আয়াক্সের মাঠে জয় পেল রিয়াল
ঘরের মাঠে শুরু থেকেই দাপট দেখাল আয়াক্স। একের পর এক সুযোগও তৈরি করল দলটি। কিন্তু স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় গোল যেন সোনার হরিণ। উল্টো গুটি কয়েক সুযোগ থেকেই দুই গোল আদায় করে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। শেষ আটের প্রথম লেগের লড়াইয়ে ২-১ গোলের দারুণ জয় পেল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
রিয়ালের হয়ে ক্যারিয়ারের ৬০০তম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন অধিনায়ক সের্জিও রামোস। ইতিহাসও তাদের পক্ষেই ছিল। শেষ ছয়টি লড়াইয়েই জয় ছিল তাদেরই। আর মাইলফলকের দিনে অধিনায়ককে দারুণ উপহার দিয়েছেন সতীর্থরা। গোল পেয়েছেন দারুণ ছন্দে থাকা করিম বেনজেমা। গোল পেয়েছেন বদলি খেলোয়াড় মার্কো আসেনসিও-ও। আয়াক্সের হয়ে একটি গোল শোধ করেছিলেন হাকিম জিয়েখ।
প্রথমার্ধে প্রায় এক চাটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করে খেলে আয়াক্স। ম্যাচের নবম মিনিটে এগিয়েও যেতে পারতো দলটি। কিন্তু নওসায়ির মাজরাওইর কোণাকোণি শট লক্ষ্যে থাকেনি। ১৪তম মিনিটে গোল করার সুযোগ পেয়েছিল রিয়ালও। টনি ক্রুসের পাস থেকে ভিনিসিয়াসের কোণাকোণি শট দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। প্রথমার্ধে এটাই ছিল রিয়ালের বলার মতো আক্রমণ।
২৬তম মিনিটে ভাগ্য বঞ্চিত হয় আয়াক্স। লেসে শুনের হেড থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন দুসান তাদিচ। শটও নিয়েছিলেন দারুণ। কিন্তু বারপোস্টে লেগে প্রতিহত হলে হতাশা বাড়ে দলটির। নয় মিনিট পর দিনের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি পেয়েছিল আয়াক্স। এ যাত্রা রিয়ালকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তুয়া। ভ্যান ডি বিকের আড়াআড়ি পাস থেকে একেবারে ফাঁকায় গোলরক্ষক একা পেয়েছিলেন হাকিম জিয়েখ। বেশ সময়ও পেয়েছিলেন। কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর শট ফেরাতে কোন সমস্যা হয়নি কোর্তুয়ার।
৩৭ মিনিটে গোল পেয়ে গিয়েছিল আয়াক্স। কিন্তু ভিএআরের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে গোল বাতিল হয় অফসাইডে। ডি লিটের হেড কোর্তুয়ার গায়ে লেগে ফিরে আসলে আবারও হেড দিয়ে বল জালে জড়িয়েছিলেন নিকোলাস তাগলিয়াফিকো। তবে ভিএআরের সাহায্য নিলে দেখা যায় অফসাইডে ছিলেন দুসান তাদিচ। যদিও তিনি বল স্পর্শ করেননি। কিন্তু গোল বাতিলের সিদ্ধান্তই নেন রেফারি।
প্রথমার্ধে চাপে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে বেশ গোছানো ফুটবল খেলতে থাকে রিয়াল। ৫১তম মিনিটে সুযোগও পেয়েছিল তারা। বেনজেমার নেওয়া শট রুখে দেন গোলরক্ষক ওনানা। পরের মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে উল্টো গোল দেওয়ার সহজ সুযোগ মিলেছিল আয়াক্সের। গোলরক্ষককে একা পেয়ে এবারও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি ডেভিড নেরেস।
৬০তম মিনিটে বেনজেমার গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। তবে এ গোলের কৃতিত্ব ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়াসেরই বেশি। তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বেনজেমাকে দারুণ পাস দিয়েছিলেন তিনি। তবে দারুণ ফিনিশিংও দিয়েছেন ফরাসী স্ট্রাইকার।
গোল খেয়ে তা শোধ করতে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে আয়াক্স। ৭৪ মিনিটে নেরেসের ক্রস থেকে ফাঁকায় বল পান বদলি খেলোয়াড় ক্যাসপার দলবার্গ। কিন্তু তার শট লক্ষ্যে থাকেনি। অবশ্য পরের মিনিটেই গোল পায় দলটি। নেরেসের আরও একটি দারুণ পাস থেকে দৃষ্টিনন্দন ফিনিশিং দেন হাকিম।
৮১তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় আসেনসিওর শট ফিরিয়ে দেন ওনানা। তবে ছয় মিনিট পর আর ফেরাতে পারেননি। দানিয়েল কারবাহালের দুর্দান্ত ক্রস থেকে আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন আসেনসিও।
এরপরও গোল করার বেশ কিছু সহজ সুযোগ পেয়েছিল আয়াক্স। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। ম্যাচের যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তেও গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি দলবার্গ। কোর্তুয়ার মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়াতে চাইলেও ঠিকভাবে তা করতে না পারলে সহজেই রুখে দেন গোলরক্ষক। ফলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিকদের।
দিনের অপর ম্যাচে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক টটেনহ্যাম হটস্পার্স।
Comments