অস্ট্রেলিয়ার কাছে বড় হারই দেখল শ্রীলঙ্কা

অসি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের সেঞ্চুরি ও মিচেল স্টার্কের বোলিং তোপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বড় জয়ই পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। অথচ ম্যাচের এক পর্যায়ে অসিদের ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল এশিয়ার দলটি। এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল শ্রীলঙ্কার জয় যেন সময়ের ব্যাপার। কিন্তু শেষ দিকে অসি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং আর পেরে ওঠেনি তারা। ৮৭ রানের বড় হার মানতে হয় দলটিকে।
ছবি: রয়টার্স

অসি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের সেঞ্চুরি ও মিচেল স্টার্কের বোলিং তোপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বড় জয়ই পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। অথচ ম্যাচের এক পর্যায়ে অসিদের ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল এশিয়ার দলটি। এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল শ্রীলঙ্কার জয় যেন সময়ের ব্যাপার। কিন্তু শেষ দিকে অসি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং আর পেরে ওঠেনি তারা। ৮৭ রানের বড় হার মানতে হয় দলটিকে।

দুই ওপেনার অধিনায়ক দিমুথ কারুনারাত্নে ও কুশল পেরেরা শুরু থেকেই বেশ আগ্রাসী ব্যাটিং করলেন। ওপেনিং জুটিতেই এলো ১১৫ রান। এরপর পেরেরা ফিরে গেলে লাহিরু থিরিমান্নে ও কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে অধিনায়কের প্রতিরোধ। তাদের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১৮৬ রান। কিন্তু তখন নার্ভাস নাইন্টিজে কেন রিচার্ডসনের বলে হঠাৎ মনঃসংযোগ হারিয়ে ফেলেন কারুনারাত্নে। আর তাতেই শেষ লঙ্কানরা। এরপর আর কোন ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিতে পারেননি।

মূলত দারুণ খেলতে থাকা দলটি তোপে পড়ে মিচেল স্টার্কের। একাই চারটি উইকেট নেন তিনি। কম যাননি রিচার্ডসনও। তিনিও নেন ৩টি উইকেট। প্যাট কামিন্সের শিকার ২টি। অথচ এদিন দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন লঙ্কান দুই ওপেনার। দুইজনই পেলেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। দলকে কারুনারাত্নে তো প্রায় সেঞ্চুরি পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মাঝপথে অসি পেসারদের দাপটে পাল্টে যায় পাশা।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৭ রানের ইনিংস খেলেন কারুনারাত্নে। ১০৮ বলে ৯টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। কুশল পেরেরা খেলেন ৩৬ বল ৫২ রানের ইনিংস। আর কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান। ফলে ৪৫.৫ ওভারে ২৪৭ রানে গুটিয়ে যায় দলটি।

এর আগে স হেরে ডেভিড ওয়ার্নারকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামেন ফিঞ্চ। এক প্রান্তে দেখে শুনে খেলতে থাকেন ওয়ার্নার। তবে অপর প্রান্তে রানের গতি সচল রাখার দায়িত্বটা নেন অধিনায়ক ফিঞ্চ। তাদের ওপেনিং জুটিতে আসে ৮০ রান। এরপর অবশ্য দ্রুত ২টি উইকেট পেয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে স্মিথকে সঙ্গে নিয়ে আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন ফিঞ্চ। স্কোরবোর্ডে ১৭৩ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান।

ফিঞ্চকে বিদায় করে এ জুটি ভাঙেন ইশুরু উদানা। এরপর অবশ্য খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি স্মিথও। তবে এক প্রান্তে দারুণ ব্যাট করতে থাকেন ম্যাক্সওয়েল। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে দলকে ৩৩৪ রানের সংগ্রহ এনে দিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি।

দারুণ ব্যাটিং করে ১৩২ বলে ১৫৩ রানের ইনিংস খেলেন ফিঞ্চ। ১৫টি চার ও ৫টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৫৩ বলের ৭টি চারের সাহায্যে প্রথম পঞ্চাশ রান করেন। এরপরের ফিফটি তুলতে বল খেলেন ৪৪টি। এ সময়ে ১টি চার ও ৪টি ছক্কা মেরেছেন অধিনায়ক। তৃতীয় ফিফটিটি আসে মাত্র ৩১ বলে। অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে করলেন সেঞ্চুরি। এর আগে অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করেছেন দুই বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ ও রিকি পন্টিং। এর মধ্যে পটিংয়ের সেঞ্চুরি ৪টি।

ফিঞ্চের এ সেঞ্চুরিতে বিশ্বকাপে ভারতের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডটি আবার নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তাদের বিপক্ষেই শেখর ধাওয়ানের সেঞ্চুরিতে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটি নিজেদের করে নিয়েছিল ভারত। বিশ্বকাপে অসিদের সেঞ্চুরি সংখ্যা এখন ২৮টি। শেষ ১০ ম্যাচের সাতটি ইনিংসই পঞ্চাশোর্ধ। তার শেষ ১০ ইনিংস - ১১৬, ১৫৩*, ৯০, ৩৯, ৫৩, ৬৬, ৬, ৩৬, ৮২, ১৫৩। যার মধ্যে ৬টি ম্যাচ খেলেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। আর এ ছয় ম্যাচে তার সংগ্রহ ৫৩৩ রান!

৫৯ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন স্মিথ। ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২৫ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৬ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। এছাড়া ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। শ্রীলঙ্কার পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও ইশুরু উদানা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ৩৩৪/৭ (ওয়ার্নার ২৬, ফিঞ্চ ১৫৩, খাওজা ১০, স্মিথ ৭৩, ম্যাক্সওয়েল ৪৬*, মার্শ ৩, ক্যারি ৪, কামিন্স ০, স্টার্ক ৫*; মালিঙ্গা ১/৬১, প্রদিপ ০/৮৮, উদানা ২/৫৭, থিসারা ০/৬৭, ধনাঞ্জয়া ২/৪০, সিরিবর্ধনে ০/১৭)।

শ্রীলঙ্কা: ৪৫.৫ ওভারে ২৪৭ (করুনারত্নে ৯৭, কুসল পেরেরা ৫২, থিরিমান্নে ১৬, মেন্ডিস ৩০, ম্যাথিউস ৯, সিরিবর্দনা ৩, থিসারা ৭, ডি সিলভা ১৬*, উদানা ৮, মালিঙ্গা ১, প্রদিপ ০; স্টার্ক ৪/৫৫, কামিন্স ২/৩৮, বেহরেনডর্ফ ১/৫৯, রিচার্ডসন ৩/৪৭, ম্যাক্সওয়েল ০/৪৬)।

ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৮৭ রানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যারন ফিঞ্চ (অস্ট্রেলিয়া)।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago