সাকিব পাশে থাকাতেই স্নায়ুচাপ সামলে বিধ্বংসী লিটন
মুখোমুখি হওয়া প্রথম ২৮ বলে ২৩ রান। ভুগছিলেন স্নায়ুচাপে। এরপর ক্রিস গেইলকে এক ওভারে দুই চার মেরে হাত খোলেন লিটন দাস। সেই থেকে শুরু তাণ্ডব। ম্যাচ শেষে তিনি অপরাজিত ৬৯ বলে ৯৪ রানে। রেকর্ড রান তাড়া করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর লিটন জানালেন, উইকেটের অন্য প্রান্তে থাকা সাকিব আল হাসানের কাছ থেকেই চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলার রসদ পেয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৭ জুন) টন্টনে উইন্ডিজের ছুঁড়ে দেওয়া ৩২২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৩৩ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর আর কোনো বিপর্যয় ঘটতে না দিয়ে ১৩৫ বলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৮৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ৭ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব-লিটন। তখনও বাকি ৫১ বল। সাকিব টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকেন ৯৯ বলে ১২৪ রানে। আর বিশ্বকাপ অভিষেকে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। যদিও পছন্দের টপ অর্ডারে নয়, ওয়ানডেতে প্রথমবার তাকে খেলতে হয়েছে পাঁচ নম্বরে।
ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের কাছে লিটন জানান, 'শুরুতে অনেক স্নায়ুচাপে ছিলাম। যেহেতু এই পর্যায়ে খেলার অভ্যাস নাই। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে মনে হয়েছে, এটা একটা সুযোগ আমার জন্য। স্নায়ুচাপে ছিলাম, তবে সাকিব ভাই আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তিনি অনেক কথা-বার্তা বলেছেন। সেগুলো আমাকে শঙ্কা থেকে মুক্তি দিয়েছে।'
'সাকিব ভাই বলেছিলেন যে, উইকেটটায় ব্যাটিং করা অনেক সহজ। কিছুক্ষণ এখানে খেলতে পারলে, ব্যাটিং সহজ হয়ে যাবে। তিনি বলছিলেন, জোরাজুরি না করে স্বাভাবিকভাবে ব্যাটিং করতে। তাছাড়া উনার কিছু বাউন্ডারি আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আমি চাপমুক্ত থেকেছি।'
'৩০ রান করার পর মনে হয়েছে নিজের মতো খেলতে পারব। কারণ স্নায়ুচাপে ছিলাম। মনে হচ্ছিল, সবকিছু আমার অনুকূলে না। ৩০ রান করার পর সেটা কেটে গেছে। মনে হয়েছে, আমি উইকেটে মানিয়ে নিয়েছি। যেভাবে ইচ্ছা, সেভাবে খেলতে পারব। স্বাচ্ছন্দ্য বলে একটা বিষয় থাকে, নিজের দুনিয়ার মধ্যে হাঁটাচলা করার মতো। ৩০ রানের পর আমি স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পেরেছি।'
'আমি যখন পঞ্চাশ করলাম, সাকিব ভাই দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। এগুলো অনেক কাজে দেয়। তিনি জানতেন যে, আমি এই পজিশনে অভ্যস্ত না, এই বিষয়টা আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং।'
বড় ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার আনন্দও ছুঁয়ে গেছে লিটনকে, 'ম্যাচ শেষ করে আসার অনুভূতিটা অন্যরকম। এটা আগে কখনো হয়নি। ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক রান করেছি। কিন্তু শেষ করে আসতে পারিনি। তাই এত বড় মঞ্চে যে আমি খেলা শেষ করে আসতে পেরেছি, এটা আমার ভালো লেগেছে।'
Comments