নেইমারহীন পিএসজির সামনে টগবগে ইউনাইটেড
মৌসুমের শুরুটা কি ভয়ানক ভাবেই না শুরু করেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কোচ মরিনহোর সঙ্গে খেলোয়াড়দের দ্বন্দ্বের প্রভাব প্রায় প্রতি ম্যাচেই পড়ছিল। তবে মরিনহোকে ছাঁটাইয়ের পর নতুন কোচ ওলে গানার সুলশারের হাতে পড়েই যেন বদলে গেল দলটি। এখন পর্যন্ত তার অধীনে অপরাজিত রয়েছে রেড ডেভিলরা। সে দলের সঙ্গে রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে ওঠার লড়াইয়ের প্রথম লেগে মুখোমুখি হচ্ছে ফরাসী জায়ান্ট প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)।
তাই ফুটবল পাড়ায় বড় আলোচনার বিষয়, উড়তে থাকা ইউনাইটেডকে কি থামাতে পারবে পিএসজি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ লড়াইয়ে মাঠে নামার আগেই বড় ধাক্কা খেয়েছে দলটি। ইনজুরিতে পড়ে দলের সেরা তারকা নেইমারকে পাচ্ছে না দলটি। এমনকি একই কারণে আরেক তারকা এডিসন কাভানিকেও পাচ্ছে না তারা। তাই এ দুই তারকার অনুপস্থিতি ভোগাতে পারে দলটিকে।
তাই নেইমার ও কাভানিকে ছাড়া দলটির জন্য কিলিয়েন এমবাপেই বড় ভরসা। কিন্তু তার উপর চাপ সৃষ্টি করতে রাজি নন কোচ টমাস টুখেল, ‘এমন মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের বিকল্প আপনি পাবেন না। নেইমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ, ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। আমরা তাকে অনেক মিস করব। তবে এর জন্য এমবাপেকে চাপে ফেলার কোনো যৌক্তিকতা নেই। নেইমার ও কাভানির বিকল্প হওয়া এবং তিনজনের দায়িত্ব একা পালন করাটা তার কাজ না। তাকে স্বাধীনভাবে খেলতে দিতে হবে।’
নেইমার-কাভানিদের না থাকার সুবিধা পেলেও আফসোস করেছেন ইউনাইটেড কোচ সুলশার। তবে তাদের ছাড়াই পিএসজিকে ভয়ংকর প্রতিপক্ষ মনে করছেন তিনি, ‘বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের বিরুদ্ধে খেলার আলাদা একটা তৃপ্তি থাকে। এতে খেলার মান অনেক বেড়ে যায়। তবে এই পিএসজি নেইমারদের ছাড়াও শক্তিশালী। ফলে আমাদের অনেক সাবধানে খেলতে হবে। তারা বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব। তাই আমাদের আরও সংহত এবং পরিচ্ছন্ন ফুটবল খেলতে হবে।’
সম্ভাব্য একাদশ
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড: দি হেয়া, ইয়ং, লিন্ডেলফ, বেইলি, শো, মাতিচ, হেরেরা, পগবা, লিংগার্ড, রাশফোর্ড ও মার্শিয়াল।
প্যারিস সেইন্ট জার্মেই: বুফন, আলভেজ, কিমপেম্বে, সিলভা, বেরনাত, মারকুইনোস, ভেরাত্তি, দি মারিয়া, এমবাপে ও দ্রাক্সলার।
নজরে থাকবেন যারা
কিলিয়েন এমবাপে এবং মার্কাস রাশফোর্ড। দুই দলের এ দুই তরুণের দিকেই নজর থাকবে সবার। ধারণা করা হয় মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথের পর খুব শীগগিরই যে নতুন দ্বৈরথ দেখবে ফুটবলবিশ্ব, তা এ দুই তরুণেরই। তাই ভবিষ্যৎ দুই তারকার লড়াইয়ে বাড়তি নজর থাকছে নিঃসন্দেহে।
শেষ দুই ম্যাচে গোল পাননি এমবাপে। তবে শেষ পাঁচ ম্যাচে গোল দিয়েছেন পাঁচটি। সেখানে শেষ পাঁচ ম্যাচে তিনটি গোল দিয়েছেন র্যাবশফোর্ড। পুরো মৌসুমের লড়াইয়েও পিছিয়ে আছেন রাশফোর্ড। লিগে ৯টি গোল করেছেন তিনি। মরিনহোর অধীনে খুব কম সুযোগই পেয়েছেন তিনি। অপরদিকে চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৮টি গোল দিয়েছেন এমবাপে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ছন্দে আছেন রাশফোর্ড। গত মাসের সেরা খেলোয়াড়ের তকমাও পেয়েছেন তিনি।
মুখোমুখি লড়াই
প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ম্যানইউ ও পিএসজি। তবে ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন্স কাপে মুখোমুখি হয়েছিল দলদুটি। সেখানে ২-০ গোলের ব্যবধানে জয় পেয়েছিল ফরাসী ক্লাবটিই।
তবে ঘরের মাঠে ফরাসী ক্লাবের বিপক্ষে ইউনাইটেডের পরিসংখ্যান দারুণ ঈর্ষনীয়। ১৩ ম্যাচের ১০টিতেই জিতেছে তারা। বাকি ৩টি ড্র। আর ইংল্যান্ডে ১০ বার সফর করে মাত্র একবার জয়ের রেকর্ড আছে পিএসজির। ২০১৬ সালে চেলসির বিপক্ষে জয় পেয়েছিল তারা।
Comments