সংবাদ প্রকাশের নামে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপতৎপরতা হয়েছে: ঢাবি শিক্ষক সমিতি

‘করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের সংকট মোকাবেলা করে যে মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সংবাদ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, সেই মুহূর্তেদেশের একটি জাতীয় দৈনিকে সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’

'একটি দৈনিক পত্রিকায় মহান স্বাধীনতা দিবসে সংবাদ প্রকাশের নামে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপতৎপরতা পরিচালিত হয়েছে' বলে মনে করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

আজ শুক্রবার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার সই করা এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। বিবৃতিতে এ ঘটনায় ওই সংবাদপত্রসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়।

এতে বলা হয়, 'আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে দেশের একটি দৈনিক পত্রিকায় মহান স্বাধীনতা দিবসে সংবাদ প্রকাশের নামে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা পরিচালিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এ ধরনের অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে। প্রতিবেদনটিতে মূলত একজন শিশুর ছবির নিচে ক্যাপশনের পরিবর্তে একজন দিনমজুরের বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে, যে বক্তব্যে দেশের স্বাধীনতাকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। এছাড়া, ক্যাপশনে একজন দিনমজুরের বক্তব্য হিসেবে উক্ত মন্তব্য প্রকাশ করা হলেও ছবিতে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দেখা যাচ্ছে না।'

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'অন্য একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ওই শিশুকে তার দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে প্রলুব্ধ করে ছবিটি তোলা হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে একাধিক পক্ষ থাকলে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের বক্তব্য না নেওয়া, অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া এবং অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির ছবি তোলা কিংবা তার বক্তব্য ধারণ করা সংবাদপত্রের নীতিমালা পরিপন্থি। একজনের ছবির সঙ্গে আরেকজনের উদ্ধৃতি প্রকাশ, ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর ছবি ও বক্তব্য প্রকাশ পাঠকের সাথে প্রতারণার শামিল। অথচ আলোচিত সংবাদটি প্রকাশের ক্ষেত্রে এ সকল রীতি-নীতি ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।'

'এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করায় নির্দিষ্ট কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমসহ কোনো কোনো মহল প্রচার করছে যে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সংবাদ প্রকাশ করায় সরকার গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক  ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। যদিও বাস্তবতা হলো, প্রকৃতপক্ষে অসৎ উদ্দেশে উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে একজন শিশুকে সংবাদের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ঘটনা মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিপন্ন করার উদ্দেশে বাসন্তী নামের একজনকে জাল পরিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। উক্ত বাসন্তীকে যে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সাজানো হয়েছিল তা পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয়েছে।'

বিবৃতিতে শিক্ষক সমিতি বলেছে, 'জাতির পিতার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬-২০০১ সালে এক মেয়াদ এবং ২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশকে তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে উন্নত দেশগুলোও যখন নাস্তানাবুদ অবস্থার সম্মুখীন, পাশ্ববর্তী অনেক দেশ যখন দেউলিয়া অবস্থায় পতিত, এমন পরিস্থিতিতেও শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের সংকট মোকাবেলা করে যে মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সংবাদ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, সেই মুহূর্তেদেশের একটি জাতীয় দৈনিকে সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।'

স্বাধীনতা দিবসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার পাশাপাশি একই মামলায় প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
interim government's dialogue with BNP

Reforms ahead of polls: BNP waits with cautious optimism

Having weathered a very difficult 15 years as de facto opposition, the BNP now wants only the essential reforms done to ensure free and fair polls.

14h ago