আইরিশ শীত ঝেড়ে শক্তি দেখাল বাংলাদেশ
আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় সারির দলের কাছে প্রস্তুতি ম্যাচ হেরে অস্বস্তি বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পুরোশক্তি নিয়ে মূল আসরে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেখা গেল না তার ছিটেফোঁটা। বোলিংয়ে সম্মিলিত প্রয়াসে দেখা গেল ধারালো আক্রমণ। মাঝারি লক্ষ্য তাড়াতেও সবে মিলে করি কাজ থিউরিতে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিয়ে দাপট দেখাল মাশরাফি মর্তুজার দল। দেশে তীব্র গরম থেকে আয়ারল্যান্ডে প্রচণ্ড শীতে কাবু হয়ে পড়ে দল মাঠের খেলায় সব ঝেড়ে দেখাল নিজেদের শক্তি।
আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনের ক্লনটর্ফ গ্রাউন্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ৮ উইকেটে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ২৬২ রানের চ্যালেঞ্জ টপকেছে পাক্কা ৫ ওভার হাতে রেখে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে এই মাঠেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল তখনকার বাংলাদেশ। বদলে যাওয়া প্রেক্ষাপটে সেই স্বাদ এখন পেতে হচ্ছে তাদের।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮০ রান তামিম ইকবালের, সৌম্য সরকার করেন আগ্রাসী ৭৩, রানে বলে তাল মিলে ৬১ করে অপরাজিত থাকেন সাকিব। তার আগে কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন বোলাররা। দুই স্পিনার সাকিব আর মেহেদী হাসান মিরাজ আটোসাটো বল করে চাপ বাড়িয়েছিলেন, উইকেটও নিয়েছিলেন একটি করে। নিয়ন্ত্রিত শুরুর পর পরে তোপ দাগিয়েছেন দুই পেসার মাশরাফি মর্তুজা আর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। বিশেষ করে দারুণ অবস্থানে থাকা ক্যারিবিয়ানরা বাংলাদেশের বোলিংয়ে শেষ দশ ওভারে হাঁসফাঁস করেই উইকেট খুইয়েছে। কেবল বেমানান ছিলেন চোট কাটিয়ে ফেরা মোস্তাফিজুর রহমান।
২৬২ রান তাড়ায় দেখেশুনে খেললেই চলত। সেই মতি নিয়েই নামেন দুই ওপেনার। তামিম ছিলেন অতি সতর্ক। খেলেন প্রচুর ডট বল। আরেক পাশে সৌম্য জায়গা পেলেই রান বাড়িয়েছেন। এক সময় তামিমকে ছাপিয়ে সব আলো নিজের দিকে নিয়ে ফিফটিও করেন তিনি। ৬৮ বলে ৯ চার আর ১ ছক্কায় ৭৩ করে ফেরেন সৌম্য। ওপেনিং জুটিতে ততক্ষণে উঠে গেছে ১৪৪ রান। এরপরে সাকিবের সঙ্গে তামিমের আরও ৫২ রানের জুটি। দেখেশুনে খেলে সেঞ্চুরির দিকেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু ১১৫ বলে ৮০ রানে গিয়ে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে গড়বড় হয়ে যায় তার। চোট কাটিয়ে খুব বেশি ম্যাচ অনুশীলন না পেলেও সাকিবের ব্যাটে যে জং ধরেনি তা দেখা গেল আরেকবার। প্রস্তুতি ম্যাচের ছন্দ মূল ম্যাচে টেনে এনে ৬১ বলে ৬১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
এর আগে টস জিতে শেই হোপের সেঞ্চুরিতে ঝলমলে শুরু পেয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। ৪০ ওভারে ২ উইকেট তুলে ফেলেছিল ১৯৭ রান। কিন্তু শেষ ১০ ওভারে গিয়ে বদলে যায় চেহারা। টানা তিন উইকেট ফেলে দলকে খেলায় আনেন অধিনায়ক মাশরাফি। সেই সুর ধরে তোপ দাগান সাইফুদ্দিন। ব্যাটিং বান্ধব উইকেট আর ছোট মাঠেও তাই বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি জেসন হোল্ডারের দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৬১/৯ (হোপ ১০৯, আমব্রিস ৩৮, ব্রাভো ১, চেইস ৫১, কার্টার ১১, হোল্ডার ৪, ডাওরিচ ৬, নার্স ১৯, রোচ ১, কটরেল ৪*, গ্যাব্রিয়েল ০; সাইফ ২/৪৭, মাশরাফি ৩/৪৯, মুস্তাফিজ ২/৮৪, সাকিব ১/৩৩, মিরাজ ১/৩৮)
বাংলাদেশ: ৪৫ ওভারে ২৬৪/২ (তামিম ৮০, সৌম্য ৭৩, সাকিব ৬১* , মুশফিক ৩২* ; কটরেল ০/৪৩ , রোচ ০/৩০, গ্যাব্রিয়েল ১/৫৮, হোল্ডার ০/২৭, নার্স ০/৪৬, চেজ ১/৫১)
ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেট জয়ী।
Comments