তৃণমূলের কমিশন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে নচিকেতার গান

সর্বভারতীয় নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না করতে পেরে চাপের মুখে থাকা পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসকে এবার গানের মধ্যে দিয়ে খোঁচ দিলেন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী নচিকেতা। গানের কথায় বললেন, “খেয়েছেন যারা কাটমানি, দাদারা অথবা দিদিমণি, এসেছে সময়... ফেরত দিন, আসছে দিন...।”
ছবিটি নচিকেতার ফেসবুক পেইজ থেকে নেওয়া

সর্বভারতীয় নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না করতে পেরে চাপের মুখে থাকা পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসকে এবার গানের মধ্যে দিয়ে খোঁচ দিলেন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী নচিকেতা। গানের কথায় বললেন, “খেয়েছেন যারা কাটমানি, দাদারা অথবা দিদিমণি, এসেছে সময়... ফেরত দিন, আসছে দিন...।”

কাটমানি বা কমিশন বাণিজ্যের পুরনো অভিযোগ রয়েছে তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি দলের প্রধান মমতা ব্যানার্জি নিজেও এ কথা স্বীকার করে নিয়ে পৌরসভা, পঞ্চায়েত ও সিটি করপোরেশনের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেছেন, কোনো কাজের জন্য কমিশন (কাটমানি) নেওয়া চলবে না যারা এতো দিন নিয়েছেন তারা সবাই আবার সেই টাকা ফেরত দেবেন।

মমতার এই নির্দেশের পর রাজ্য জুড়ে টাকা ফেরত চেয়ে আন্দোলনের নেমেছেন সাধারণ মানুষ। গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যের ২৩ জেলার অধিকাংশ জেলা গুলো থেকে কমিশনের টাকা ফেরতের দাবিতে স্থানীয় মানুষ তৃণমূলের বিধায়ক, পঞ্চায়েত সদস্য, পৌরসভার কাউন্সিলার কিংবা জনপ্রতিনিধিদের বাড়ি ও অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।

ঠিক এমন এক বাস্তবতায় শনিবার জীবনমুখী গানের জন্য দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী ওই গানটি ফেসবুকে নিজের ওয়ালে পোস্ট করেন। গানটি রীতিমত এখন ভাইরাল।

২০১১ সালের আগে রাজ্যের  যে ক’জন বুদ্ধিজীবী মমতার পক্ষে রাস্তায় মিছিল করেছিলেন নচিকেতা তাদের অন্যতম। শুধু তখনই নয় সম্প্রতি অনেক অনুষ্ঠানেও মমতার খুব কাছে বসতে দেখা গিয়েছে নচিকেতাকে। তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন এই শিল্পী।

এখন সেই সেই নচিকেতাই তৃণমূলের কমিশন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে সরব হলেন নিজের গানের মধ্য দিয়ে।

নচি তার গানে লিখেছেন- “খেয়েছেন যারা কাটমানি দাদারা অথবা দিদিমণি, এসেছে সময় গতিময় দাঁত কেলাতে কেলাতে ফেরত দিন; আসছে দিন। ডাকছে দিন। মন্ত্রী অথবা আমলা জনরোষ এবার সামলা। তুলবে চামড়া, অসাধু দামড়া বাতাসে বাজছে রুদ্রবীণ। আসছে দিন। ডাকছে দিন।

এতদিন যারা করেছে সেলাম, ভয়েতে থেকেছে বাধ্য গোলাম- এখন তাদের মুখেতে প্রশ্ন উত্তর আছে কি? লালবাতি চলা গাড়ি চলো, ,মানুষকে বোকা মনে করো। সেই মানুষ আজ বাঁশ হাতে তোমার পেছন টা ঢাকা কি?

খেটে মরে হাঁস আপনারা ডিম খেয়ে যাচ্ছেন বহুদিন, আসছে দিন। ডাকছে দিন।”

নচিকেতার এই গান পোস্ট হতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়েই এখন চলছে তুমুল আলোচনা।

বিজেপির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় থেকে বিজেপির মন্ত্রী সংগীত শিল্পী বাবুল সুপ্রিয়-- সবাই নচিকেতার এই গানের কথা এবং তার এই সময়ে সোচ্চার হওয়াকে স্বাগত জানান।

লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, দুর্নীতির প্রতিবাদ যারা করবেন তারাই বিজেপি আসবেন এটাই আমরা মনে করি। এটা দুনীতির বিরুদ্ধে লড়ার একটি প্লাটফর্ম। তাই নচিকেতা চক্রবর্তী যদি বিজেপিতে আসেন তবে তাকে স্বাগত জানাব।

বাবুল সুপ্রিয় বলেন, উনি বরাবরই প্রতিবাদী। ওনার গান ভালো লাগে। তৃণমূলের খুব কাছের হয়েও তিনি প্রতিবাদ করতে একদম পেছনে যাননি। তাই তাকে শ্রদ্ধা জানাই।

যদিও নচিকেতা চক্রবর্তী বলেছেন, আমার এই গান নিয়ে সবার খুশির হওয়ার কারণ নেই। যারা দুনীতির করেছেন তাদের সবাইকে আমাকে বিঁধেছি গানে। আগামীতেও তাই করব।

Comments

The Daily Star  | English

Protesters stage sit-in near Bangabhaban demanding president's resignation

They want Shahabuddin to step down because of his contradictory remarks about Hasina's resignation

41m ago