বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বে বাংলাদেশ
গ্যালারিতে দর্শকের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। বেশ কয়েক হাজার। তাদের সামনে এগিয়ে থাকার বাড়তি আত্মবিশ্বাস আর নিজেদের মাঠের সুবিধাকে পুঁজি করে বাংলাদেশ খেললও দুর্দান্ত। কিন্তু এলো না গোল। তবে কাজের কাজ আগেই সেরে রাখায় লাওসকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
ম্যাচটি হারলে যে শুধু বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব থেকে বাদ হয়ে যেত বাংলাদেশ, ঠিক তা নয়। কমপক্ষে তিন বছরের জন্য আন্তর্জাতিক ফুটবলই নির্বাসনে চলে যেত। তাই লাওসের বিপক্ষে এ লড়াই কেবল বিশ্বকাপ স্বপ্ন ধরে রাখার নয়, ছিল অস্তিত্ব রক্ষারও। আর সে লড়াইয়ে মান রেখেছে বাংলাদেশ। জিততে না পারলেও লাওসকে রুখে দিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (১১জুন) বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের এশিয়া অঞ্চলের প্রাক-বাছাইপর্বের দ্বিতীয় লেগে লাওসের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ। আগের লেগে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা জিতেছিল ১-০ গোলে। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ ব্যবধানে অগ্রগামিতায় পরের পর্বে জায়গা করে নিয়েছে জেমি ডের শিষ্যরা।
ঘরের মাঠে পুরো ম্যাচে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখায় বাংলাদেশ। বিরতির আগে-পরে আক্রমণের বন্যা বইয়ে দিয়ে লাওসের রক্ষণভাগকে তটস্থ করে রাখেন নাবীব নেওয়াজ জীবন-রবিউল হাসান-সোহেল রানারা। একইসঙ্গে সুযোগ নষ্ট করার মহড়াও দেন তারা। যে কারণে কাঙ্ক্ষিত গোল আদায় করে নিতে পারেনি বাংলাদেশ।
গোল করার প্রথম ভালো সুযোগ বাংলাদেশ তৈরি করে ম্যাচের ১৭তম মিনিটে। এরপর ২৫তম মিনিটে লাওস গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান জীবন। কিন্তু তার প্রচেষ্টা গোলপোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন লাওস শট স্টপার। ৩৮তম মিনিটে অল্পের জন্য গোলের দেখা পাননি ঘরোয়া লিগে ঢাকা আবাহনীর হয়ে খেলা ফরোয়ার্ড জীবন। আলতো টোকায় প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক জায়সাভাথের মাথার উপর দিয়ে বল পাঠাতে পারলেও জালে জড়াতে ব্যর্থ হন।
বিরতির পর ৫২তম মিনিটে ফের হতাশ করেন জীবন। বদলি ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ডান প্রান্ত থেকে করা মাপা ক্রসে তার দুর্বল হেড সহজেই তালুবন্দী করেন জায়সাভাথ। শেষ মুহূর্তে জয় নিশ্চিত করার আরেকটি দারুণ সু্যোগ নষ্ট হয় বাংলাদেশের। এবারে কাঠগড়ায় ইব্রাহিম নিজেই। আরেক বদলি সোহেল রানার বাম প্রান্ত থেকে পাঠানো ক্রসে মাথা ছোঁয়ালেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
গেল ৬ জুন প্রাক-বাছাইয়ের প্রথম লেগে লাওসের রাজধানী ভিয়েনতিয়েন থেকে ১-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছিলেন আরামবাগের তরুণ ফরোয়ার্ড রবিউল। ম্যাচের ৭২তম মিনিটে বাংলাদেশের জয়সূচক গোলটি এসেছিল তার পা থেকে।
বাংলাদেশ দল: আশরাফুল ইসলাম রানা, টুটুল হোসেন বাদশা, বিশ্বনাথ ঘোষ, ইয়াসিন খান, রহমত মিয়া, জামাল ভূঁইয়া, মাসুক মিয়া জনি (মাহবুবুর রহমান), বিপলু আহমেদ (মোহাম্মদ ইব্রাহিম), মামুনুল ইসলাম, নাবীব নেওয়াজ জীবন, রবিউল হাসান (সোহেল রানা)।
Comments