ইতিহাস গড়া জয়ে উইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল আগের দিনই। রানের পাহাড় গড়ে স্পিন বিষে ক্যারিবিয়ানদের নীল করে অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছিলেন সাকিব আল হাসানরা। বাংলাদেশের ঘূর্ণিতে উইন্ডিজের দুই ইনিংসের আরও ১৫ উইকেট ফেলতে লাগল কেবল দুই সেশন। প্রথমবার টেস্টে প্রতিপক্ষকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। ২-০ ব্যবধানে জিতল সিরিজও।

ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল আগের দিনই। রানের পাহাড় গড়ে স্পিন বিষে ক্যারিবিয়ানদের নীল করে অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছিলেন সাকিব আল হাসানরা। বাংলাদেশের ঘূর্ণিতে উইন্ডিজের দুই ইনিংসের আরও ১৫ উইকেট ফেলতে লাগল কেবল দুই সেশন। প্রথমবার টেস্টে প্রতিপক্ষকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। ২-০ ব্যবধানে জিতল সিরিজও।

রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছিল টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা। তবে এদিনই ম্যাচটা শেষ হতে যাচ্ছে সে আভাস আগের দিন বিকেলেই পরিস্কার হয়ে যায়। টপাটপ উইকেট তুলে এদিন যেন বাংলাদেশ সেরেছে কেবল আনুষ্ঠানিকতা। মিরপুর টেস্ট সাকিব আল হাসানের দল জিতেছে ইনিংস ও ১৮৪ রানের ব্যবধানে। দলের বিশাল জয়ে বল হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

বাংলাদেশের ৫০৮ রানের জবাবে দুই ইনিংস মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করতে পেরেছে ১১১ ও  ২১৩ রান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে  সাদা পোশাকে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় টেস্ট সিরিজ জয়। ঘরের মাঠে অবশ্য প্রথম। এর আগে ২০০৯ সালে ওদের মাঠে সিরিজ জিতে এসেছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে চতুর্থবার টেস্ট সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।

ক্যারিবিয়ানদের ধসিয়ে দিতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন মিরাজ। প্রথম ইনিংসে ৫৮ রানে ৭ উইকেট পাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি নিলেন ৫৯ রানে ৫ উইকেট। সাকিবের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ম্যাচে দুবার ১০ উইকেট নিলেন। তার আদিপত্যে আড়ালে পড়ে গেল বাকিদের কীর্তি। দুই ইনিংস মিলিয়ে সাকিব পেলেন চার উইকেট, ব্যাট হাতে করেছেন ৮০ রান। খারাপ করেননি তাইজুল ইসলামও।

ব্যাটিংয়ে রাঙানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাদমান ইসলাম, লিটন দাসদের অবদান তো ছিলই। তবে স্পিনারদের দাপটে আড়ালে পড়ে গেছে সবই।

নিজেদের প্রথম ইনিংসে আগের দিনের ৫ উইকেটে ৭৫ নিয়ে সকালে নেমেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু ঘন্টাখানেকের মধ্যেই সাকিব-মিরাজের তোপে উবে যায় তারা। ওইসময় মিরাজই ছিলেন বিষাক্ত। তার ঘুর্ণিতে কাবু হন একের পর এক ব্যাটসম্যান। উইকেট পতনের মিছিল চলেছে প্রথম সেশনের পুরোটাই।

এক ইনিংস গুটিয়ে ফলোঅনে পড়ে পরের ইনিংসেও আরও ৪ উইকেট খুইয়ে বসে সফরকারীরা। ম্যাচের আয়ু নিয়েও তখন কোন সংশয় নেই।

লাঞ্চের পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন শেমরন হেটমায়ার। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে তার ব্যাটে ছিল আলোর ঝলকানি। আগ্রাসী এই ব্যাটসম্যান পালটা আক্রমণে চট্টগ্রামেও মাত করেছিলেন। কিছু হারানোর নেই জেনে এবারও মেরে খেলেছেন। ৯২ বলে ৯ ছক্কা আর ১ চারে করেন ৯৩ রান।

লাঞ্চের পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন শেমরন হেটমায়ার। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে তার ব্যাটে ছিল আলোর ঝলকানি। আগ্রাসী এই ব্যাটসম্যান পালটা আক্রমণে চট্টগ্রামেও মাত করেছিলেন। কিছু হারানোর নেই জেনে এবারও মেরে খেলেছেন। ৯২ বলে ৯ ছক্কা আর ১ চারে করেন ৯৩ রান। একশোর নিচে কোন ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা মারার রেকর্ড এটিই।

তবে হেটমায়ারও ফিরেছেন মিরাজের বলেই। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ দেন লং অফে। এরপর আর বেশিক্ষণ টেকেনি ক্যারিবিয়ানরা। শেষ উইকেট জুটিতে জমাট বেধে খেলা কিছুক্ষণ লম্বা করেছিলেন কেমার রোচ আর শেমরন লুইস। চা-বিরতির সময় বাড়তি পেয়ে তাদের দৌঁড় থামান তাইজুল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস:  ৫০৮

উইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ৩৬.৪ ওভারে ১১১ (ব্র্যাথওয়েট ০, পাওয়েল ৪, হোপ ১০, আম্রিস ৭, চেজ ০, হেটমায়ার ৩৯, ডওরিচ ৩৭, বিশু ১, রোচ ১, ওয়ারিক্যান ৫*, লুইস ০*; সাকিব ৩/২৭ ,মিরাজ ৭/৫৮, নাঈম ০/৯, তাইজুল ০/১০, মাহমুদউল্লাহ ০/০)। 

উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস:  ২১৩ (ফলোঅন)  (ব্র্যাথওয়েট ০, পাওয়েল ৬, হোপ ২৫, আম্রিস ৪, চেজ ৩, হেটমায়ার ৯৩, ডওরিচ ৩, বিশু ১২, রোচ ৩৭*, ওয়ারিক্যান ০, লুইস ২০ ; সাকিব ১/৬৫, মিরাজ ৫/৫৯, তাইজুল ৩/৪০, মাহমুদউল্লাহ ০/৬, নাঈম ১/৩৪)।

ফল: বাংলাদেশ ইনিংস ও  ১৮৪ রানে জয়ী।

সিরিজ: বাংলাদেশ ২-০ তে জয়ী। 

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মেহেদী হাসান মিরাজ।

ম্যান অব দ্য সিরিজ: সাকিব আল হাসান।

 

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago