‘বাংলাদেশের সঙ্গে কেনেডি পরিবারের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি জুনিয়র। ছবি: স্টার

প্রয়াত মার্কিন সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি জুনিয়র বলেছেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে কেনেডি পরিবারের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।' এ ছাড়া সব সময় তারা এ দেশের গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধি কামনা করে বলেও জানান তিনি।

আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, 'রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনকারী বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কেনেডি পরিবারের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।'

১৯৭১ সালে নিক্সন প্রশাসনের বিরোধিতা করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দিয়েছিলেন অ্যাডওয়ার্ড কেনেডি। 

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি জুনিয়রসহ তার পরিবারের ৫ সদস্য- স্ত্রী ডক্টর ক্যাথরিন 'কিকি' কেনেডি, মেয়ে ডা. কেলি কেনেডি, তার ছেলে টেডি কেনেডি, ভাগ্নি গ্রেস কেনেডি অ্যালেন ও ভাগ্নে ম্যাক্স অ্যালেন ২৯ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবেন।

পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী যখন ৯ মাসের যুদ্ধে বাংলাদেশের লাখ লাখ বাঙালিকে হত্যা করছিল তখন নিক্সন ও কিসিঞ্জার পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। তৎকালীন সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি ভারতে বাংলাদেশি শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করেন।

তিনি ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সফর করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একই স্থানে একটি বটগাছ রোপণ করেন; যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার একটি বটগাছ উপড়ে ফেলেছিল। ওই জায়গা থেকে ছাত্ররা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের বিক্ষোভ শুরু করেছিল। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাই অ্যাডওয়ার্ড কেনেডি প্রথম আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব যিনি যুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

কেনেডি জুনিয়র তার বাবার স্মৃতিচারণ করেন। যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং রক্তপাতের গল্প শুধু তার পরিবারের সদস্যদের কাছেই নয়, বিশ্বকেও বলেছিলেন।

কেনেডি জুনিয়র আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বটগাছটি পরিদর্শন করেন।

শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের সদস্যদের উপস্থিতিতে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী… দাঁড়িয়ে থাকা এই বটবৃক্ষের মতো দীর্ঘস্থায়ী।'

একজন রাজনীতিবিদ এবং মানবাধিকার কর্মী অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি জুনিয়র বলেন, যে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের জন্য বাংলাদেশ রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করেছে তা অব্যাহত রাখা উচিত।'

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ সফর করতে পেরে আমি গর্বিত।'

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিক্সন প্রশাসন ইসলামাবাদকে সমর্থন করলেও আমেরিকার জনগণ বাংলাদেশকে সমর্থন করেছিল। ঢাকায় মার্কিন কনসাল জেনারেলও ব্যক্তিগতভাবে এবং নীরবে সমর্থন করেছিলেন এবং বাঙালিদের বিরুদ্ধে বর্বরতার বিষয়ে টেলিগ্রাম লিখেছিলেন।

তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র জনগণের স্বাধীনভাবে কথা বলা এবং কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করাকে সমর্থন করে।' 

এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

Comments

The Daily Star  | English
tax collection target for IMF loan

Talks with IMF: Consensus likely on exchange rate, revenue issues

The fourth tranche of the instalment was deferred due to disagreements and now talks are going on to release two tranches at once.

10h ago