বিদেশিদের কাছে তদবির করে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই: প্রধানমন্ত্রী

সামরিক শাসকদের গড়া দলগুলোকে বয়কট করার এবং তাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
পদ্মায় রেল সংযোগ উদ্বোধন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশিদের কাছে তদবির করে ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামরিক শাসকদের গড়া দলগুলোকে বয়কট করার এবং তাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মনে হচ্ছে বাইরে থেকে কেউ এসে একবারে দোলনায় করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে, সে স্বপ্নে তারা বিভোর। হয়তো এক সময় সেটা করতে পেরেছে দালালি করে। এখন আর সেই দালালি করে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই, পারবে না।'

আজ বুধবার বিকেলে 'মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩' উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকেই নজর দিয়েছি। বাংলাদেশের উন্নয়ন করবার জন্যই কাজ করেছি। তারা যা করেছে (বিএনপি) তার কিছুই তাদের সঙ্গে করতে যাইনি। তারপরেও দেখি দেশে-বিদেশে গিয়ে হাহাকার করে বেড়ায়, কেঁদে বেড়ায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন এবং দেশের জনগণ নিজের দেশ সম্পর্কে এখন অনেক জানে। ইতিহাস সম্পর্কে জানে এবং আমাদের লক্ষ্য কী সেটাও তারা জানে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন তারা (বিএনপি) আন্দোলন করবে, সরকার উৎখাত করবে, অনেক কথাই বলে যাচ্ছে। অনেক আয়োজনও করেছে। আর আমাদের দেশে কিছু মানুষ থাকে তারা 'অসময়ে নীরব এবং সময়ে সরব' হয়ে ওঠে।

তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি অনেক হম্বিতম্বি করেছে, মিটিং মিছিল করেছে। সরকার বাধা দেয়নি। কিন্তু বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ তখন একটা মিছিল, মিটিংও করতে পারত না, সব জায়গায় বাধা এবং নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে। মেয়েদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে, কাপড়-চোপড় পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলেছে। 

একদিকে ছাত্রদল আর একদিকে পুলিশ বাহিনীর অকথ্য নির্যাতনের কথা ভুলবার নয় উল্লেখ করে তারপরেও তার দল কোনো ধরনের প্রতিশোধ নিতে যায়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনের পর আরও টানা দুবার আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে জনগণের জন্য যে কাজ করেছে সেটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। কেননা আজকে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে গেছে। শুধু রাজধানী ঢাকা নয় সমগ্র দেশের উন্নয়নই তার সরকার করেছে। ভূমিহীন-গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়ার ও তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা, খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সেবাসহ মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার মাধ্যমে সামগ্রিক আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়েছে এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণা অনুযায়ী রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। আর সেটাই তারা (বিএনপি) ধ্বংস করতে চাইছে।

তিনি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি-জামাতের তথাকথিত আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাসের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুন দিয়ে পোড়ানো, বিএনপি-জামাতের এই অগ্নি সন্ত্রাস মানুষ কীভাবে ভুলবে।

তিনি বলেন, এ ধরনের দৃষ্টান্ত কেবল বিএনপিই দেখাতে পারে এবং তারা সেটা দেখিয়েছে। চলন্ত গাড়িতে আগুন, বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন, চলন্ত সিএনজিতে আগুন-তারা আগুন নিয়ে খেলেছিল। একবারও দেশের মানুষের কথা ভেবে দেখেনি।

অগ্নিসন্ত্রাসীদের সম্পর্কে দেশের মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বলব ওদের অপকর্মের কথাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।

আলোচনা সভায় প্রারম্ভিক বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ, তথ্য এবং গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দলের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জি এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।

দলের কেন্দ্রীয় সদস্য কবি তারিক সুজাত 'ভাষার জন্য ভালবাসা' শীর্ষক স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।

আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম।

সভার শুরুতে ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা এবং বঙ্গমাতাসহ '৭৫ এর ১৫ আগস্টের সকল শহীদ, জাতীয় চারনেতা এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ প্রগতিশীল গণআন্দোলনের সকল শহীদ স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago