ডিজিটাল মিডিয়ার সংকট-সম্ভাবনা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আইএমসির সেমিনার

গণমাধ্যম কর্মীদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত উৎকর্ষের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত লন্ডনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ইনডিপেনডেন্ট মিডিয়া ক্লাবের (আইএমসি) আয়োজনে গতকাল (২ মে) ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত হয় গণমাধ্যমবিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার।
IMC
২ মে ২০১৯, গণমাধ্যম কর্মীদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত উৎকর্ষের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত লন্ডনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ইনডেপেনডেন্ট মিডিয়া ক্লাবের (আইএমসি) আয়োজনে বৃটিশ পার্লামেন্টে গণমাধ্যমবিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

গণমাধ্যম কর্মীদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত উৎকর্ষের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত লন্ডনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ইনডিপেনডেন্ট মিডিয়া ক্লাবের (আইএমসি) আয়োজনে গতকাল (২ মে) ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত হয় গণমাধ্যমবিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার।

“ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ উদযাপনের অংশ হিসেবে আয়োজিত এই সেমিনারের প্রতিপাদ্য ছিলো ‘ডিজিটাল মিডিয়া: সংকট ও সম্ভাবনা’। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের কমিটি রুমে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনের হোস্ট ছিলেন হাউজ অফ লর্ডসের ক্রস বেঞ্চ সদস্য লর্ড রবার্ট ইমস।

ইনডিপেনডেন্ট মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি ও বিবিসি বাংলার ঊর্ধ্বতন প্রযোজক মাসুদ হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফা, চ্যানেল ফোর নিউজের ফ্রিল্যান্স প্রযোজক বে কি হর্সব্রো, তুরস্কের টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সাংবাদিক শামীম আরা চৌধুরী, বিবিসি নিউজের সাংবাদিক মাহফুজ সাদিক, সাপ্তাহিক জনমতের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, চ্যানেল-আই বাংলাদেশের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মসরুর এলাহী, সম্প্রচার সাংবাদিক ও গবেষক বুলবুল হাসান এবং লন্ডনে চ্যানেল এস-এর কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর ও একাত্তর টিভির যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি তানভীর আহমেদ।

নির্ধারিত প্যানেল সদস্যদের বাইরেও ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সংবাদ মাধ্যমের সাথে জড়িত পেশাদার ব্যক্তিবর্গ এই আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

এছাড়াও প্যানেল আলোচনা শেষে গণমাধ্যম ও মানবাধিকার বিষয়ে বক্তব্য রাখেন কমনওয়েলথ ও জাতিসংঘবিষয়ক মন্ত্রী লর্ড আহমেদ।

অনুষ্ঠানের হোস্ট লর্ড ইমস বলেন, “স্বাধীন গণমাধ্যম আজ গণতন্ত্রের প্রতীক। এই উপলক্ষে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিশ্বের নানা দেশ থেকে আসা সাংবাদিকদের আমি স্বাগত জানাই।” তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে নানা দেশে জবাবদিহিতা নেই এমন প্রতিষ্ঠানগুলো বাকস্বাধীনতা ও সত্য প্রকাশে বাধা দান করে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। আমার নিজের দেশেই সম্প্রতি ২৯ বছর বয়সী এক রিপোর্টারের মৃত্যু সাংবাদিকদের ঝুঁকির কথা আবার স্মরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু, তারপরও সত্য প্রকাশ করে যে সংবাদ তা তরবারির চেয়েও ধারালো। বাদবাকি সব ব্যর্থ হলেও শুধু সেটাই কার্যকর থাকে।”

বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফা বলেন, “গণমাধ্যমের মালিকানা, শাসন ব্যবস্থা এবং একটি সমাজ কতটুকু পরিণত আচরণ করছে সেটির উপর নির্ভর করে গণমাধ্যম ঐ ভূখণ্ডে কতোটা স্বাধীন। কেবলমাত্র বহিরাঙ্গনের ভয়-ভীতি কিংবা প্রতিকূলতা নয়, বরং সেল্ফ সেন্সরশিপ গণমাধ্যমের বিকাশের পথে এক বিরাট বাধা।”

ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিডিয়া ক্লাব-এর সভাপতি মাসুদ হাসান খান বলেন, “সাংবাদিকতা এখন এক বিপদজনক পেশায় পরিণত হয়েছে। সারাবিশ্বে সাংবাদিকরা এমন কিছু ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছেন যা আশঙ্কাজনক। ভুয়া খবর, সাইবার হামলা, সেন্সরশিপ এবং সহিংসতা এখন সমাজে ব্যাধির রূপ নিয়েছে। সাংবাদিক হিসেবে আমাদের পেশাদারী সততা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আমরা কীভাবে সমুন্নত রাখতে পারি তা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ও আলোচনা শুরু করার এটাই উপযুক্ত সময়।”

Comments