রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সেলোনার নাটকীয় ড্র

দুই ব্রাজিলিয়ানের গোলে ম্যাচের ১৬ মিনিটেই দুই গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। এরপর ছন্নছাড়া রক্ষণভাগ ভিয়ারিয়ালের পাল্টা আক্রমণ সামলাতে না পেরে গোল খায় চার চারটি। এরপর বদলী খেলোয়াড় লিওনেল মেসির ম্যাজিক। দুর্দান্ত ফ্রিকিকে ব্যবধান কমান তিনি। আর শেষ মুহূর্তে অসাধারণ এক গোল দেন লুইস সুয়ারেজ। তাতে ভিয়ারিয়ালের মাঠে ৪-৪ গোলে ড্র হয় ম্যাচটি।
ছবি: এএফপি

দুই ব্রাজিলিয়ানের গোলে ম্যাচের ১৬ মিনিটেই দুই গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। এরপর ছন্নছাড়া রক্ষণভাগ ভিয়ারিয়ালের পাল্টা আক্রমণ সামলাতে পারেনি। উল্টো গোল খায় চার চারটি। এরপর বদলী খেলোয়াড় লিওনেল মেসির ম্যাজিক। দুর্দান্ত ফ্রিকিকে ব্যবধান কমান। আর শেষ মুহূর্তে অসাধারণ এক গোল করেন লুইস সুয়ারেজ। তাতে ভিয়ারিয়ালের মাঠে ৪-৪ গোলে রোমাঞ্চকর ড্র হয় ম্যাচটি।

এদিন অধিনায়ক মেসিকে ছাড়াই মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা। মাঠে নামেননি দলের সেরা ডিফেন্ডার জেরার্দ পিকেও। শুরুতে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে মেসির অভাব বুঝতে দেননি তার জায়গায় খেলতে নামা ম্যালকম। কিন্তু পিকের অভাব ঠিকই টের পাওয়া গেল। দুর্বল রক্ষণভাগ আটকাতে পারেনি ভিয়ারিয়ালের পাল্টা আক্রমণগুলো। গোলরক্ষক মার্ক টের স্টেগান অতিমানবীয় কিছু সেভ না করলে হয়তো বড় ব্যবধানেই হারতে হতো দলটিকে।

প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই গোল পেতে পারতো বার্সেলোনা। ডিফেন্ডারের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়ে যান কৌতিনহো। এগিয়ে ডি বক্সে পাস দেন সুয়ারেজকে। তবে এ উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ডের শট ঠেকিয়ে দেন ভিয়ারিয়াল গোলরক্ষক সের্জিও আসেনিও। পাঁচ মিনিট পর গোল করার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ভিয়ারিয়ালও। কর্নার থেকে পাওয়া বলে দারুণ হেড নিয়েছিলেন ভিসেন্তে আইবোরা। তবে তার চেয়েও দারুণ দক্ষতায় সে বল ঠেকিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগান।

অষ্টম মিনিটে স্যামুয়েল উমতিতির ভুলে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন ভিয়ারিয়ালের স্যামুয়েল চুকুয়েজে। ডি বক্সে ঢুকে দারুণ শটও নিয়েছিলেন। সে যাত্রা দলকে রক্ষা করে স্টেগান। চার মিনিট পর এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। মাঝ মাঠ থেকে সের্জিও রোবার্তোর বুদ্ধিদীপ্ত পাস থেকে অনেকটা ফাঁকায় বল পেয়ে যান ম্যালকম। ডি বক্সে ঢুকে ক্রস দেন কৌতিনহোকে। বল এপ্যে আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করতে কোন ভুল করেনি এ ব্রাজিলিয়ান।

ব্যবধান দ্বিগুণ করতেও খুব বেশি সময় নেয়নি বার্সেলোনা। চার মিনিট পরই ভিয়ারিয়াল শিবিরে প্রবল চাপ সৃষ্টি করে গোল আদায় করে নেয় দলটি। আর্তুরো ভিদালের অসাধারণ ক্রস থেকে দর্শনিও এক হেডে বল জালে জড়ান ম্যালকম। ১৯তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারতো বার্সা। দিনের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি মিস করেন কৌতিনহো। সুয়ারেজের পাস থেকে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার শট বার পোস্টে লেগে ফিরে আসে। 

২১তম মিনিটে ম্যালকমের ক্রস থেকে দারুণ শট নিয়েছিলেন উমতিতি। কিন্তু তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর কৌতিনহোর দূরপাল্লার শট ফিরিয়ে দেন ভিয়ারিয়াল গোলরক্ষক। পরের মিনিটে ব্যবধান কমায় স্বাগতিকরা। চুকুয়েজের শট প্রথমবার বার পোস্টে লেগে ফিরে আসলেও ফিরতি বল জালে জড়ান এ ফরোয়ার্ড। ৪০তম মিনিটে সমতায় ফিরতে পারতো দলটি। চুকুয়েজেকে আরও একবার হতাশ করেন স্টেগান। ম্যাচের যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে ফ্রিকিক থেকে দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন সুয়ারেজ। তবে অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে সে শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক আসেনিও।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে ভিয়ারিয়াল। পাঁচ মিনিট পর অবিশ্বাস্য এক গোলে সমতায় ফেরেও দলটি। পাল্টা আক্রমণ থেকে কার্ল তোকো একাম্বিকে ক্রস দেন চুকুয়েজে। বল ধরে ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে যান তিনি। সতীর্থকে পাস দিবেন ভেবে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিলেন স্টেগান। কিন্তু প্রায় ১০ ডিগ্রি কোণ থেকেই দারুণ এক শটে বল জালে জড়িয়ে ফেলে নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না একাম্বি। তিন মিনিট পরই এগিয়ে যেতে পারতো দলটি। কর্নার থেকে ফাঁকায় হেড দিয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আলভারো গঞ্জালেজ।

তবে ৬১ মিনিটে ঠিকই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ম্যানুয়েল মোরলানেসের কাছ থেকে নিখুঁত এক পাস পেয়ে ডিবক্সে ঢুকে স্টেগানকে বোকা বানান ভিসেন্তে। তিন মিনিট পর অবশ্য সমতায় ফিরতে পারতো বার্সেলোনাও। মেসির পাস বুক দিয়ে বল নামিয়ে সুয়ারেজকে দিয়েছিলেন ম্যালকম। কিন্তু উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ডের শট নিয়েছিলেন অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

পরের মিনিটে আরেকটি গোল হজম করতে পারত বার্সেলোনা। চুকুয়েজের জোরালো শট দুর্দান্ত দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন স্টেগান। ৭৫তম মিনিটে মেসির পাস থেকে ম্যালকমের নেওয়া শট লক্ষ্যে থাকেনি। উল্টো পাঁচ মিনিট পর আরও এক গোল হজম করে অতিথিরা। মাঝ মাঠ থেকে সান্তি কেজরলার পাস থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে যান কার্লোস বাক্কা। এগিয়ে গিয়ে ডি বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে বল জালে জড়ান এ ফরোয়ার্ড।

দুই গোলে পিছিয়ে থেকে আক্রমণের ধার বাড়ায় বার্সেলোনা। ৮৬ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন গঞ্জালেজ। আর তা থেকে সুবিধা আদায় করে নেয় অতিথিরা। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে জোরালো এক শটে দারুণ এক গোল দিয়ে ব্যবধান কমান মেসি। আর যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে নজরকারা এক গোল দিয়ে দলকে এক পয়েন্ট এনে দেন সুয়ারেজ। কর্নার থেকে মেসির নেওয়া শট ঠিকভাবে ফেরাতে না পারলে আলগা বল পেয়ে জান সুয়ারেজ। তার কোণাকোণি শট জালে জড়ালে উল্লাসে মেতে ওঠে অতিথিরা।  

এ ড্রয়ে অবশ্য অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান কমেছে বার্সেলোনার। এদিন দিনের অপর ম্যাচে জিরোনাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে অ্যাতলেটিকো। ৩০ ম্যাচে ৬২ পয়েন্ট তাদের। সমান সংখ্যক ম্যাচে বার্সেলোনার সংগ্রহ ৭০ পয়েন্ট।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago