আসামে নাগরিকপঞ্জির জেরে আরও ১ বাঙালির আত্মহত্যা
ভারতের আসাম রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে বের করতে চলমান নাগরিকপঞ্জিতে নাম না উঠায় রাজ্যটিতে ফের ঘটলো আত্মহত্যার ঘটনা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, বৈধ ভারতীয় নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়ায় একে একে বেশ কয়েকজন ভারতীয় বাঙালির আত্মহত্যার ঘটনা রাজ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
গতকাল (২৮ অক্টোবর) খবরে বলা হয়, এনআরসি হিসেবে পরিচিত নাগরিকপঞ্জির দ্বিতীয় দফায় নাম না উঠায় আসামের ওদালগুড়ি জেলার হরিশিঙা থানার ঘাগ্রা উলুবাড়ি গ্রামের দীপক দেবনাথ (৪৯) নামের এক বাঙালি আত্মহত্যা করেছেন।
দীপকের ১৯৭১ সালের লিগ্যাসি তথ্য রয়েছে। সেই হিসেবে এনআরসির প্রথম তালিকায় তার নাম উঠে স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু, দ্বিতীয় দফায় তার নাম বাদ পড়ে যায়। এরপর তিনি এনআরসি কেন্দ্রে যোগাযোগ করলে তাকে ‘সন্দেহভাজন’ নাগরিক বলে আখ্যা দেওয়া হয়। বর্ডার পুলিশ তাকে ‘অবৈধ’ বলে নোটিশ পাঠাতে থাকে। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হন এই ব্যক্তি।
দীপকের মৃত্যুতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাজ্যটির বাঙালি সংগঠনগুলো। মৃতের দেহ চাটাইয়ে মুড়িয়ে রাস্তায় বসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংগঠনের সদস্যরা। রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তুলেছেন ‘মুর্দাবাদ’ ধ্বনি। এরকম চলতে থাকলে রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে উঠবে বলেও দিয়েছেন হুশিয়ারি।
উল্লেখ্য, ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসে আসামে বসবাস করা নাগরিকদের চিহ্নিত করে তাদেরকে ‘রাজ্যছাড়া’ করার দাবি স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের। তাদের ধারণা, প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকেও বাঙালিরা গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে আসাম রাজ্যে। তাই বহিরাগতদের খুঁজে বের করতে রাজ্যজুড়ে চলছে নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি। কয়েক প্রজন্ম থেকে আসামে বসবাস করার পরও অনেক রাজ্যবাসীর নাম উঠেনি সেই তালিকায়। তাই ক্ষোভে-অপমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন অনেকে। সেই আত্মঘাতীদের বেশিরভাগই ভারতীয় বাঙালি। এমন পরিস্থিতিতে সর্বশেষ প্রকাশ পেলো দীপকের আত্মঘাতী হওয়ার খবর।
Comments