‘ক্লাইমেট চেঞ্জের কারণে শুধু ঢাকা না, ইউরোপে-টোকিওতেও বৃষ্টিতে বন্যা হচ্ছে’
বৃষ্টিতে ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা নতুন কিছু না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
মাত্র কয়েকঘণ্টা বৃষ্টিতে ঢাকা শহর ডুবে যাওয়া ও রাজধানীবাসীর দুর্ভোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান বলেন, 'এটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ঢাকা শহরে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা নতুন কিছু না। আমি বলবো, এটা আমাদের অতীতের একটা সমস্যা যেটা এখনো চলে আসছে। ড্রেনেজ সমস্যা কীভাবে সমাধান করতে পারি সেটা নিয়েও কাজ চলছে।'
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অতিরিক্ত বৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'শহরের যে পরিকল্পনা করা হয়, একটা সীমা নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়। আমি ধরে নিলাম, এইটুকু বৃষ্টি হবে। নর্মাল যেটা বৃষ্টি তা হলে কিন্তু ড্রেনেজ সমস্যা হচ্ছে না। অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে এই সমস্যা হচ্ছে।
আমরা এখন পৃথিবীতে সব জায়গায় এটা দেখছি। শুধু ঢাকা শহর না, বড় বড় শহর—ইউরোপে দেখেন, টোকিও দেখেন, চীনে দেখেন। এখন যে ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে—লিবিয়াতে যা হলো, শুধু বৃষ্টির কারণে বন্যা হলো, বন্যায় কত লোক মারা গেল। আমি যতই পরিকল্পনা করি, আমি কিন্তু এক্সট্রিমের জন্য পরিকল্পনা করতে পারব না। ক্লাইমেট চেঞ্জ এখন একটি সিরিয়াস বিষয়। গতকাল জাতিসংঘে সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর, যিনি ক্লাইমেট নিয়ে অনেক কাজ করেন, উনি বললেন, "যেসব দেশ, বিশেষ করে যারা উন্নত দেশ, তারা ক্লাইমেট চেঞ্জের প্রভাব সেভাবে বিশ্বাস করে নাই। এখন এটা দৃশ্যমান হয়ে গেছে যে ক্লাইমেটের চেঞ্জের প্রভাব আছে। তবু ঢাকা শহরে ড্রেনেজের কাজ করা হচ্ছে।'
ঢাকার অপরিকল্পিত নগরায়নও এক্ষেত্রে দায়ী বলে জানান তিনি। সালমান এফ রহমান বলেন, 'শহরে আনপ্ল্যানড গ্রোথ যদি হয়—ধানমন্ডি, গুলশান… আমরা ছোটবেলায় যখন ধানমন্ডিতে থাকতাম, তখন সব দোতলা বিল্ডিং ছিল। ৩ তলা বিল্ডিং দেখলে ভাবতাম কী বিরাট একটা জিনিস হয়ে গেছে। বিল্ডিং ছিল এক তলা, দো-তলা। ওখানে রাস্তা সেভাবে প্ল্যান করা হয়েছে, ড্রেনেজ সেভাবে প্ল্যান করা হয়েছে। যেটা দো-তলা বিল্ডিং ছিল এখন সেটা ১৪ তলা হয়ে গেছে। এখান থেকে আমাদের শিখতে হবে। আমাদের উপজেলাতে যেন এই জিনিস না শুরু হয়।
'উপজেলাতে আমরা নগরায়ন করছি। এখন ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে গেছে। এখন উন্নয়নের কারণে আমরা গ্রামে থাকতে চাই, শহরে আসতে চাই না। ওখানে ক্রয়ক্ষমতা ভালো। আমি সেদিন আমার দোহার এলাকাতে দেখলাম একটা ১৪ তলা বিল্ডিং হলো। আমি ইউএনওকে জিজ্ঞেস করলাম যে, কার থেকে পারমিশন নিল? উনি বললেন, এখানে পারমিশন দেওয়ার কোনো নিয়মই নাই। নিয়ম কাগজ কলমেই আছে। এভাবে আনপ্ল্যানড বিল্ডিং হলে ঢাকা শহরে যেসব সমস্যা দেখা যাচ্ছে ওখানেও এসব সমস্যা হবে। এজন্য খুবই প্রয়োজন পরিকল্পনা করা,' বলেন তিনি।
Comments