‘রিজার্ভ ডে’ না রাখার ব্যাখ্যায় যা বলল আইসিসি
প্রথমে শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর সবশেষ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। পাঁচ দিনের ব্যবধানে তিনটি ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। তাতে গড়া হয়েছে নতুন রেকর্ড। এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি (৩টি) ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার। অবাক হওয়ার উপায় নেই। ইংল্যান্ডে এই মৌসুমে বৃষ্টি হবেই। তাই প্রশ্ন উঠছে, আবহাওয়ার হাল-হকিকত জেনেও লিগ পর্বের ম্যাচগুলোতে ‘রিজার্ভ ডে’র ব্যবস্থা কেন রাখেনি আইসিসি?
মঙ্গলবার (১১ জুন) ব্রিস্টলে পরিত্যক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচ। খেলা মাঠে গড়ানো তো দূরে থাক টসই হয়নি। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে দুদল। সম্ভাব্য দুই পয়েন্ট না পাওয়ায় যারপরনাই হতাশ টাইগার কোচ স্টিভ রোডস। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ‘রিজার্ভ ডে’ না থাকার আক্ষেপও গোপন করেননি তিনি, ‘আমরা চাঁদে মানুষ পাঠাতে পারি, তাহলে “রিজার্ভ ডে” রাখতে পারব না কেন (হাসি)? সমর্থকদের জন্যও এটা হতাশার।’
এমন পরিস্থিতিতে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছে আইসিসি। তাই ‘রিজার্ভ ডে’ না রাখার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যায় বিবৃতি দিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন। তিনি জানান, প্রতিটি খেলা শেষ করার জন্য বাড়তি একটি দিন থাকলে স্বাভাবিকভাবেই আসরের দৈর্ঘ্য অনেক বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়গুলোর ওপর। তাতে তৈরি হয় জটিল পরিস্থিতি। আর এই জটিলতা এড়াতেই ‘রিজার্ভ ডে’ রাখেনি আইসিসি।
‘আইসিসি মেন’স ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচের জন্য “রিজার্ভ ডে” রাখলে প্রতিযোগিতার দৈর্ঘ্য অনেক লম্বা হয়ে যাবে। আর এটাকে বাস্তবে প্রয়োগ করা খুবই জটিল হবে। পিচ প্রস্তুতি, দলগুলোর নতুন করে তৈরি হওয়া ও যাত্রাসূচি, থাকার ব্যবস্থা ও ভেন্যু ঠিক করা, প্রতিযোগিতার স্টাফ, স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মকর্তাদের ঠিকঠাকভাবে পাওয়া ও উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সরাসরি সম্প্রচার- এসবের ওপরে প্রভাব পড়বে তখন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সমর্থকরা, যারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভ্রমণ করে খেলা দেখতে আসে, তাদের ওপর প্রভাব পড়বে। আর “রিজার্ভ ডে”তে বৃষ্টি হবে না এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই।’
বিশ্বকাপের আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রচুর জনবল নিয়োগ দিয়েছে আইসিসি। ‘রিজার্ভ ডে’ রাখা হলে এই সংখ্যা বাড়বে আরও, ‘প্রতিটি ম্যাচ সঠিকভাবে আয়োজনের জন্য ১ হাজার ২০০ মানুষ নিয়োজিত থাকে। তাদের একটা বড় অংশকে এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে ছোটাছুটির মধ্যে থাকতে হয়। তাই “রিজার্ভ ডে” থাকলে স্টাফদের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। নক-আউট পর্বের জন্য আমাদের “রিজার্ভ ডে” রয়েছে। আমরা আশা করি, লিগ পর্বের ৪৫টি ম্যাচের অধিকাংশই অনুষ্ঠিত হবে।’
সবশেষে আবহাওয়াকে দায়ী করেছেন রিচার্ডসন। এমন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারে, সেটা তারা আশঙ্কা করেননি, ‘এই সময়ে এমন আবহাওয়া একেবারেই বিচিত্র। গেল কয়েকদিনে আমরা যে বৃষ্টিপাত দেখেছি তার গড় স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। কারণ জুন ইংল্যান্ডের তৃতীয় শুষ্কতম মাস। ২০১৮ সালে দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে পুরো জুনে মাত্র ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল, আর গেল ২৪ ঘণ্টাতেই হয়েছে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি।’
Comments