রেকর্ড লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরু বাংলাদেশের
৩২১ রানের বিশাল লক্ষ্য সামনে। যা করতে হলে নতুন রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে। কারণ এর আগে ২১৫ রানের বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই দলটির। তবে শুরুটা মন্দ হয়নি টাইগারদের। তৃতীয় দিন শেষে বিনা উইকেটে ২৬ রান করেছে তারা।
শুরু থেকেই দারুণ দায়িত্বশীল ব্যাটিং করছেন দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও ইমরুল কায়েস। লিটন ১৪ এবংইমরুল ১২ রান নিয়ে আগামীকাল আবার ব্যাটিং শুরু করবেন। তৃতীয় দিন শেষে ২৯৫ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।
দিনের খেলার আরও প্রায় ২৭ ওভার বাকি থাকলেও আলোক স্বল্পতার জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায় মাঝ পথে। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতিত বদল না হলে দিনের খেলার ইতি টানেন আম্পায়াররা। ঘাটতি পোষাতে চতুর্থ দিনে আধা ঘণ্টা আগে শুরু হবে ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (তৃতীয় দিন শেষে)
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ২৮২
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস: ১৮১ (ওভার ৬৫.৩) (মাসাকাদজা ৪৮*, চারি ৪, টেইলর ২৪, উইলিয়ামস ২০, রাজা ২৫, মুর ০, চাকাবা ২০, ওয়েলিংটন ১৭, মাভুটা ৬, জার্ভিস ১*, চাতারা ৮; তাইজুল ৫/৬২, অপু ২/২৭, আবু জায়েদ ০/২৫, মিরাজ ৩/৪৮, মাহমুদউল্লাহ ০/৭, মুমিনুল ০/৪)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৪৩
দ্বিতীয় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩২১) ১০.১ ওভারে ২৬/০ (লিটন ব্যাটিং ১৩, ইমরুল ব্যাটিং ১২; জার্ভিস ০/১১, চাতারা ০/১৪)।
বাংলাদেশকে ৩২১ রানের লক্ষ্য দিয়েছে জিম্বাবুয়ে
সিলেট টেস্টে জয় পেতে হলে নিজেদের নতুন রেকর্ডই গড়তে হবে বাংলাদেশকে। কারণ ৩২১ রানের বড় লক্ষ্যই ছুড়ে দিয়েছে সফরকারী জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ২১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে পেরেছিল টাইগাররা। তাই বাংলাদেশের সামনে তাই বড় চ্যালেঞ্জ।
তবে লক্ষ্যটা আরও বড় হতে পারতো। তাইজুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৮১ রানে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংস বেঁধে ফেলতে পেরেছে টাইগাররা। ৬২ রানের খরচায় পেয়েছেন ৫টি উইকেটে। প্রথম ইনিংসে পেয়েছিলেন ৬টি উইকেট। প্রথমবারের মতো ১০ উইকেট নেওয়ার স্বাদ পেয়েছেন এ বাঁহাতি স্পিনার।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রানের ইনিংস খেলেছেন অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। এছাড়া সিকান্দার রাজা ২৫, ব্রান্ডন টেইলর ২৪ রান করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ২৮২
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস: ১৮১/১০ (ওভার ৬৫.৩) (মাসাকাদজা ৪৮*, চারি ৪, টেইলর ২৪, উইলিয়ামস ২০, রাজা ২৫, মুর ০, চাকাবা ২০, ওয়েলিংটন ১৭, মাভুটা ৬, জার্ভিস ১*, চাতারা ৮; তাইজুল ৫/৬২, অপু ২/২৭, আবু জায়েদ ০/২৫, মিরাজ ৩/৪৮, মাহমুদউল্লাহ ০/৭, মুমিনুল ০/৪)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৪৩
বাংলাদেশের লক্ষ্য ৩২১
অপুর জোড়া উইকেট
৬৫তম ওভারে বল হাতে নিয়েই জোড়া উইকেট পেয়েছেন ন আজমুল ইসলাম অপু। রেগিস চাকাভাকে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচে পরিণত করার পর ব্রান্ডন মাভুটাকে ফিরিয়েছেন তিনি। তাকে আরিফুল হকের তালুবন্দি করেন এ স্পিনার। চাকাভা ২০ ও মাভুটা ৬ রান করে আউট হয়েছেন।
চা বিরতির পর জুটি ভাঙলেন মিরাজ
১৩০ রানে জিম্বাবুয়ের ৬ উইকেট তুলে নেওয়ার পর সপ্তম উইকেটে ভোগাচ্ছিল বাংলাদেশকে। তবে চা বিরতির পর প্রথম ওভারেই এ জুটি ভেঙেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বল রক্ষণাত্মক ঢঙে খেলতে চেয়েছিলেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। মিস করায় বল আঘাত হানে প্যাডে। ফলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পরে সাজঘরে ফেরেন এ ব্যাটসম্যান। ৬০ বলে ১৭ রান করেছেন তিনি।
৬৩ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৬৫ রান। ১৯ রান নিয়ে ব্যাট করছেন রেগিস চাকাভা। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন ব্রান্ডন মাভুটা।
টাইগারদের ভোগাচ্ছে ওয়েলিংটন-চাকাভা জুটি
তাইজুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরেছিল বাংলাদেশ। ১৩০ রানেই প্রথম সারির ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু এরপর ওয়েলিন্টন মাসাকাদজার সঙ্গে রাগিস চাকাভার দারুণ এক জুটি ভোগাচ্ছে বাংলাদেশকে। এর মধ্যেই স্কোরবোর্ডে ৩৫ রান যোগ করেছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ৬২ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৫ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে।
৫৫ বলে ১৭ রান করে উইকেটে আছেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। আর চাকাভা ৫৯ বলে ১৯ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। জিম্বাবুয়ের লিড ছাড়িয়েছে ৩০৪ রানে।
রাজাকে ফিরিয়ে তাইজুলের প্রথম ১০ উইকেট
হ্যাটট্রিকের আশায় ওভারটা শুরু করেছিলেন তাইজুল ইসলাম। হয়নি। ফিরিয়ে দিয়েছেন সিকান্দার রাজা। তবে তিনবল পর তাকে শিকার করেছেন এ বাঁহাতি স্পিনার। দারুণ এক বলে রাজাকে ফিরিয়েছেন তিনি। শুরু থেকেই দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলতে থাকা রাজাকে বোল্ড করেন এ স্পিনার। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো এক টেস্টে ১০ উইকেট নেওয়ার স্বাদ পেলেন তাইজুল ইসলাম। তৃতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে এ কীর্তি গড়লেন তাইজুল।
৩০ বলে ২৫ রান করেছেন রাজা। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেছেন তিনি। ২ রান নিয়ে ব্যাট করছেন রেগিস চাকাভা। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। ৪৫ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৩৪ রান। লিড ছাড়িয়েছে ২৭২ রানে।
তাইজুলের তৃতীয় শিকার মুর
টানা দুই বলে দুটি শিকার করে বাংলাদেশকে খেলায় ফিরিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। শেন উইলিয়ামসকে আউট করার পরের বলেই ফেরালেন পিটার মুরকে। প্রথম ইনিংসে দারুণ ব্যাট করেছিলেন মুর। হার না মানা হাফসেঞ্চুরিতে দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দেওয়া এ ব্যাটসম্যান দ্বিতীয় ইনিংসে ফিরেছেন খালি হাতে। নিজের প্রথম বলেই সিলি পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন লিটন কুমার দাসের হাতে।
৪২ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১২১ রান। ১৭ রান নিয়ে ব্যাট করছেন সিকান্দার রাজা। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন রেগিস চাকাভা।
রিভার্স সুইপে আউট হলেন উইলিয়ামসও
রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে এনেছিলেন অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তার দেখানো পথেই হাঁটলেন শেন উইলিয়ামস। পার্থক্য শুধু মাসাকাদজা এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়লেও উইলিয়ামস হয়েছেন বোল্ড। তাইজুল ইসলামের বলে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৬৫ বলে ২০ রান করেছেন এ ব্যাটসম্যান।
মাসাকাদজাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন মিরাজ
শেন উইলিয়ামসের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েছেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। নিজেও এগিয়ে যাচ্ছিলেন হাফসেঞ্চুরির পথে। জুটির অর্ধশত পূরণের কিছুক্ষণ পরই মাসাকাদজাকে ফিরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। রিভার্স সুইপ করতে গেলে মিস করা বল আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার সাড়া দিলে সাজঘর মুখী হতে হয় এ ওপেনারকে।
আউট হওয়ার আগে ১০৪ বলে ৪৮ রান করেছেন মাসাকাদজা। ৭টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। শেন উইলিয়ামস উইকেটে আছেন ১৭ রান নিয়ে। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমেছেন সিকান্দার রাজা। ৩৭ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০২ রান।
উইলিয়ামস-মাসাকাদজা জুটিতে পঞ্চাশ
৪৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পর জিম্বাবুয়ের হাল ধরেছেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও শেন উইলিয়ামস। এর মধ্যেই ৫০ রানের জুটি গড়েছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তাইজুল ইসলামের বলে দারুণ এক বাউন্ডারি মেরে এ জুটির পঞ্চাশ পূরণ করেন মাসাকাদজা। ১০৩ বলে আসে এ জুটির ফিফটি।
৩৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান করেছে জিম্বাবুয়ে। লিড ছাড়িয়েছে ২৪০ রানে। ৪৮ রানে ব্যাট করছেন মাসাকাদজা। উইলিয়ামস উইকেটে আছেন ১৭ রান নিয়ে।
জিম্বাবুয়ের দুই উইকেট তুলে লাঞ্চে বাংলাদেশ
দিনের শুরুতেই উইকেট পেতে পারতেন টাইগাররা। কিন্তু নাজমুল ইসলাম অপু মিস করেছিলেন ব্রায়ান চারির ক্যাচ। তবে বড় ক্ষতি করার আগে তাকে ফিরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর উইকেটে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকা টেইলরকে ফিরিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। সাফল্যের গল্প এইটুকুই।
এরপর প্রথম ইনিংসের দুই হাফসেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও শেন উইলিয়ামস জুটি বেঁধেছেন। এর মধ্যেই ৪৪ রান এসেছে এ দুই ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে। ৩৯ রানে ব্যাট করছেন মাসাকাদজা। উইলিয়ামস আছেন ১৬ রানে। ৩২ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৯১ রান। ২৩০ রানে এগিয়ে আছ এ সফরকারীরা।
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস: (তৃতীয় দিনের লাঞ্চ পর্যন্ত) ৩২ ওভারে ৯১/২ (মাসাকাদজা ব্যাটিং ৩৯ , চারি ৪, টেইলর ২৪, উইলিয়ামস ব্যাটিং ১৬; তাইজুল ১/২৪, অপু ০/১৩, আবু জায়েদ ০/২৫, মিরাজ ১/২০)।
ইমরুলের দারুণ ক্যাচে ফিরলেন টেইলর
উইকেটে নেমেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছিলেন ব্রান্ডন টেইলর। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করা এ ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ৪টি চার মারা এ খেলোয়াড় আরও একটি বাউন্ডারি মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন লংঅনে। তবে তাতে মূল অবদান ইমরুল কায়েসেরই। পেছন দিকে দৌড়ে গিয়ে দারুণ এক ক্যাচ ধরেছেন ইমরুল। আউট হওয়ার ২৫ বলে ২৪ রান করেছেন টেইলর।
১৯ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪৭ রান। ১৫ রান নিয়ে ব্যাট করছেন অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন শেন উইলিয়ামস।
চারিকে ফেরালেন মিরাজ
ব্যক্তিগত ১ রানে নাজমুল ইসলাম অপুর হাতে সহজ ক্যাচ তুলেও জীবন পেয়েছিলেন ব্রায়ান চারি। তবে খুব বেশি ক্ষতি করার আগেই তাকে ফিরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দারুণ বল সরাসরি বোল্ড করে দিয়েছেন এ ব্যাটসম্যানকে। আউট হওয়ার আগে ৪ রান করেছেন এ চারি। ১৩ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১ উইকেটে ২০ রান। ১১ রান নিয়ে ব্যাট করছেন অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন ব্রান্ডন টেইলর।
দ্বিতীয় দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ২৮২ (১১৭.৩ ওভার) (মাসাকাদজা ৫২, চারি ১৩, টেইলর ৬, উইলিয়ামস ৮৮, রাজা ১৯, মুর ৬৩*, চাকাবা ২৮, ওয়েলিংটন ৪, মাভুটা ৩, জার্ভিস ৪, চাতারা ০; জায়েদ ১/৬৮, তাইজুল ৬/১০৮, আরিফুল ০/৭, মিরাজ ০/৪৫, নাজমুল ২/৪৯, মাহমুদউল্লাহ ১/৩)।
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস: ১/০ (মাসাকাদজা ব্যাটিং ১, চারি ব্যাটিং ০; তাইজুল ০/১, নাজমুল ০/০)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৪৩ (৫১ ওভার) (লিটন ৯, ইমরুল ৫, মুমিনুল ১১, শান্ত ৫, মাহমুদউল্লাহ ০, মুশফিক ৩১, আরিফুল ৪১*, মিরাজ ২১, তাইজুল ৮, নাজমুল ৪, আবু জায়েদ ০; জার্ভিস ২/২৮, চাতারা ৩/১৯, মাভুটা ০/২৭, রাজা ৩/৩৫, ওয়েলিংটন ০/২১, উইলিয়ামস ১/৫ )।
Comments