সাভারে ৪ পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় অবস্থিত ডার্ড গ্রুপের ৪টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
সাভার
ছবি: স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় অবস্থিত ডার্ড গ্রুপের ৪টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

আজ শনিবার সকালে কারখানাগুলোর সামনে নোটিশ টানিয়ে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

কারখানাগুলো হলো দীপ্ত এপারেলস লিমিটেড, দীপ্ত গার্মেন্টস লিমিটেড, ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড ও ডার্ড ওয়াশিং প্লান্ট লিমিটেড।

বন্ধ ঘোষিত কারখানাগুলোর নাম উল্লেখ করে কোম্পানির উপ-মহাব্যবস্থাপকের (প্রশাসন) সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও কারণবশত কারখানার উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১৩ অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করছে। এটি ৩ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। কারখানা খোলার তারিখ পরে নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।

ডার্ড গ্রুপের সাভার জোনের সিকিউরিটি ইন্সপেক্টর মো. আসাদ জানিয়েছেন, ৪টি কারখানার মধ্যে শুধু দীপ্ত এপারেলস লিমিটেডেই প্রায় ৭ হাজার কর্মী আছেন। বাকি ৩টি কারখানা মিলিয়ে শ্রমিক সংখ্যা ৩ হাজারের মতো।

সব মিলিয়ে ৪টি কারখানায় মোট ১০ হাজারের মত কর্মী আছেন বলে জানান তিনি।

শ্রমিকরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের বকেয়া বেতন, করোনাকালীন কিছু পাওনা, ছুটির টাকাসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এ ছাড়া কিছুদিন আগে প্রতিষ্ঠানটির স্টাফদের (সাধারণ শ্রমিকদের তুলনায় কিছুটা উচ্চপদে কর্মরত কর্মী) ২ মাসের বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে কর্মবিরতি পালনের পর কর্তৃপক্ষ ১ মাসের বকেয়া পরিশোধ করে।

বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় শুক্রবার দীপ্ত এপারেলস লিমিটেডের ওই কর্মীরা আবারও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে শুক্রবার রাত ১২টার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক কর্মীর মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে এবং সকালে কারখানার গেটে বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দেওয়া হয়।

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সম্পাদক মো. কবির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কারখানা কর্তৃপক্ষ আজ সকালে কারখানাগুলোর গেটে নোটিশ টানিয়ে কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু কোন প্রেক্ষাপটে বা কী কারণে আসলে কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তা আমরা পরিষ্কার নই। প্রতিটি কারখানার শ্রমিকদেরই কর্তৃপক্ষের কাছে বকেয়া পাওনা রয়েছে।'

'সকালে কারখানাগুলোর কর্মীরা কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার গেটে বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। পরে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারা নিজ নিজ বাসায় ফিরে যান', বলেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে দীপ্ত এপারেলস লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. মামুন বলেন, 'মালামাল স্বল্পতা, কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিসহ কয়েকটি কারণে কারখানাগুলোতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এর বেশি কিছু আর আমি বলতে পারছি না।'

যোগাযোগ করলে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ ১ এর পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কারখানা কর্তৃপক্ষ কর্মীদের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছে না। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, তারা কর্মবিরতিও পালন করেছেন। এ কারণে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে।'

কারখানা বন্ধ ঘোষণা নিয়ে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

Comments