মাহমুদউল্লাহদের বিদায় করে টিকে রইল সিলেট

Afif-Litton
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

এদিনও ঝড়ের শুরু লিটন দাসকে দিয়ে, পরে তাল মিলিয়ে চলেছেন আফিফ হোসেন। শেষ দিকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করানোর দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে ঝড় তুলেন সাব্বির রহমান আর মোহাম্মদ নেওয়াজ। সিলেট সিক্সার্সের আরেকবার তেতে উঠার দিনে বড় রান তাড়া করে কুলিয়ে উঠতে পারেনি খুলনা টাইটান্স।

শনিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টেবিলের তলানির লড়াইয়ে খুলনা থেকে যে অনেকটা এগিয়ে সিলেট সেই প্রমাণই মিলেছে। আগে ব্যাট করে তাদের ১৯৫ রানের জবাবে মাত্র  ১৩৭  পর্যন্ত যেতে পেরেছে খুলনা। ম্যাচ হেরেছে ৫৮ রানের বড় ব্যবধানে। বল হাতে এদিনের সিলেটের হিরো লোকাল বয় নাবিল সামাদ।

এবার হতাশার বিপিএলে দশ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহদের এটি অষ্টম হার। টানা হারতে থাকা খুলনার বিপিএল কার্যত শেষ হয়েছিল আগেই। এই হারের মধ্য দিয়েই খাতায় কলমেও টুর্নামেন্টের পরের ধাপে উঠার সম্ভাবনা শেষ হয়েছে তাদের। অন্য দিকে টানা দ্বিতীয় জয়ে এখনো টুর্নামেন্টে টিকে রইল অলক কাপালীর সিলেট।

বিশাল লক্ষ্য তাড়াত জুতসই শুরু পাইয়ে আউট হয়েছিলেন জুনায়েদ সিদ্দিকি। সেই পথ ধরে ব্র্যান্ডন টেইলর আর আল-আমিন তুলেছিলেন ঝড়। পাওয়ার প্লে ভালোমতো কাজে লাগিয়ে ছুটছিল খুলনা টাইটান্স।

তাদের এগিয়ে যাওয়ায় বাধ সাধেন সোহেল তানভীর। আগ্রাসী খেলতে থাকা আল-আমিনকে স্লোয়ারে এলবিডব্লিও বানান তিনি। যদিও সময়মতো রিভিউ নিতে পারলে বেঁচে যেতেন আল-আমিন। টেইলর চালিয়েছেন আরও কিছুক্ষণ। তাকে থামতে হয়েছে জেসন রয়ের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে। নাবিল সামাদের বলে লং অনে বাউন্ডারির দিকেই পাঠাচ্ছিলেন টেইলর। বাজপাখির মতো উড়ন্ত বল ছোবল মেরে এক হাতে জমান রয়।

এবার বিপিএলে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট শুরু থেকেই ছিল ম্রিয়মাণ, মলিন ছিলেন আরিফুল হকও। নিজেদের পড়তি দশা এই ম্যাচেও বজায় রেখেছেন তারা। সিলেটের বড় রানের পিছে দৌড়ে তাই আর লড়াই জমানো হয়নি খুলনার।

আগের দিন টস হেরে ব্যাটিং পেয়ে জিতেছিল সিলেট, এদিন টস জেতায় অনুমিতভাবেই নিল ব্যাটিং। ফের উড়ন্ত সূচনা আনলেন লিটন দাস, এবার তার সঙ্গে ওপেন করতে নেমে তাল মিলিয়ে চললেন আফিফ হোসেন।

দুজনের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে উঠল তান্ডব। বড় কিছুর ইঙ্গিত দেওয়া লিটনই ফিরেছেন আগে। ২২ বলে দুই ছক্কা আর ৩ চারে ৩৪ করে তাইজুলের বলে ক্যাচ উঠান। আগের দিনের হিরো জেসন রয় এদিন পারেননি। ওপেন থেকে চারে নেমে যাওয়া সাব্বির রহমান তাই নিলেন দায়িত্ব। শুরুতে থিতু হতে নিলেন অনেকটা সময়। অন্য দিকে ফিফটি থেকে ১ রান আগে আফিফ থেমে যাওয়ায় মাথার উপর বাড়ছিল চাপও।

সেই চাপ সরাতে কুপোকাত নিকোলাস পুরান। বিপদ অবশ্য বাড়তে দেননি মোহাম্মদ নেওয়াজ। তিনিই স্লগ ওভারে পেটানো শুরু করেন। পরে যোগ দেন সাব্বির। তবে তাদেরকে জড়তা কাটিয়ে সেট হতে দিতে উদার ছিলেন জুনায়েদ খান। বেশ দৃষ্টিকটুভাবে বড় বড় ওভারস্টেপে একাধিক ‘নো’ বল করলেন তিনি, দিলেন আলগা বল।

একই অবস্থা শুভাশিস রায়েরও। দুজনেই তাদের চার ওভারে প্রায় পঞ্চাশ রান করে বিলিয়ে দেন। বোলারদের এমন এলেমেলো দিনে ব্যাটসম্যানদের উপর ভরসা করতে হতো খুলনার। কিন্তু টুর্নামেন্ট থেকে আর কিছু পাওয়া যাবে না ভেবে কেমন যেন ছন্নছাড়া তারাও। লড়াই জমানো দূরে থাক , খুলনার শরীরী ভাষা থেকে টিকরে বেরিয়েছে অবসাদের ছাপ। এমন অবস্থায় ফল তাদের পক্ষে আসার কথা নয়। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৯৫/৪  (লিটন ৩৪, আফিফ ৪৯, রয় ১, সাব্বির ৪৪*, পুরান ১২, নাওয়াজ ৩৯* ; শুভাশিস ০/৪৯, ইয়াসির ০/২৭, তাইজুল ৩/৩০, ভিসে ০/৩২, জুনায়েদ ১/৪৮)

খুলনা টাইটান্স: ১৮.১ ওভারে ১৩৭/১০  (টেইলর ৩৪,  জুনায়েদ ২০, আল-আমিন ১৬,  শান্ত ৩, মাহমুদউল্লাহ ১১, আরিফুল ২৪, ভিসে ৫, ইয়াসির ৮, তাইজুল ৯, জুনায়েদ ২, শুভাশিস ০* ; তানভীর ১/১৫, এবাদত ১/৩৩, তাসকিন ২/৬, নেওয়াজ ১/৩৪, অলক ১/২৫, নাবিল ৩/২০)

ফল: সিলেট সিক্সার্স ৫৮  রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

7h ago