টাঙ্গাইল মহাসড়কে ভোগান্তি, যাত্রীদের বিক্ষোভ

টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজটের কারণে বাড়ি ফেরা মানুষগুলোকে দীর্ঘ সময় রাস্তায় আটকে থাকাতে হয়েছে বলে ধীরে ধীরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তারা।
Tangail protest
৪ জুন ২০১৯, টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজটের ফলে ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। ছবি: স্টার

টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজটের কারণে বাড়ি ফেরা মানুষগুলোকে দীর্ঘ সময় রাস্তায় আটকে থাকাতে হয়েছে বলে ধীরে ধীরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তারা।

আজ (৪ জুন) বেলা ১২টার দিকে মহাসড়কের সারুটিয়া অংশে রাস্তার পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটি তুলে তারা বন্ধ করে রেখেছেন উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় আসার রাস্তাটি। সেখানে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি করেন বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা।

এদিকে, বঙ্গবন্ধু সেতু (পূর্ব) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে দুপুর দেড়টার দিকে বলেন, ধীর গতি হলেও গাড়িগুলো চলছে।

যাত্রীদের মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে বগুড়া যাচ্ছেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই ব্যক্তি কম টাকায় বাড়ি যাওয়ার আশায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উঠেছিলেন একটি ট্রাকে। বিধি বাম। প্রায় ছয় ঘণ্টা তিনি অন্য যাত্রীদের মতোই আটকে রয়েছেন রাস্তায়।

Tangail suffering
৪ জুন ২০১৯, টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজটের ফলে বিরক্ত যাত্রীরা প্রচণ্ড রোদের হাত থেকে বাঁচার জন্যে আশ্রয় নিয়েছেন ট্রাকের নিচে। ছবি: স্টার

আজ ভোর থেকে টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়া চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উত্তরবঙ্গে যাওয়া যাত্রীরা। তাদেরই একজন শহিদুল ইসলাম। তীব্র যানজটের পাশাপাশি প্রচণ্ড রোদের কারণে অন্যদের দেখাদেখি তিনি ট্রাকের ওপর থেকে নেমে আশ্রয় নিয়েছেন ট্রাকের নিচে।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি এই সংবাদদাতাকে বলেন, তিনি আশেকপুরে টাঙ্গাইল শহর বাইপাস সড়কে আটকে রয়েছেন ভোর সাড়ে ৬টা থেকে। গত রাতে ট্রাকে উঠেছিলেন ঢাকার গাবতলী থেকে।

জানান, রোদের তাপে রাস্তা গরম হয়ে উঠায় বাধ্য হয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছেন ট্রাকের নিচে ঐটুকু ছায়ার ভেতর।

শুধু তিনিই নন, শত শত যাত্রী এই প্রচণ্ড গরমের হাত থেকে বাঁচতে আশ্রয় খুঁজছেন গাড়ির নিচের ছায়াটুকুতে।

উল্লেখ্য, আজ ভোর সাড়ে ছয়টায় সিরাজগঞ্জ অংশে যানজট তৈরি হওয়ার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ টোল প্লাজা বন্ধ করে দেয়। কেননা, সেতুর ওপর যানজট তৈরি হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু, টোল প্লাজা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে সেতুর পূর্ব পাশে তথা টাঙ্গাইল অংশে মির্জাপুরের মহেরা এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার জটের সৃষ্টি হয়।

সকাল সোয়া নয়টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে যানজট কিছুটা কাটানোর পর টোল প্লাজা আবার চালু করা হয়। এরপর আস্তে আস্তে গাড়ি পশ্চিম প্রান্তে পাঠানো হয়। তবে এখনো সেতুর পূর্ব প্রান্তে তথা টাঙ্গাইল অংশে ৪০ কিলোমিটার গাড়ির জট রয়েছে।

ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার গাড়িগুলো টাঙ্গাইল অংশে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত আটকে রয়েছে। এছাড়াও, বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে তথা সিরাজগঞ্জ প্রান্তে প্রায় ৩০ কিলোমিটার যানজট রয়েছে।

এতে হাজার হাজার নারী-শিশুসহ ঘরমুখো এই যানজটে মানুষ চরম দুভোর্গ পোহাচ্ছেন।

গত রাত থেকে টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে গেলে রাত থেকেই মহাসড়কের কিছু কিছু জায়গায় যানজট হচ্ছিলো। গাজীপুর জেলার চন্দ্রা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছিলো।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাশের যানচলাচল নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে বলা হয়, “ভোর সাড়ে ৬টা থেকে সকাল সোয়া ৯টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে কোনো যান চলাচল করতে পারেনি। তাই ঢাকা-সিরাজগঞ্জ মহাসড়কের ‍পূর্ব পাশে গাড়ির চাপ সৃষ্টি হয়েছে।”

টাঙ্গাইল ট্রাফিক পরিদর্শক সাজেদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সকাল সোয়া ৯টার দিকে সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে। তবুও, যান চলাচলের গতি বাড়ছে না।

আরও পড়ুন:

টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজট

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago