সপ্তম দফা ভোটের আগে রণক্ষেত্র কলকাতা

সপ্তম বা শেষ দফার নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আগামী ১৯ মে ভোটগ্রহণ করা হবে রাজধানী কলকাতার দুটো আসনসহ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাকি ৭ আসনে।
Kalkata Photo
১৪ মে ২০১৯, কলেজ স্ট্রিটের বিদ্যাসাগর কলেজের সামনের পুড়ছে মোটর সাইকেল। ছবি: স্টার

সপ্তম বা শেষ দফার নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আগামী ১৯ মে ভোটগ্রহণ করা হবে রাজধানী কলকাতার দুটো আসনসহ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাকি ৭ আসনে।

এর আগে, উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহার পক্ষে নির্বাচনী র‌্যালি ঘিরে গতকাল (১৪ মে) রাতে রণক্ষেত্রের অবস্থা বিরাজমান ছিলো ‘সিটি অফ জয়’-এ।

কলকাতার কলেজ স্ট্রিট এলাকায় বিদ্যাসাগর কলেজে ভাঙচুর চলে। ভাঙা হয় বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতি। আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেলে।

গোটা ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি একে অপরের কাঁধে দোষ চাপাচ্ছে।

তৃণমূল নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, বিজেপি কর্মীরা বিদ্যাসাগর কলেজে ঢুকে বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতি ভাঙচুর করে এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের মারধর করে।

এই ঘটনায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর ইন্ধন রয়েছে বলেও অভিযোগ মমতার।

যদিও অমিত শাহ পুরো ঘটনাটি তৃণমূলের পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করে বলেন, “দুদিন আগেই মমতা দিদি হুমকি দিয়েছিলেন কিছু একটা করবেন। যেখানে বিজেপি কর্মীরা সবাই র‌্যালিতে রাস্তার ওপর গাড়িতে ছিলেন, সেখানে দুটো বড় দরজা ভেঙে কীভাবে কলেজের ভেতরে ঢুকে বিজেপি কর্মীরা বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতি ভাঙলো?”

বরং কলেজের ভেতর থেকেই বিজেপির র‌্যালিতে ইট-পাটকেল ছুড়া হয়েছিলো বলে অভিযোগ করেন অমিত শাহ।

গতকাল বিকেল তিনটা থেকে উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহার সমর্থনে বিশাল র‌্যালির প্রস্তুতি শুরু হয়। কিন্তু উত্তর কলকাতার মানিকতলা এলাকায় মোদী-অমিত শাহর পোস্টার ছেড়া হয়। এ নিয়েই শুরু থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে র‌্যালিটি শান্তিপূর্ণভাবেই উত্তর কলকাতা প্রদক্ষিণ শুরু করে। কিন্তু সন্ধ্যার পর যখন কলেজ স্ট্রিট এলাকায় পৌঁছান অমিত শাহ ঠিক তখনই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে কালো পতাকা দেখানো হয় এবং ‘অমিত শাহ গো ব্যাক’ স্লোগান শুরু হয়। তখনই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বিজেপির অভিযোগ, শুধু ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান নয় ইট-পাটকেলও ছোড়া হয় সেখান থেকে। যদিও তৃণমূলের উল্টো দাবি, স্লোগানের পরই বিজেপি কর্মীরা মারমুখো হয়ে তৃণমূল কর্মীদের ওপর চড়াও হন।

কলকাতার পুলিশ কমিশনার বলেছেন, “এই ঘটনায় ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ দুটি মামলা করেছে।”

রাতে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় শেষপর্যন্ত জানা গেছে, বিজেপি সর্বভারতী সভাপতি অমিত শাহের বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগর কলেজে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও প্রতিকৃতি ভাঙার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ওদিকে গতকাল রাতেই দুদিনের কলকাতা সফর সেরে দিল্লি ফিরে গেছেন অমিত শাহ।

আজ (১৫ মে) সকালে দিল্লিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে তৃণমূল শাসনের তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, “রাজ্যে তৃণমূলের সন্ত্রাস চলছে। মানুষ পরিবর্তন চাইছেন। ষষ্ট দফার ভোটে দেশ জুড়ে বিজেপি ৩০০ আসনের বেশি সিট পাবে এবং পশ্চিমবঙ্গে ২৩টির বেশি আসনে জয় লাভ করবে।”

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago