ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা

ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঝিনাইদহ সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা করা হয়েছে।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঝিনাইদহ সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা করা হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে অভিযুক্তরা হলেন— ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, পৌরসভার সাবেক সচিব আজমল হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চান ও হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমান।

বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করে ঝিনাইদহ দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহিদ কামাল জানান, চেক জালিয়াতির মাধ্যমে অভিযুক্তরা পৌরসভার ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় হেড অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক গত ২২ জানুয়ারি দুদকের রেজিস্ট্রারে নথিভুক্ত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে দুর্নীতির দায়ে পৌরসভার সাবেক সচিব আজমল হোসেন ও হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমানকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, ঝিনাইদহ পৌরসভার ফান্ড তছরুপ ও চেক জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজমল ও মকলেচুরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর শাখা-১ এর উপ-সচিব আব্দুর রহমান এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন।

এতে আরও বলা হয়, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা আজমল হোসেন বিভিন্ন সময় হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমানের সহায়তায় ৩৮টি চেকের মাধ্যমে ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। বর্ণিত অভিযোগের বিষয়ে হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমান দোষ স্বীকার করে সম্প্রতি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত দেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চেক জালিয়াতির ঘটনাটি তদন্ত করেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক দপ্তরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু চেক জালিয়াতির বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ২০২১ সালের ২৭ জুন তার দপ্তরের ২৯৬ নম্বর স্মারকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব (পৌর-১ শাখা) বরাবর চিঠি দেন। সেই চিঠির আলোকে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি করে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশনা দেয়। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক দপ্তরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক প্রশাসক ইয়ারুল ইসলাম চেক জালিয়াতির ঘটনাটি তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠান। এদিকে ঝিনাইদহ পৌরসভার নতুন মেয়র দায়িত্ব গ্রহণের আগেই চেক জালিয়াতির ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা জমা হয় পৌরসভার একটি অ্যাকাউন্টে। হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমান এই টাকা সোনালী ব্যাংকের ২৪০৭০০৪০০০৩১৬ নম্বর অ্যাকাউন্টে জমা দিলেও ঝিনাইদহ পৌরসভার অ্যাকাউন্টস সেকশনে তার কোনো ডকুমেন্ট ছিল না। নতুন মেয়র শাহরিয়ার জাহেদী হিজল দায়িত্ব গ্রহণের পর বিষয়টি জানাজানি হলেও ধামাচাপা পড়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর নম্বরে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। দুদক আমার কোনো বক্তব্য এ পর্যন্ত নেয়নি।'

Comments

The Daily Star  | English

The psychological costs of an uprising

The systemic issues make even the admission of one’s struggles a minefield

8h ago