, যাতে ইসি বিষয়টি আদালতকে জানাতে পারে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।'

বারবার চেষ্টা করেও ফোন কল না ধরায় সালাহউদ্দিনের মন্তব্যের জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago