এক সেতুতে সুনামগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব কমলো ৫৫ কিমি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে কুশিয়ারার নদীর ওপর সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম ‘রাণীগঞ্জ সেতু’র উদ্বোধন হবে আজ। এর মাধ্যমে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওড়বেষ্টিত জেলা সুনামগঞ্জের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক দূরত্ব কমছে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার।
কুশিয়ারা সেতু
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে কুশিয়ারার নদীর ওপর সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম রাণীগঞ্জ সেতু। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে কুশিয়ারার নদীর ওপর সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম 'রাণীগঞ্জ সেতু'র উদ্বোধন হবে আজ। এর মাধ্যমে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওড়বেষ্টিত জেলা সুনামগঞ্জের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক দূরত্ব কমছে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার।

আজ সোমবার সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৭০২ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কয়েক যুগ অপেক্ষার শেষে সেতুটির উদ্বোধনকে ঘিরে ভাটির জেলার মানুষ আনন্দিত।

সুনামগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার সড়ক দূরত্ব ২৯৬ কিলোমিটার। সিলেট জেলা সদর হয়ে ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়ক ধরে মৌলভীবাজার জেলার কিছু অংশ ছুঁয়ে হবিগঞ্জ জেলা হয়ে যেতে হয়।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় এ সেতুটি নির্মাণের ফলে সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকা যেতে আর সিলেট ঘুরতে হবে না। সুনামগঞ্জ সদর থেকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা হয়ে জগন্নাথপুরে এই সেতুর ওপর দিয়ে হবিগঞ্জের আউশকান্দি হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ধরে সরাসরি ঢাকা যাওয়া যাবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সালে এ সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হলেও, করোনা মহামারির কারণে বিলম্বিত হয়। প্রায় ১৫৫ কোটি টাকায় সেতুটি নির্মাণ করেছে এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড কোম্পানি।

কুশিয়ারা সেতু
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কুশিয়ারার নদীর ওপর রাণীগঞ্জ সেতু। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

সেতুটিতে ১৫ স্প্যান ও ১২ পিলার আছে। এ সেতুটির আগে সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম সেতু ছিল সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদীর ওপর ধলাই সেতু। সেতুটি ২০০৬ সালে উদ্বোধন হয়েছিল।

সুনামগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ।'

সেতুটির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে রাণীগঞ্জে আনন্দের আমেজ বইছে বলে জানিয়েছেন রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য টিপু সুলতান।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই সেতুর উদ্বোধন আমাদের জন্য খুশির খবর। এত যুগ অপেক্ষার পর অবশেষে আমাদের চলাচলের সুবিধা হলো। দীর্ঘদিন নৌকায় কুশিয়ারা পার হয়ে চলাচল করতে হয়েছে। এখন আর সেই কষ্ট হবে না।'

সেতুটির উদ্বোধনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ সেতুর উদ্বোধন অবশ্যই সুনামগঞ্জের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও আনন্দের সংবাদ।'

'রাণীগঞ্জ সেতুর উদ্বোধনের মাধ্যমে সুনামগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব যেমন কমল তেমনি জেলার সঙ্গে প্রথম বিকল্প সড়ক যোগাযোগও স্থাপন হলো। এ সেতু নির্মাণে অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীকে ধন্যবাদ,' যোগ করেন তিনি।

এ সেতুর সুফল পুরোপুরি ভোগ করতে সংযোগ সড়কে সংস্কার প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'বড় আকারের ও ভারী যানবাহন চলাচলের সুবিধার জন্য শান্তিগঞ্জ থেকে জগন্নাথপুর অংশে ২টি বেইলি সেতু আছে। এগুলো সরিয়ে নতুন সেতু নির্মাণ করতে হবে।'

'এছাড়াও, রাণীগঞ্জ থেকে আউশকান্দি সড়কও প্রশস্ত করা প্রয়োজন। আশা করি, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত উদ্যোগ নেবে।'

Comments