মঙ্গোলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

দলের সেরা দুই তারকাকে ছাড়া মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মাঠের তার প্রভাব খুব একটা পড়তে দেননি মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্ডারা। আগের দুই ম্যাচের চেয়ে অপেক্ষাকৃত পরিকল্পিত ম্যাচ খেলেছে তারা। ফলে গোলসংখ্যাও বেড়েছে। দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে মঙ্গোলিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ মেয়েরা। তাতে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপের ফাইনালের টিকেট মিলেছে গোলাম রব্বানি ছোটনের শিষ্যদের।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দলের সেরা দুই তারকাকে ছাড়া মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মাঠের তার প্রভাব খুব একটা পড়তে দেননি মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্ডারা। আগের দুই ম্যাচের চেয়ে অপেক্ষাকৃত পরিকল্পিত ম্যাচ খেলেছে তারা। ফলে গোলসংখ্যাও বেড়েছে। দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে মঙ্গোলিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ মেয়েরা। তাতে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপের ফাইনালের টিকেট মিলেছে গোলাম রব্বানি ছোটনের শিষ্যদের।

দলে দুটি পরিবর্তন অনুমিতই ছিল। ইনজুরিতে পড়া কৃষ্ণা রানি সরকার ও সিরাত জাহান স্বপ্নার জায়গায় এদিন মূল একাদশে জায়গা পান মার্জিয়া ও সাজেদা খাতুন। সুযোগ পেয়ে প্রথমার্ধে খোলসে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে ভালো খেলেছেন মার্জিয়া। আর সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি সাজেদা। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি তিনি। শট নিতে দেরি করে ফেললে বলের নিয়ন্ত্রণ হারান। পরের মিনিটে গোলরক্ষককে এক পান আগের ম্যাচের সেরা তারকা সানজিদা আক্তারও। কিন্তু তার শট লক্ষ্যে থাকেনি।

সপ্তম মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে দারুণ ক্রস দিয়েছিলেন সানজিদা। কিন্তু ফাঁকায় বল পেয়েও শামসুন্নাহার উড়িয়ে মারলে নষ্ট হয় সে সুযোগ। ১৬তম মিনিটে আঁখি খাতুনের শটও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো এক শট নিয়েছিলেন সানজিদা। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার, বার পোস্টে লেগে ফিরে আসে বল। ২১তম মিনিটে কর্নার থেকে ফাঁকায় হেড দিয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আঁখি।

পরের মিনিটে আরও একটি কর্নার থেকে সতীর্থে পা ঘুরে গোল মুখে ফাঁকায় পেয়েছিলেন মৌসুমি। কিন্তু তার শট অল্পের জন্য বারের উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তিন মিনিট পর মার্জিয়ার কোণাকোণি শট সহজেই লুফে নেন গোলরক্ষক। ৩৮ মিনিটে মৌসুমির ক্রসে ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ ছিল সাজেদার। তিনি মিস করলে বল পান মার্জিয়া। তার শট এক ডিফেন্ডার প্রতিহত করলে আলগা বল পেয়ে যান শামসুন্নাহার। সে শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান এক ডিফেন্ডার। কর্নার থেকেও গোল পাওয়ার সুযোগ ছিল। তবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ।

কাঙ্ক্ষিত গোলটি আসে ম্যাচের যোগ করা সময়ে। মনিকা চাকমার দুর্দান্ত এক ভলিতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সতীর্থের দেওয়া পাস এক ডিফেন্ডারকে হেডে বোকা বানিয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে ভলিতে বল জালে জড়ান এ মিডফিল্ডার।

দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতো বাংলাদেশ। সতীর্থের পাস থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন অধিনায়ক মৌসুমি। কিন্তু তার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর দারুণ সুযোগ মিস করেন মার্জিয়া। একক প্রচেষ্টায় তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিলেন বদলী খেলোয়াড় তহুরা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বল মিস করেন তিনি। আলগা বল পেয়ে যান মার্জিয়া। ডিবক্সের মধ্যে একেবারে ফাঁকায় থেকেও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি এ ফরোয়ার্ড।

চার মিনিট পর মৌসুমির শটও লক্ষ্যে থাকেনি। দুই মিনিট পর ডি বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়েও উড়িয়ে মারেন মনিকা। ৫৮তম মিনিটে আলগা বল থেকে দূরপাল্লার দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন মারিয়া মান্ডা। কিন্তু তার শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক সেনদিয়াভ এরদেনেবিলেগ। তিন মিনিট পর মারিয়ার ক্রসে শামসুন্নাহার মাথা ছোঁয়াতে পারলেই ব্যবধান বাড়ত বাংলাদেশের।

৬৯ মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়ে ডিফেন্ডারকে না কাটিয়ে প্রথম দফায় শট নিলে গোল পেতে পারতো বাংলাদেশ। আলগা বলে অবশ্য হেড নিয়েছিলেন তহুরা। লক্ষ্যে থাকেনি। তবে পরের মুহূর্তেই মনিকার জাদু। চার ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে নিখুঁত এক পাস দেন তিনি। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে সে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ ফিনিশিং দেন মার্জিয়া।

৮১তম মিনিটে মনিকার দূরপাল্লার শট সাইডবার কাঁপায়। চার মিনিট পর শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন তহুরা। মারিয়ার পাস থেকে ডিবক্সের ঠিক বাইরে থেকে শট নেন তিনি। শটটা খুব একটা জুতসই না হলেও মঙ্গোলিয়ান ডিফেন্ডার আমারসানার গায়ে লেগে দিক বদলে গেলে সে বল আর ধরতে পারেননি গোলরক্ষক এরদেনবিলেগ।

ম্যাচের যোগ করা সময়ে দিনের সেরা সুযোগটি মিস করেন তহুরা। মার্জিয়ার সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে ডিবক্সের মধ্যে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার শট অল্পের জন্য বারের উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে তাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি মৌসুমিদের। বড় জয়েই ফাইনালের টিকেট পায় দলটি।

আগামী শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শিরোপা লড়াইয়ে শক্তিশালী লাওসের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশের মেয়েরা।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago