চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়, বরং সব দেশের জন্য অর্থনৈতিক সুবিধার কথা বিবেচনা করে তারাও এতে যোগ দিতে পারে।
সম্প্রতি, সিএনএন-নিউজ১৮-কে দেওয়া সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা বলেন, “এতো বড় ও বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হওয়ায় ভারতকে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়। এর পরিবর্তে বরং তারা এতে যোগ দিতে পারে, যাতে সব দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে।”
“গোটা পৃথিবী এখন একটি বিশ্বগ্রামে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তাই আপনার যোগাযোগ বাড়ানো প্রয়োজন। যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ,” যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যে চীন, ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একটি চুক্তি করেছে, যেটি বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর (বিসিআইএম-ইসি) নামে পরিচিত।
হাসিনা বলেন, “ওই চুক্তির পর আমি ভেবেছিলাম এই করিডোর নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না।”
এর মাধ্যমে সবগুলো দেশই লাভবান হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এর ফলে বাণিজ্য আরও বাড়বে বলেই আমি মনে করি। সুতরাং, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ প্রয়োজন।”
হাসিনা মনে করেন, ভারত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারে। তবে, এতে যদি কোনো উদ্বেগের কারণ থেকেও থাকে, এটি দ্বিপক্ষীয় ও বহু-পক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।
অপরদিকে, তিনি আশা প্রকাশ করেন যে তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যারও সমাধান হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, “এটি ভারত ও তাদের রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর নির্ভর করছে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রচেষ্টার প্রশংসা করে তিনি বলেন, মোদি কিছু বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং তিনি এই চুক্তিকে সমর্থন করেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, “দিদি মনির কারণে মূলত সমস্যাটি রয়ে গেছে। আমি তার (মমতা) সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। তিনি রাজিও হয়েছিলেন, কিন্তু কোনো একটি কারণে এটি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তবে, ভবিষ্যতে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আমি আশা করি।”
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে প্রত্যাশার বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, “রোহিঙ্গারাই আমার দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ বর্তমানে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থী এখানে অবস্থান করছে।”
তিনি বলেন, “এটি আমাদের জন্য একটি বড় বোঝা এবং আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান করা হোক এবং রোহিঙ্গারা তাদের জন্মভূমিকে ফিরে যাক।”
শেখ হাসিনা বলেন, “মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক থাকায় ভারত এই ইস্যুতে কিছু বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নিতে পারে। তারা মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করতে পারে যাতে নেপিদো রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়।”
“বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত একটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে বিশ্বাস করি। এই ইস্যুটি সমাধানে আমাদের ভারতের সহায়তা প্রয়োজন,” যোগ করেন শেখ হাসিনা।
Comments