রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠাতে শুরু করছে সৌদি আরব: রিপোর্ট

মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত যেসব রোহিঙ্গা সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়ে সেখানে আটক হয়েছিলেন তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে দেশটি। গতকাল রোববার লন্ডনভিত্তিক একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘মিডিল ইস্ট আই’-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
কক্সবাজারে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদল ব্যক্তি। এএফপি ফাইল ছবি

মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত যেসব রোহিঙ্গা সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়ে সেখানে আটক হয়েছিলেন তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে দেশটি। গতকাল রোববার লন্ডনভিত্তিক একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘মিডিল ইস্ট আই’-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, যাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে তাদের অনেকেই পাঁচ-ছয় বছর ধরে কারাবন্দী রয়েছেন। বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি হিসেবে রোববার এরকম বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে জেদ্দার শুমাইসি বন্দীশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রোহিঙ্গা বন্দিদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার গোপনে ধারণকৃত একটি ভিডিও গণমাধ্যমটির কাছে এসেছে। ভিডিওটিতে লাইন ধরে রোহিঙ্গাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে যারা বাংলাদেশে আসতে অস্বীকার করেছে তাদেরকে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়েছে বলেও খবরে দাবি করা হয়েছে।

বাংলাদেশে পাঠানো হবে এমন একজন বলেন, “আমি গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে এখানে রয়েছি। এখন তারা আমাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে। আমার জন্য অনুগ্রহ করে আপনারা প্রার্থনা করবেন।”

আরেকটি ভিডিওতে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে পাঠানোর একটি প্রেক্ষাপট বর্ণনা করা  হয়েছে। ভিডিওটিতে একজন রোহিঙ্গাকে বলতে শোনা যায়, “মধ্যরাতে তারা আমাদের কারাকক্ষে এসে বলেছে বাংলাদেশে যাওয়া জন্য তোমরা ব্যাগ গুছিয়ে নাও। এখন আমাকে এমন একটি দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে যে দেশ আমার নয়। আমি একজন রোহিঙ্গা— বাংলাদেশি নই।”

রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন নে সান লুইন নামের একজন- রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রতিবাদ করে বলেন, “এই রোহিঙ্গা বন্দিদের সৌদি আরবে মুক্তি দিয়ে কাজের সুযোগ করে দিলে তারা বাংলাদেশে অবস্থান করা তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করতে পারতেন।”

তারা এমন কোনো অপরাধ করেনি যে তাদেরকে হাতকড়া পরাতে হবে। কিন্তু অপরাধীদের সঙ্গে যেরকম আচরণ করা হয় তাদের সঙ্গেও একই আচরণ আমাকে মর্মাহত করেছে। আমি সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানাই যেন তাদেরকে যথা শীঘ্র সম্ভব মুক্তি দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে তাদের কী অবস্থা হবে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমটিকে বলেন, “বাংলাদেশে তাদেরকে শরণার্থী শিবিরে পাঠানো হবে। এর মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশে শরণার্থীর সংখ্যাই বাড়বে।”

যেসব রোহিঙ্গাকে বন্দীশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে তাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে জীবিকার সন্ধানে গিয়েছিলেন। মিয়ানমারের নাগরিকত্ব বঞ্চিত এসব মানুষের অনেকেই আবার জাল কাগজপত্র দেখিয়ে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট দিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন।

Comments