'মিয়ানমারের চলমান সংঘাত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সংকট তৈরি করছে'

দেশি-বিদেশি এনজিও এবং দাতা সংস্থা ও সহযোগিতাকারী দেশগুলোর কাজের মূল লক্ষ্য হতে হবে রোহিঙ্গাদের কোনোভাবেই বাংলাদেশে পুনর্বাসন নয়, নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন। 
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ফাইল ছবি

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেছেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে বলা যায় মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হবে, সংকট আরও বাড়বে। এ মূহুর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল গড়ে তোলা।

দেশি-বিদেশি এনজিও এবং দাতা সংস্থা ও সহযোগিতাকারী দেশগুলোর কাজের মূল লক্ষ্য হতে হবে রোহিঙ্গাদের কোনোভাবেই বাংলাদেশে পুনর্বাসন নয়, নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন। 

আজ মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজারে আয়োজিত এক সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। 

মিজানুর রহমান জানান, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ এবং নোয়াখালীর ভাসানচরের আশ্রয় শিবিরগুলোতে ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করেছে। শিবিরগুলোতে বছরে ৩০ হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এবং বিদেশি এনজিওগুলোর রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার সার্বিক উন্নয়নেও অবশ্যই কাজ করতে হবে। রোহিঙ্গা সংকট এবং দেশ-বিদেশের এনজিওদের কাজকর্ম নিয়ে মাঠ পর্যায়ে আরও গবেষণা করা দরকার।  

কক্সবাজারের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পালস্ শহরের একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ওই সংলাপ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। পালস্ এর নির্বাহী পরিচালক আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকার সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের এনজিও প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, গণমাধ্যম কর্মী, নারী সমাজের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নেতৃস্থানীয় প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

এনজিও প্রতিনিধিরা বলেন, যেসব দেশি ও বিদেশি উন্নয়ন সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করে তাদের বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে গাইডলাইন দেওয়া আছে মোট বাজেটের শতকরা ২৫ ভাগ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কল্যাণে ব্যয় করার। কিন্তু সরকারের সেই গাইডলাইন আদতেই বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, হলেও শতকরা কত ভাগ হচ্ছে এসব তথ্য কেউ জানে না, জানার মতো সুযোগও নেই। এ ব্যাপারগুলোর কঠোর তদরকি ও নজরদারি করা প্রয়োজন। 

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, এনজিও এর বিষয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা ইতিবাচক নয়। প্রতিনিধিরা সব এনজিওতে গণতন্ত্রের অবাধ চর্চা, জনবল নিয়োগে মেধাও, দক্ষতা এবং যোগ্যতার মূল্যায়ন, কাজের সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং সক্ষমতা বাড়ানোর উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট নাট্যজন, সংস্কৃতি ও উন্নয়নকর্মী শিশির দত্ত, গণমাধ্যমকর্মী মুহাম্মদ আলী জিন্নাত ও এইচএম এরশাদ, মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার, স্কাসের চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, পালস,কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কলিম, উন্নয়নকর্মী মাহাদীসহ আরও অনেকে। 

 

Comments

The Daily Star  | English
Chief Adviser Muhammad Yunus

Chief Adviser Yunus's UNGA trip a critical turning point

Now is the best chance for Bangladesh to strengthen international cooperation.

8h ago