এ বছরই নারী ফুটবল লিগ?

বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট আর জাতীয় দলের বাইরে বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের মাঠে কোন খেলা না থাকায় হাহাকার ছিল অনেক দিনের। মাঠে লিগ নেই তাই অর্থনৈতিক নিরাপত্তাও অনিশ্চিত তাদের। এই সংকট কাটাতে চায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। দ্য ডেইলি স্টারের আয়োজনে গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ জানিয়েছেন, এই বছরের শেষ দিকেই চালু হবে মেয়েদের ফুটবল লিগ।

বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট আর জাতীয় দলের বাইরে বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের মাঠে কোন খেলা না থাকায় হাহাকার ছিল অনেক দিনের। মাঠে লিগ নেই তাই অর্থনৈতিক নিরাপত্তাও অনিশ্চিত তাদের। এই সংকট কাটাতে চায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।  দ্য ডেইলি স্টারের আয়োজনে গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ জানিয়েছেন, এই বছরের শেষ দিকেই চালু হবে মেয়েদের ফুটবল লিগ। 

বৃহস্পতিবার ‘উইমেনস ফুটবল ইন বাংলাদেশ: সাকসেস, চ্যালেঞ্জেস এন্ড ইমপ্যাক্ট বিয়ন্ড দ্য পিচ’ শিরোনামে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে দ্য ডেইলি স্টার ও কে স্পোর্টস। বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ নারী আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে আয়োজিত আলোচনায় নারী ফুটবলের সাফল্য, সংকট, সম্ভাবনা আর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেন আলোচকরা।

আগামী ২২ তারিখ থেকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক ফুটবলের আসর। সোহাগ জানান ওই টুর্নামেন্ট শুরুর পরদিনই আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ঘরোয়া লিগের ঘোষণা দেবেন তারা,  ‘আমরা নারী ফুটবল লিগ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা হয়ত অক্টোবর বা নভেম্বরে হবে। লিগের বিস্তারিত বিষয় ২৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

বর্তমানে ৫৩ জন নারী ফুটবলারকে নিয়ে আবাসিক ক্যাম্প চালু আছে বাফুফের। সেখানে টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক ডিরেক্টর পল থমাস স্মলি অধীনে দেওয়া হচ্ছে নিবিড় প্রশিক্ষণ। এর বাইরে থাকা নারী ফুটবলারদের বছর জুড়েই আর খেলা নেই। ফিটনেস ঠিক রাখার সুযোগ তাই সীমিত। নেই অর্থনৈতিক নিরাপত্তাও। মজমুত হচ্ছে না তাই পাইপলাইন।

এসব সংকট নিয়ে গোলটেবিল আলোচনায় কথা বলেন ফুটবল সংগঠক আর ক্রীড়া সাংবাদিকরা। নারী ফুটবলে বিনিয়োগ করতে দেশের ক্লাবগুলোর প্রতিও আহবান জানানো হয় আলোচনায়। তবে  ক্লাব প্রতিনিধি হয়ে গোলটেবিলে অংশ নেওয়া ব্রাদার্সের আমের খান জানান, ইচ্ছা থাকলেও স্পন্সরের অভাবে নারী ফুটবলের জন্য এমন উদ্যোগ তারা নিতে পারছেন না।

বাফুফের নারী উইংসের চেয়ারম্যান ও ফিফা কাউন্সিল সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণ আক্ষেপ করে বলেন, এর আগে দুবার ক্লাব লিগ আয়োজন করা হলেও স্পন্সরের অভাবে তারা সেটি চালু রাখতে পারেননি। নারী ফুটবলের উন্নয়নে স্পন্সরদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

গেল কয়েক বছরে প্রাথমিক পর্যায়ে ছেলেদের জন্য বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট ও মেয়েদের বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট আয়োজন করে আসছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই টুর্নামেন্ট থেকেই ময়মনসিংহের কলসিন্দুর গ্রাম থেকে জাতীয় পর্যায়ে উঠে এসেছে বেশ কয়েকজন নারী ফুটবলার। বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলে যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে এসেছে বড় সাফল্য। কিন্তু এরপরের ধাপে যাওয়ার প্রক্রিয়া ঠিক না থাকায় অনেকেই হারিয়েও যাচ্ছে। মাধ্যমিক পর্যায়েও তাই এমন টুর্নামেন্ট চালু করার ভাবনার কথা জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক আলি রেজা।

গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম নারী ফুটবলের সাফল্য কামনা করে সব সময় পাশে থাকার কথা জানান, ‘যেসব বাধা পেরিয়ে মেয়েরা ফুটবল খেলছে সেজন্য তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা। ডেইলি স্টার সব রকমের খেলাধুলাকেই পৃষ্ঠপোষকতা দেয়, মেয়েদের ফুটবলে সেটা আরও বেশি করে দেবে।’

গোলটেবিল আলোচনায় আরও কথা বলেছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, কে-স্পোর্টসের প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিম, ইউনিসেফ বাংলাদেশের যোগাযোগ শাখার প্রধান জেন জেকুইস সিমন, ক্রীড়া সাংবাদিক সনৎ বাবলা ও মাসুদ আলম।

Comments