মাহমুদউল্লাহরদের গুঁড়িয়ে সাকিবদের টানা দ্বিতীয় জয়

Dhaka Dynamites
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

আরও একবার জ্বলে উঠলেন হজরুতুল্লাহ জাজাই, আরও একবার বাজে ফিল্ডিংয়ে পুড়ল খুলনা টাইটান্স, তাতে ঢাকা পেল বিশাল সংগ্রহ। সেই সংগ্রহ  ডিফেন্ড করতে গিয়ে সেরা বোলিংটাই করেছেন ঢাকার বোলাররা। এমন দিনে ফল যেমন হওয়ার কথা হয়েছে তাই। একপেশে ম্যাচে সাকিব আল হাসানদের কাছে গুঁড়িয়ে গেছে খুলনা। ঢাকার টানা দুই জয়ের বিপরীতে খুলনার একাউন্টে জমা হয়েছে টানা দুই হার। 

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকার ছুঁড়ে দেওয়া ১৯২ রানের ধারেকাছেও ভিড়তে পারেনি খুলনা টাইটান্স।৮৭ রানে গুটিয়ে ম্যাচ হেরে  ১০৫  রানের বিশাল ব্যবধানে। খুলনাকে ধসিয়ে দিতে ১৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অধিনায়ক সাকিবই রেখেছেন বড় ভূমিকা। 

অথচ বিশাল রান তাড়ায় শুরুতে পল স্টার্লিংকে হারালেও দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। সাকিবকে ছক্কা মেরে আগ্রাসনের শুরুর পর সুনিল নারিনকে মেরেছেন আরও দুই ছয়। দিচ্ছিলেন বড় কিছুর ইঙ্গিতই। তাকে বাড়তে দেননি সাকিব।

সাকিবের বলে স্লুগ সুইপ করতে গিয় স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে থামে তার ১৬ বলে ৩১ রানের ঝড়। এর আগের ওভারেই নারিনকে তেঁড়েফুড়ে মারতে গিয়ে ফেরত যান জহুরুল ইসলামও।

জুনায়েদের ঝড়ের পরও তাই মুহূর্তেই ব্যাকফুটে চলে যায় খুলনা। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ পারেননি, আবার ব্যর্থ হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬০ রানেই তাই অর্ধেক ইনিংস শেষ হয়ে যায় মাহেলা জয়াবর্ধনের শিষ্যদের।

ওই অবস্থা থেকে দলকে সম্মানজনক জায়গায় নিতে পারতেন বাকিরা। কিন্তু  কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের জায়গায় নামা ডেভিড ভিসে রাখতে পারেননে আস্থার দাম। এক পাশে আরিফুল অপরাজিত থাকলেও বাকিরা যাওয়া আসায় ব্যস্ত ছিলেন। ফিল্ডিংয়ে চোট পাওয়া আলি খান ব্যাট করতে না নামায় তাই তিন অঙ্কে যাওয়া হয়নি খুলনার।

এর আগে মিরপুরের বাইশ গজে ছিল উলটো চিত্র। আবারও সেখানে নেমে ঝড় তুলেন হজরতুল্লাহ জাজাই, ওয়ানডাউনে নামা রনি তালুকদারও পেটালেন জায়গামতো বল পেয়ে। সঙ্গে যোগ হলো খুলনা টাইটান্সের দুর্বল ফিল্ডিং, ক্যাচ মিসের মহড়া। তাতে বড় সংগ্রহের পথ সহজ হয়ে যায় ঢাকা ডায়নামাইটসের।

টস জিতে অনুমিতভাবেই আগে ফিল্ডিং বেছে নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু উইকেটের সুবিধা কাজে লাগানোর মতো বোলিং করতে পারেননি তারা। স্পিন ধরবে এমন পিচে শুরু করেছেন পেসারদের দিয়ে । সেই পেসারদের একজন যুবদলের তরুণ শরিফুল ইসলামের উপর দিয়েই গেছে বড় ঝড়। জাজাইর ছক্কার ঝাঁজ টের পেয়েছেন তিনিই। প্রথম দুই ওভারেই দিয়ে দেন ৪১ রান। ৩ ওভারে তার কাছ থেকে খসেছে ৫০ রান।

অবশ্য অমন মার খাওয়ার পেতে পারতেন জাজাইর উইকেট। ১২ রানে থাকা আফগান ওপেনারের ক্যাচ মিড অনে ছেড়ে দেন ডেভিড ভিসে।

আরেক ওপেনার সুনীল নারিন বড় রান না পেলেও ওয়ানডাউনে উঠা রনি তালুকদার উঠেই চালাতে থাকেন তাণ্ডব। জীবন পেয়েছেন তিনিও। ১০ রানে মাহমুদউল্লাহর বলে বাউন্ডারি লাইনে রনির ক্যাচ নিতে পারেননি পল স্টার্লিং, উলটো হয়ে যায় ছক্কা। পরে ১৮ বলে ২৮ রানে গিয়ে থেমেছেন রনি।

২৫ বলে ফিফটি তোলার পর জাজাই ফেরেন ৫৭ রান করে। জাজাইকে ফেরাতে ফাটকাটা বেশ কাজে লাগে খুলনার। অনিয়মিত অফ স্পিনার স্টার্লিং বল করতে এসেই জাজাইকে তো আউট করেননই, পরের বলে ফিরিয়ে দেন সাকিবকেও।

উড়তে থাকা ঢাকার তখন ডানাভাঙার দশা। দুই ক্যারিবিয়ান আন্দ্রে রাসেল আর কাইরন পোলার্ড মাঝের ওভারগুলো সামলে তুলতে চেয়েছিলেন ঝড়। তাদের নামের মতো অমন ঝড় না হলেও পথে ফেরে ঢাকার ইনিংস। ১৬ বলে ২৭ করা পোলার্ডকে ফেরান আলি খান। ২৫ রান করতে ২২ বল লাগিয়ে ফেলেন রাসেল।

শেষে প্রত্যাশামত ঝড় না উঠলেও ঢাকার ইনিংস ঠিকই পৌঁছে যায় চূড়ায়। সেই চূড়া ডিঙানোর মতো তাগদ যে খুলনার নেই খানিক পরই টের পাওয়া গেছে তা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ঢাকা ডায়নামাইটস:  ২০ ওভারে ১৯২/৬ (জাজাই ৫৭, নারিন ১৯, রনি ২৮, সাকিব ০, পোলার্ড ২৭, রাসেল ২৫, শুভাগত ১১*, সোহান ৯*  ; আলি খান ১/৩৬, শরিফুল ৩/৫০, ভিসে২/২৪, মাহমুদউল্লাহ ১/২৬, জহির ০/৩৫, স্টার্লিং ২/২, তাইজুল ০/১৯)

খুলনা টাইটান্স: ১৩ ওভারে ৮৭ (স্টার্লিং ১, জুনায়েদ ৩১, জহুরুল ১, মাহমুদউল্লাহ ৮, শান্ত ১৩, আরিফুল ১৯*, ভিসে ৬, তাইজুল ২, শরিফুল ০, জহির ০  ; রাসেল ০/৯, সাকিব ৩/১৮, নারিন ২/২০ রুবেল ০/২২, শুভাগত ১/৪, মোহর ১/১৩)

ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ১০৫ রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago