পশ্চিমবঙ্গে ‘শব্দ যুদ্ধ’: বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার পোস্টকার্ড

কেউ পাঠাচ্ছেন পোস্টকার্ডে ‘জয় শ্রী রাম’ লিখে। কেউ আবার মোবাইলে এসএমএস কিংবা হোয়াটস অ্যাপে ক্ষুদে বার্তায় লিখছেন ‘জয় বাংলা’ কিংবা ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান।

কেউ পাঠাচ্ছেন পোস্টকার্ডে ‘জয় শ্রী রাম’ লিখে। কেউ আবার মোবাইলে এসএমএস কিংবা হোয়াটস অ্যাপে ক্ষুদে বার্তায় লিখছেন ‘জয় বাংলা’ কিংবা ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবিরে কার্যত এখন চলছে ‘স্লোগান যুদ্ধ’ বা আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে ‘শব্দ যুদ্ধ’।

বিজেপির দিক থেকে ‘জয় শ্রী রাম’ লেখা হচ্ছে তৃণমূল নেতাদের মোবাইলে কিংবা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো পোস্টকার্ডে।

উল্টো বিজেপির নেতাদের দিকে তৃণমূলের শব্দ অস্ত্র ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় হিন্দ’। বিজেপির শীর্ষ নেতাদের মোবাইলে নম্বরে একের পর এক ক্ষুদেবার্তা পাঠাচ্ছেন তৃণমূল সমর্থক, কর্মীরা।

দুটি রাজনৈতিক দলের বাছাই করা বেশকিছু নেতার মোবাইল নম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে উভয় রাজনৈতিক শিবির থেকে। সেই সঙ্গে অনুরোধ করা হচ্ছে, যারা যে দলের সমর্থক তারা যেন সেই দলের স্লোগান লিখে পাঠান ওই নেতাদের মোবাইল নম্বরে।

যেমন তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য স্তরের নেতৃত্ব জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নির্মল ঘোষ, সুদীপ ব্যানার্জির মতো নেতাদের মোবাইলে যাচ্ছে ‘জয় শ্রী রাম’ লেখা ক্ষুব্ধে বার্তা।

আবার বিজেপির অজুর্ন সিং, বাবুল সুপ্রিয়দের হোয়াটআপ ভরে যাচ্ছে ‘জয় বাংলা’, ‘জয় হিন্দ’ ক্ষুদে বার্তায়।

শুধু মোবাইল বার্তায় থেমে থাকছে না এই শব্দ যুদ্ধ। এখন গড়িয়েছে পোস্টকার্ডেও। হারিয়ে যাওয়া ডাক বিভাগের পোস্ট কার্ডের হঠাৎ কদর বেড়ে গিয়েছে। হাজার হাজার পোস্টকার্ডের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন পোস্ট মাস্টারাও।

আজ মঙ্গলবার দক্ষিণ দমদমের একদল তৃণমূল সমর্থক ১০ হাজার পোস্টকার্ডে ‘জয় বাংলা’, ‘জয় হিন্দ’, ‘বন্দে মাতরম’ লিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তরে পাঠিয়েছেন। এর আগের সোমবার একইভাবে দশ হাজার পোস্টকার্ডে ‘জয় শ্রী রাম’ লিখে বিজেপি নেতা-কর্মীরা কলকাতার হরিশ চ্যাটার্জি রোডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পাঠান।

তৃণমূল নেতা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেছেন, বিজেপি নেতারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের বার্তা পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে যাবেন। শেষ পর্যন্ত তাদের জয় শ্রী রামের আগে জয় মা কালীও বলতে হবে।

অন্যদিকে বিজেপি নেতা অর্জুন সিং বলেছেন, ‘জয় শ্রী রাম’ লেখা পোস্টকার্ড লেখা চলবেই। যে মুখ্যমন্ত্রী ‘জয় শ্রী রাম’-কে স্লোগানকে গালাগাল বলে মনে করেন সেই মুখ্যমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিতে হবে ‘জয় শ্রী রাম’ শব্দটা কতটা মধুর।

সম্প্রতি বিজেপি সমর্থকদের দেওয়া ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান শুনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে তেড়ে গিয়েছিলেন রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা স্লোগানকারীদের দিকে। নির্বাচনের প্রচারের সময় এবং ফল প্রকাশের পর দুদিন এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর অগ্নিমূর্তি রূপ রীতিমত ভাইরাল ইস্যু। সেই ইস্যুকে বিজেপি কাজে লাগাতেই প্রথম পোস্টকার্ড পাঠানোর কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির এই ঘোষণার পর উল্টো একই কৌশলে শব্দ যুদ্ধে সামিল হয়।

কলকাতায় এদিন তৃণমূল কংগ্রেস পৃথক দুটি মহামিছিলের আয়োজন করে। উত্তর কলকাতা থেকে একটি এবং দ্বিতীয়টি দক্ষিণ কলকাতায়। এই দুটি মিছিলে হাজার হাজার তৃণমূল সমর্থক ও কর্মীরা সামিল ছিলেন। মূলত রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধিসহ কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক নীতির প্রতিবাদে তৃণমূল এই প্রতিবাদ মিছিল বের করে।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago