শুরুতে-শেষে স্বস্তি মিললেও অস্বস্তি কমল না

টন্টনের ছোট মাঠে কি আগে ব্যাটিং করা ভালো হতো? বাংলাদেশের প্রথম ১০ ওভারের বোলিং দেখে অবশ্য তা মনে হওয়ার কথা না। উইকেটে ঘাস ছিল। আর মাশরাফি বিন মর্তুজা আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন যেভাবে শুরু করলেন, তাতে একাদশে আরেকজন পেসার, অর্থাৎ রুবেল হোসেন নেই কেন, এই প্রশ্নেরই তখন ঘোরাফেরা।
ছবি: রয়টার্স

টন্টনের ছোট মাঠে কি আগে ব্যাটিং করা ভালো হতো? বাংলাদেশের প্রথম ১০ ওভারের বোলিং দেখে অবশ্য তা মনে হওয়ার কথা না। উইকেটে ঘাস ছিল। আর মাশরাফি বিন মর্তুজা আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন যেভাবে শুরু করলেন, তাতে একাদশে আরেকজন পেসার, অর্থাৎ রুবেল হোসেন নেই কেন, এই প্রশ্নেরই তখন ঘোরাফেরা।

শুরুতে সবচেয়ে বিপজ্জনক ক্রিস গেইলকে খালি হাতে ফিরিয়েই তেতে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে রান করাকে ডালভাত বানিয়ে ফেলা শেই হোপের সঙ্গে এভিন লুইস টিকে গেলেন। মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম স্পেলে রাখতে পারলেন না চাপ। মন্থর গতিতেই জুটি জমল। জুটি জমার পর তারা বাড়াতে লাগলেন রানও।

সাকিব আল হাসানের লাইন পেতে প্রথম দুই ওভার লাগল, ভয়ও বাড়তে লাগল বাংলাদেশের। বিস্ফোরক লুইসের হাতে ছক্কা খাওয়ার পরই তিনি তাকে ফেরাতে পেরেছিলেন বলে রক্ষা। জমে যাওয়া নিকোলাস পুরানকেও সাকিব বেশি দূর এগুতে দেননি। তবে আগেভাগে থামানো যায়নি মাঝের ওভারে রুদ্রমূর্তি নেওয়া শিমরন হেটমায়ারকে। তার বিশাল বিশাল সব ছক্কায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে রান। কপালের ভাঁজ গাঢ় হতে থাকে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।

মার খাওয়ার ধাক্কা সামলে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন মোস্তাফিজ। হেটমায়ার আর আন্দ্রে রাসেলকে চার বলের মধ্যে ফিরিয়ে দিয়ে। যাকে নিয়ে ভয় ছিল বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডসের, সেই রাসেলকে শূন্য রানে ফেরানোর পর কোথায় উল্লাস করার কথা, তা না ফের চাপ গিলে নিল বাংলাদেশকে। এবারে জেসন হোল্ডার তেতে উঠলেন। টাইগার অধিনায়ক মাশরাফির চোখের কোণে তখন শঙ্কার কালো মেঘ। মনের কোণে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে সাড়ে তিনশো রান তাড়ার প্রায় অসম্ভব চ্যালেঞ্জ।

মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা হোল্ডার নামক কাঁটাকে তুলে ফেলে মেঘ সরিয়ে আলো ফোটালেন সাইফউদ্দিন। নিজের পঞ্চাশতম ওয়ানডে খেলতে নামা মোস্তাফিজ সেই আলোকে আরও ঝলমলে রূপ দিলেন। হোপকে সেঞ্চুরিবঞ্চিত করে পান নিজের তৃতীয় উইকেটের দেখা। তাই শেষে যেমন ঝড় তোলার কথা, তেমনটা হলো না উইন্ডিজের। ইনিংসের শেষ বলে সাইফউদ্দিনও দেখা পান নিজের তিন নম্বর শিকারের।

প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৩২ রান। বাংলাদেশ উইকেট তুলে নিল একটা। শেষ ৫ ওভারেও ৩৩ রানের বেশি দেয়নি বোলাররা। উইকেট মিলল আরও দুইটা। শুরু-শেষের ছবি দিচ্ছে স্বস্তির বার্তা। কিন্তু মাঝের ওভারগুলোতে টানা চাপ ধরে রাখা যায়নি। সোমবার (১৭ জুন) বিশ্বকাপের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে উইন্ডিজের সংগ্রহ তাই ৮ উইকেটে ৩২১ রান। তাদেরকে সাড়ে তিনশোর ভেতরে বেঁধে ফেলা গেলেও তাই অস্বস্তিটা থাকলই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

উইন্ডিজ: ৩২১/৮ (৫০ ওভার) (গেইল ০, লুইস ৭০, হোপ ৯৬, হেটমায়ার ৫০, রাসেল ০, হোল্ডার ৩৩, ব্রাভো ১৯, থমাস ৬*; মাশরাফি ০/৩৭, সাইফউদ্দিন ৩/৭২, মোস্তাফিজ ৩/৫৯, মিরাজ ০/৫৭, মোসাদ্দেক ০/৩৬, সাকিব ২/৫৪)।

Comments