একাত্তরের নৃশংসতাকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান

বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এসময় তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শহিদ বুদ্ধিজীবী ও বীর শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
হাইকমিশনার বলেন, '১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা বাংলাদেশে শত শত বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করে বাঙালিকে নেতৃত্বহীন ও বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়া জাতিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন ৭১-এ বুদ্ধিজীবী হত্যা ও গণহত্যা সম্পর্কে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মকে আরও সচেতন করার জন্য বিশেষ সেমিনারসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আগামী বছর বুদ্ধিজীবী হত্যা ও গণহত্যা সম্পর্কে একটি বিশেষ প্রকাশনারও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।'
হাইকমিশনার ব্রিটিশ ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি লেখক ও গবেষকদের গণহত্যা বিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নালে বাঙালি গণহত্যার ওপর লেখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন সম্ভাব্য সব সহযোগিতা প্রদান করবে।'
অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ভার্চুয়্যালি যুক্ত হয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার কন্যা ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, শহিদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীর ও শহিদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের কন্যা শমি কায়সার তাদের পিতার স্মৃতিচারণ করেন এবং শহিদ বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ ৭১ সালের গণহত্যায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব ইন্ডিয়ার প্যাট্রন লর্ড রামি রেঞ্জার, লন্ডন ইউনিভার্সিটির সোয়াসের দক্ষিণ এশিয়া ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. সংযুক্তা ঘোষ, বাংলাদেশের 'ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার' জুলিয়ান ফ্রান্সিস, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট সদস্য সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, যুক্তরাজ্যে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাবেক সভাপতি সৈয়দ এনাম ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার কনসুলার মো. মঈন খান।
শহিদ বুদ্ধিজীবীদের উৎসর্গ করে একটি কবিতা আবৃত্তি করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অভিনেত্রী শম্পা রেজা।
Comments