সাগরিকার ‘ব্র্যাডম্যান’ তো মুমিনুলই
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আরেক নাম ‘সাগরিকার মাঠ’। এই মাঠে টেস্টে কোন ফিফটি নেই মুমিনুল হকের। ফিফটি থাকবে কি করে, এই নিয়ে যতবার এখানে পঞ্চাশ পেরিয়েছেন আর থামেননি তিন অঙ্কের আগে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নেমে এবার সেঞ্চুরি করলেন আরেকটি। টেস্টে মুমিনুলের এটি অষ্টম সেঞ্চুরি, সাগরিকায় তার ষষ্ঠ। এই মাঠে তার গড়টাও ছাড়িয়ে গেছে একশো। ব্র্যাডম্যানীয় গড়ই তো।
রোস্টন চেজকে স্লেশ করে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে ১৩৫ বলে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান মুমিনুল। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি আট সেঞ্চুরি আগে এককভাবে ছিল তামিম ইকবালের। এই সেঞ্চুরি করে সেখানে তার পাশে লেখালেন মুমিনুল।
চলতি বছরে মুমিনুলের এটি চতুর্থ সেঞ্চুরি। টেস্টে এই বছর তার সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করাতেও ভারতের বিরাট কোহলির সঙ্গে নাম উঠে গেছে মুমিনুলের।
এই বছরে জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই মাঠে জোড়া সেঞ্চুরি (১৭৬ ও ১০৫) করেছিলেন মুমিনুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ঢাকা টেস্টে করেন ১৬১ রান। এবার তার ব্যাট তিন অঙ্ক পেরিয়ে ছুটছে আরও বড় কিছুর দিকে।
বৃহস্পতিবার সকালে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই সৌম্য সরকারকে হারায় বাংলাদেশ। মুমিনুলকে তাই মাঠে নামতে হয় একদম শুরু থেকেই। চেনা পরিবেশ, প্রথম দিনের ব্যাটিং বান্ধব উইকেট পেয়ে ক্রমেই পাখনা মেলতে থাকেন এই বাঁহাতি। প্রথম ঘণ্টা ধন্দে ফেলার মতো কিছু রসদ ছিল বোলারদের জন্যও। কিন্তু মুমিনুলের ব্যাটে তা টের পাওয়া যায়নি মোটেও। একপ্রান্তে ইমরুল কায়েস যখন ধুঁকছিলেন, মুমিনুলের ব্যাটে মিলছিল শান্তির পরশ।
সাবলীল ব্যাট চালিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের গতিপথ ঠিক করেন তিনিই। মেরেছেন চোখ ধাঁধানো সব ড্রাইভ। স্পিনারদের বল টার্ন করতে না দিয়ে এগিয়ে এসে উড়িয়েছেন সোজা বাউন্ডারিতে। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, কেমার রোচ, দেবেন্দ্র বিশুদের কেউই তাকে বিন্দুমাত্র টলাতে পারেননি।
তার আগের সাত সেঞ্চুরির তিনটাই ছিল দেড়োশো পেরুনো। এদিনও দিচ্ছিলেন আরেকটি বড় ইনিংসের আভাস। কিন্তু চা বিরতির খানিক পরেই শেষ হয় তার ১২০ রানের ইনিংস। শ্যান গ্যব্রিয়েলের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল চালাতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ১৬৭ বলের ইনিংস মুমিনুল মেরেছেন ১০ চার আর ১ ছক্কা।
Comments