ধাওয়ানের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারাল ভারত

ছবি: রয়টার্স

লক্ষ্যটা ছিল বিশাল। সে লক্ষ্য তাড়ায় চাই উড়ন্ত সূচনা। সেখানে উল্টো দেখে শুনে বেশ ধীর গতিতে ফিফটি করলেন ডেভিড ওয়ার্নার। একাই ৪৮টি ডট বল দেন এ ওপেনার। এরপর রানের গতি বাড়াতে গিয়ে হলেন আউট। আর সে ঘাটতি পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা পোষাতে পারেননি। ফলে দুই হেভিওয়েটের লড়াইয়ে হারতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ৩৬ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে ভারত।

অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের এ লড়াইকে ফাইনালের আগে রিহার্সেল বলছেন অনেকেই। তবে ম্যাচে ততোটা উত্তেজনা ছড়ায়নি। শেষ দিকে চেষ্টা করেছিলেন অসি ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি। শেখর ধাওয়ানের সেঞ্চুরির সঙ্গে অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার ফিফটিতে গড়া রানের পাহাড় টপকাতে গিয়ে ৩৬ রান দূরে থামে দলটি।

লক্ষ্য তাড়ায় দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ শুরু থেকেই ছিলে খোলসে। প্রথম পাওয়ার প্লেতে আসে ৪৮ রান। তবে রানের গতি যিনি ঠিক রাখছিলেন সেই ফিঞ্চ আউট হন রানআউটে কাটা পড়ে। ফলে বড় ধাক্কা খায় দলটি। আরেক ওপেনার ওয়ার্নার ৭৭ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৮৪ বল খেলে করে ৫৬ রান।

তৃতীয় উইকেটে উসমান খাওজাকে সঙ্গে নিয়ে রানের গতি বাড়ানোর কাজে নেমেছিলেন স্টিভ স্মিথ। ৬৯ রানের জুটিও গড়েন তারা। খাওজা বোল্ড করে সে জুটি ভাঙেন জাসপ্রিত বুমরাহ। এরপর খুব বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি স্মিথও। রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরান ভুবনেশ্বর কুমার। একই ওভার মার্কাস স্টয়নিসকেও তুলে নেন ভুবনেশ্বর। তাতে বড় চাপে পড়ে যায় অসিরা।

অসিদের আশা জাগিয়ে রেখে তখনও উইকেটে ছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু জুজবেন্দ্র চাহালের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে তিনি আউট হলে তাদের আশা অনেকটাই শেষ হয়ে যায়। এরপর উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি এক প্রান্তে দারুণ ব্যাট করে চেষ্টা চালিয়েছেন। তবে তার চেষ্টা কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ৩১৬ রানে অলআউট হয়ে যায় দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৯ রানের ইনিংস খেলেছেন স্মিথ। ৭০ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ক্যারি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৩৫ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৫ রান করেন। এছাড়া খাওজার ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। ভারতের পক্ষে ৬১ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান ভুবনেশ্বর। ২টি করে উইকেট নেন বুমরাহ ও চাহাল।

এর আগে  টস জিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নামে ভারত। শুরুতে সাবধানী ব্যাট করলেও ধীরে ধীরে খোলস ভাঙেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শেখর ধাওয়ান। গড়েন ১২৭ রানের দারুণ এক জুটি। রোহিত ও ধাওয়ান এ নিয়ে ছয়বার আইসিসির টুর্নামেন্টে শতরানের জুটি গড়লেন। তাদের সমান ছয়বার শতরানের জুটির রেকর্ড আছে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ম্যাথু হেইডেনের। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। অসিদের বিপক্ষে ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথ ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের করা ১৬০ রানের জুটিটি সর্বোচ্চ।

রোহিতের বিদায়ে এ জুটি ভাঙলে ধাওয়ানের সঙ্গে যোগ দেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। স্কোরবোর্ডে ৯৩ রান যোগ দেন তারা। দারুণ খেলতে থাকা ধাওয়ান তুলে নেন তার ১৭তম সেঞ্চুরি। রানের গতি বাড়াতে গিয়ে আউট হন ধাওয়ান। ১০৯ বলে ১৬টি চারের সাহায্যে ১১৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর উইকেটে নেমে শুরুতে জীবন পেয়ে দারুণ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন হার্দিক পান্ডিয়া। মাত্র ২৭ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় করেন ৪৮ রান। কম যাননি সাবেক অধিনায়ক এমএস ধোনিও। ১৪ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় করেন ২৭ রান।

অপর প্রান্তে সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে গিয়েছিলেন অধিনায়ক কোহলিও। স্টয়নিসের বলে আউট হওয়ার আগে খেলেন ৮২ রানের ইনিংস। ৭৭ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন অধিনায়ক। ৫৭ রানের ইনিংস খেলেছেন রোহিত শর্মা। ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৫২ রানের বড় সংগ্রহ করে দলটি। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৬২ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান স্টয়নিস।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

48m ago